MODI TRIED TO SUPRESS TWITTER

মোদী সরকারের আসল রূপ

সম্পাদকীয় বিভাগ

modi twitter bjprss farmers protest bengali news

বিশ্বব্যাপী অতি প্রভাবশালী সোশাল মিডিয়া টুইটারের প্রাক্তন কর্তা জ্যাক ডরসে এক সাক্ষাৎকারে যা বলেছেন তাতে আর কিঞ্চিৎমাত্র সংশয় থাকার কথা নয় যে মোদী কথিত ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ (গণতন্ত্রের জননী) কালকরমে ‘মার্ডার অব ডেমোক্রেসি’তে (গণতন্ত্রের হত্যা) পর্যবসিত হয়েছে। গণতন্ত্রে স্বৈরাচার কখনোই মাথা তুলতে পারে না। 

গণতন্ত্রকে নির্মূল বা হত্যা করেই ফ্যাসিস্ত স্বৈরতন্ত্র নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে। মোদী সরকার বহিরঙ্গে যতই গণতন্ত্রের ধ্বজা ওড়াক বাস্তবের জমিতে একাধিকপত্যকামী স্বৈরাচারী প্রবণতাই প্রকট। সরকার বিরোধী আন্দোলন এই সরকার বরদাস্ত করতে পারে না। এমনকি সরকারের বিরোধিতা, সমালোচনা, নিন্দাও সহ্য করতে পারে না। বিরুদ্ধ কণ্ঠকে স্তব্ধ করার জন্য সদা সক্রিয় এই সরকার।


সোশাল মিডিয়ায় একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হলো টুইটার। সমগ্র জন পরিসরে ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত ও সংগঠনগত মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ন্যায্য দাবির সঙ্ঘবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দেবার ক্ষেত্রে টুইটার অত্যন্ত কার্যকরী। ২০২১ সালে দিল্লির সীমান্তে এক বছরেও বেশি সময় ধরে লক্ষ লক্ষ কৃষকের সপরিবাসে অবস্থান আন্দোলন শুধু দেশে আলোড়ন তৈরি করেনি, গোটা পৃথিবীতে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। 

এমন অভাবনীয় ও অভূতপূর্ব আন্দোলন রীতিমতো বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিল মোদী সরকারকে। কৃষি ও কৃষকে সার্বিক স্বার্থবিরোধী স্বৈরাচারী কায়দায় প্রণীত তিন কালা আইন প্রত্যাহারের নাছোর দাবিতে কৃষকরা যখন জানকবুল লড়াই করছেন তখন সেই আন্দোলন ভাঙার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্রের জাল বুনে যাচ্ছিল মোদী-শাহ’রা। 

সেই ষড়যন্ত্রেরই একটা পর্ব উন্মোচন করেছেন টুইটার কর্তা। স্পষ্ট বলেছেন সেই সময় কৃষক আন্দোলনের খবর যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত হচ্ছিল সেগুলি বন্ধ করার জন্য বা মুছে ফেলার জন্য প্রবল চাপ আসত সরকারের তরফ থেকে। এই চাপ মোটেই অনুরোধ আকারে আসত না আসত হুমকি বা ভীতি প্রদর্শনের আকারে। মোদী সরকারের নির্দেশ মতো হুবহু কাজ না হওয়ায় টুইটার কর্মীদের বাড়িতে এবং অ‍‌ফিসে তল্লাশির নামে ত্রাস সৃষ্টি করে অমিত শাহ’র দিল্লি পুলিশ। এইভাবে বাক্‌-স্বাধীনতা কেড়ে নিতে, মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিতে, সরকার বিরোধী কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে যাবতীয় প্রচার বন্ধ করতে কয়েক হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে বাধ্য করায় সরকার। 

যে অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করা হয়েছে তাদের খালিস্তানপন্থী উল্লেখ করে গোটা কৃষক আন্দোলনকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে দেগে দেবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সেই চেষ্টা অবশ্য সফল হয়নি। আন্দোলনের কাছে মাথানত করে শেষ পর্যন্ত মোদী সরকারকে তিন কালো আইন প্রত্যাহার করতে হয়েছিল। সাময়িক বিভ্রান্তি তৈরি করে তাণ্ডব চালাতে পারে স্বৈরাচারীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের পরাজয় অনিবার্য। মোদী সরকাকেও অচিরেই বিদায় নিতে হবে জনরোষের মুখে পড়ে।

Comments :0

Login to leave a comment