JPC ADANI TMC

আদানিকাণ্ডে জেপিসি’র দাবিতে এবার থাকবে তৃণমূল?

জাতীয়

বিশেষ অধিবেশনে আদানিকাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটির দাবিতে সরব হবে কংগ্রেস। হায়দরাবাদে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের মাঝে তা স্পষ্ট করেছেন দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। তাঁর যুক্তি, দেশের শেয়ার বাজারের নিয়ামক ‘সেবি’ নিজেই জানিয়েছে তদন্তের তলদেশে পৌঁছাতে অপারগ। একমাত্র যৌথ সংসদীয় কমিটিই বেনিয়মের তদন্ত করতে পারে গভীরে।’’

গত মার্চে আদানিকাণ্ডের তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ার দাবিতেই তোলপাড় হয় সংসদ। প্রধানমন্ত্রীকে লোকসভায় প্রশ্ন তোলা হয়, আদানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কী। নরেন্দ্র মোদী নিরুত্তর ছিলেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসও তখন বিরোধীদের সমন্বয় থেকে দূরত্ব তৈরি করে। আদানির তদন্তে সংসদীয় কমিটি গড়ার দাবিতে বিরোধী বাকি দলগুলির সঙ্গে ছিল না তৃণমূল কংগ্রেস। যোগ দেয়নি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বৈঠকেও।  

১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে কেন্দ্র। এর মধ্যে ‘এক দেশ এক ভোট’ কমিটির প্রধান প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ২৩ সেপ্টেম্বর কমিটির প্রথম বৈঠক ডেকেছেন। সরকারি স্তর থেকে যে যে আলোচ্য জানানো রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিল পাশ। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে তার জন্য কমিটি গড়তে চাইছে বিজেপি সরকার। কিন্তু বিশেষ অধিবেশনে আরও বড় কোনও চমক থাকতে পারে বলেও মনে করছেন বিরোধীরা। 

১৫ সেপ্টেম্বর, শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে এই আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার বেনিয়মে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে ১৩ অক্টোবর। আদানির বিভিন্ন গোষ্ঠীতে রয়েছে এলআইসি’র মতো দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত একাধিক আর্থিক সংস্থার বিনিয়োগ। 

হিন্ডেনবর্গ রিপোর্ট জানিয়েছিল, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে দাম ভাঁড়ানো হয়েছে। গোষ্ঠীরই লোক মরিশাসের মতো ‘কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্য’ থেকে টাকা ঘুরিয়ে এনে সংস্থায় বিদেশি বিনিয়োগ বলে ঢেলেছে। পরে আরেকটি অনুসন্ধানে বেরিয়েছে যে আদানি গোষ্ঠীর সদস্য বিনোদ আদানির ঘনিষ্ঠ নাসের আলি শাবন আহলি ও চাঙ চুঙ লিঙ নামে দুই বিদেশি নাগরিককে ব্যবহার করা হয়েছে। ফাঁপিয়ে বাড়ানো হয়েছে দাম। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ হতেই হুড়মুড়িয়ে শেয়ার দর পড়েছে। মূলধনী লোকসান হয়েছে এলআইসি’র মতো সংস্থার। 

রমেশ এদিন বলেছেন, ‘‘বিদেশি সংস্থার মালিক কারা তা কিন্তু খুঁজে বের করতে পারছে না বলে জানিয়েছে ‘সেবি’। অথচ মরিশাসে তাদেরই সমতুল নিয়ামক প্রতিষ্ঠান এফএসসি দু’টি আর্থিক সংস্থার লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করেছে। অর্থ পাচার, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে আর্থিক মদত, আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রে বেনিয়মের মতো একাধিক অভিযোগ চাপিয়েছে। এই দুই আর্থিক সংস্থার অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে আদানির শেয়ারে। এই তথ্য হাতে থাকার পরও ‘সেবি’ জানাচ্ছে তারা নিরূপায়।’’

রমেশ বলেছেন, ‘‘এর আগে বিশেষ অধিবেশনে নয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে কংগ্রেস সংসদীয় কমিটির প্রধান সোনিয়া গান্ধী চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। কোনও উত্তর আসেনি। কিন্তু তার মধ্যে আদানিকাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গড়ে তদন্তের দাবিও রয়েছে। ‘সেবি’ নিরুপায় হলে একমাত্র উপায় জেপিসি।’’

বিশেষ অধিবেশনে জেপিসি’র দাবি উঠলে তৃণমূল কী করবে, তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment