ফের দুর্যোগের আশঙ্কা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। রয়েছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস। নিম্নচাপের প্রভাব কাটলেও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হতে পারে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাষ আজ থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে শনিবার এমনটাই পূর্বাভাষ দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
ভারি বৃষ্টিতে ভাসছে দার্জিলিঙ পার্বত্য অঞ্চল। গত কয়েক দিন ধরেই লাগাতার বৃষ্টি চলছে পাহাড় জুড়ে। অবিরাম বৃষ্টিতে পাহাড় পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটছে। প্রবল বর্ষণে মাটি, পাথর, গাছ গাছালি হুড়মুড়িয়ে নেমে আসছে পাহাড়ের গা বেয়ে রাস্তায়। পাহাড়ী গ্রামের বাড়ি ঘর ধসে মাটি চাপা পড়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় ধসে চাপা পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আগামী কয়েকদিনও ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাষ জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে দার্জিলিঙ ও কালিম্পঙের উঁচু পার্বত্য এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টিহীন শারদ উৎসব হচ্ছে না উত্তরবঙ্গেও। অবিরাম বৃষ্টিতে জাতীয় সড়কের কোন কোন অংশ খরস্রোতা তিস্তা নদীর গ্রাসে চলে গেছে। যথেষ্টই আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন পর্যটকরা। হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিছুতেই যেন পিছু ছাড়ছে না। ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, নিম্নচাপের পাশাপাশি উত্তর বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন উত্তরবঙ্গে উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়েছে। উত্তর-পূর্ব উত্তর প্রদেশ থেকে এই উচ্চচাপ বলয় পর্যন্ত রয়েছে আর একটি অক্ষরেখা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯০০ মিটার উঁচুতে রয়েছে ওই অক্ষরেখা। এই দুইয়ের সাঁড়াশি চাপেই বঙ্গোপসাগর জুড়ে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ অঞ্চল। বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের কথায় বৃষ্টি কমবে রবিবার। তবে রেহাই মিলবে না শারদ উৎসবে। একাদশী পর্যন্ত চলতে পারে এই বৃষ্টি। হাওয়া অফিস পূর্বাভাষ দিয়েছে যে রবিবার থেকে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমবে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘলা আকাশ বজায় থাকবে। বাতাসে জলীয় বাষ্প পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বস্তি বাড়তে পারে। এক কথায় উৎসবের দিনগুলিতে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। ওদিকে ভারি বৃষ্টিতে প্রতিদিনই নতুন করে ধসে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে পাহাড়। ফের ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিতে নতুন করে পাহাড়ের গা বেয়ে নামলো ধস। শনিবার দার্জিলিঙের রিম্বিক লোধামার কাছে ধস নেমেছে। লোধামার কাছে ধোত্রেতে বড় আকারের ধস নেমেছে। উৎসবের মরশুমে বাংলা—সিকিম লাইফ লাইন ১০নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ রয়েছে। ধস সরিয়ে জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক করার আপ্রান চেষ্টা চালানো হলেও লাগাতার বৃষ্টিতে ধস পরিষ্কারের কাজে বিঘ্ন ঘটছে। ধসের কারণে দার্জিলিঙের টয় ট্রেনের জয়রাইডও বন্ধ।
আগামী বৃহস্পতিবার, সপ্তমী পর্যন্ত দক্ষিণের সব জেলায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জেলার কিছু অংশেই সীমাবদ্ধ থাকবে এই বৃষ্টি। নিম্নচাপের জেরে শনিবার পর্যন্ত উত্তাল থাকবে বঙ্গোপসাগর। সাগরের উপর দমকা হাওয়ার গতি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। একাদশী পর্যন্ত কলকাতাসহ শহরতলি জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। তবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে হবে বৃষ্টি।
Weather West Bengal
বৃষ্টি কালও, দাপট কমার সম্ভবনা আগামী সপ্তাহে
×
Comments :0