Eeo Portal

সিইও দপ্তরের ওয়েবসাইট বিভ্রাটে বিপাকে জনগণ

রাজ্য

এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই বিপাকে পড়েছেন রাজ্যের অসংখ্য ভোটার। এসআইআর ঘোষণার দিন থেকে মুখ্য নির্বাচনী দপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে ২০০২ সালে নিজেদের নাম রয়েছে কিনা জানতে শুরু করেন মানুষ। সূত্রের খবর প্রায় এক কোটির বেশি মানুষ কমিশনের ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু সিইও দপ্তরের ওয়েবসাইট মাঝে মধ্যেই বসে যায়। ফলে ভোটার তালিকায় নিজের নাম খোঁজার ক্ষেত্রে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সমস্যায় পড়েছেন নির্বাচন আধিকারিকরাও।
সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২টি রাজ্যে এসআইআরের ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ছিলেন মুখ্যনির্বাচনী আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার, নির্বাচন কমিশানার সুখবীর সিং সান্ধু, বিবেক যোশী। জ্ঞানেশ কুমার বলেছিলেন,‘‘ এসআইআরের মূল উদ্দেশ্য যোগ্য ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় রাখা এবং অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া। বিহারে সাড়ে সাত কোটি ভোটার এসআইআরে অংশ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ১২ রাজ্য এই এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।  তিনি বলেছেন, যাদের নাম ২০০৩ – ২০০৪ এ প্রকাশিত ভোটার তালিকায় আছে তাদের কোন নথি দিতে হবে না। সেই সময় যাদের নাম ছিল না তার বাবা বা মায়ের নাম যদি সেই তালিকায় থাকে তবে তাকেও আর কোন আলাদা নথি দিতে হবে না। 
উল্লেখ্য রাজ্যে ২০০২ সালেই শেষ ‘নিবিড় সংশোধন’ বা ‘আইআর’ হয়েছিল। কিন্তু সেবার কাউকে ফর্ম ভরতে হয়নি, নথিও চাওয়া হয়নি। বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাম খোঁজ করে দেখেছিলেন। সেদিন কেউ আতঙ্কিত হয়নি। কেউ হুমকির সামনে পড়েননি। নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে কেউ ছুটে যায়নি। আত্মহত্যা করেননি। সেদিন কেউ হুমকি দিয়ে বলেনি দুই কোটি বাঙালিকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেবেন। নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপি একসুরেই বিদেশি, বিশেষ করে বাংলাদেশি, চিহ্নিত করার জন্য এই প্রক্রিয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছিলেন, যে যে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভোটার তালিকায় এসআইআর চলছে তার একটি বিদেশি নাগরিক চিহ্নিত করা। 
সিপিআই(এম) দাবি করেছে স্বচ্ছতার সাথে নির্ভুল ভোটার তালিকার। এসআইআরের নামে ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানো চলবে না। এসআইআর নিয়ে সাধারণ মানুষের যে কোনও রকম সমস্যায় পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছে সিপিআই(এম)।

কমিশন সূত্রের খবর, কমিশনের ওই ওয়েবসাইটের সার্ভার দেখাশোনা করে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টার। ওয়েবসাইট বিভ্রাটের কারণে বুধবার রাতে সিইও দপ্তর থেকে এনআইসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবুও এদিন দুপরে পাওয়া শেষ খবরে জানা গেছে তখনও সম্পূণ সচল হয়নি ওয়েবসাইটি। মাঝে মাঝেই বসে যাচ্ছে। সিইও দপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য ‘‘ওয়েবসাইট সচল না হলে ভোটার তালিকা দেখা বা পিডিএফ পাঠানোর কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্যের প্রতিটি বুথে বিএলও’রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমেরেশন ফর্ম বিতরণ করবেন। ওয়েবসাইট সচল না থাকলে তালিকা যাচাইয়ের কাজ বাড়ি বাড়ি এনুমেরেশন ফর্ম দেওয়ার প্রক্রিয়াতেও সমস্যা হবে।’’ 
রাজ্যে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গের মোট ভোটারের ৫২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৩.৭ কোটি ভোটারের নাম ২০০২-র ভোটার তালিকায় রয়েছে। ২০২৫’র জানুয়ারিতে শেষ যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তার ৪৮ শতাংশ, অর্থাৎ ৩.৫ কোটি ভোটারের নাম সেই পুরনো তালিকার বাইরে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সহ আরও ১২ রাজ্যে এসআইআরের কাজ শুরু হয়েও গেছে। 

Comments :0

Login to leave a comment