প্রতিরোধের মেজাজে শনিবার ভোট দিয়েছেন ডাবগ্রাম ১ - ২ ও ফুলবাড়ি ১- ২ এই চার গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ন এলাকার সাধারণ মানুষ। এদিন সকাল থেকেই আবহাওয়া ছিলো রোদ ঝলমলে। ফলে ভোটদাতাদের কোন অসুবিধা হয়নি। ভোটের লাইনে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থেকে বুথে বুথে মহিলা পুরুষ সমান তালে ভোট দিয়েছেন। দুই একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত মোটের ওপর শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হয়েছে। এখনো বহু বুথে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন রয়েছে। সেই কারণে ভোট প্রক্রিয়া চলবে অনেক রাত পর্যন্ত এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
ডাবগ্রাম ১—র সমরনগর ১১নং বুথে নিয়ম ভঙ্গ করে শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের তৃণমূল কংগ্রেসের এক কাউন্সিলার ঢুকে পড়লে ভোটারদের সাথে বচসা বেধে যায়। ডাবগ্রাম ২—তে শান্তিনগর বউবাজার ৪৫ নং বুথে তৃণমূলী কাউন্সিলারের নেতৃত্বে বহিরাগতদের নিয়ে এসে বুথ জ্যামের পরিকল্পনা করা হলে ভোটাররা সেই প্রচেষ্টা রুখে দেন। এছাড়া এদিন শান্তিপূর্ণভাবে ডাবগ্রাম ২—তে ভোটপর্ব চলেছে। ফুলবাড়ি ২—তে চ্যাংড়াবান্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুথে এদিন সকাল থেকেই বুথ জ্যাম করে তৃণমূলীদের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট দেবার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, সকাল থেকে এমনটা চললেও প্রশাসন কার্যত নির্বিকার থাকে। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাকে উপেক্ষা করেই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ভোটাররা। আচমকাই নির্দল প্রার্থীর সমর্থকেরা বুথে ঢুকে ব্যালট বাক্সে জল ঢেলে দেয় এবং ব্যালট বাক্সটিকে ভেঙে জঙ্গলের দিকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। ঘটনায় গোটা এলাকা জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় পুলিশ বাহিনী ও র্যা ফ। সব মিলিয়ে এদিন উৎসবের মেজাজেই নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন মানুষ।
সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার বলেন, গোটা রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ভোট লুটের জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাজিত করার জন্য মানুষ যে মেজাজে ভোট দিয়েছেন তা প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অপদার্থ ব্যর্থ তাই নয়, শাসকদলের হয়ে কাজ করেছে। এর বিরুদ্ধেও জনরোষের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা মোটেও সন্তোষজনক নয়। অনেক রাত পর্যন্ত ভোট প্রক্রিয়া চলবে। বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেস প্ররোচনা দেবার চেষ্টা করেছে। নানা প্ররোচনা সত্ত্বেও সিপিআই(এম) কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রক্রিয়া পরিচালনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিন সকাল থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে পাহাড়ে। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই পাহাড়ের মানুষ ভোট দিয়েছেন। বিজনবাড়ি ব্লকের কয়েকটি বুথে সকালের দিকে কিছু জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলেও পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলে দুষ্কৃতিরা পালিয়ে যায়।
সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের কোথাও কোন ঝামেলার খবর না থাকলেও নীরব সন্ত্রাসের আবহ ছিলো। ভোট লুটের চেষ্টা ব্যার্থ করে দিয়ে পাহাড়ের মিরিক ব্লকের বেলগাছি, চা বাগান অধ্যুসিত বিভিন্ন বুথ, সোনাদাভ্যালিতে বুথ আকড়ে পড়েছিলেন সিপিআই(এম) কর্মীরা।
Comments :0