Kumbh Mela

কুম্ভমেলায় মুসলিমরা দোকান দিলে ‘ব্যবস্থার’ হুমকি আখাড়া পরিষদের

জাতীয়

ফের মুসলিম বিদ্বেষী জিগির ছড়ালেন অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদের প্রধান মহন্ত রবীন্দ্র পুরী। এমনকি মুসলিমদের উপরে হামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন। এবারের মহাকুম্ভে প্রয়াগে মুসলিমদের দোকান বানাতে দেওয়া যাবে না বলে দাবি জানিয়ে যাচ্ছে আখাড়া পরিষদ। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাধুদের আখাড়াগুলির যুক্ত মঞ্চ আখাড়া পরিষদ বর্তমানে সঙ্ঘ-বিজেপি’র সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। এবারের মহাকুম্ভকে হিন্দুত্ববাদী জিগির ছড়ানোর আখাড়ায় পরিণত করার চেষ্টা চলছে। রবীন্দ্র পুরীর বক্তব্য সেই লক্ষ্যেই বলে মনে করা হচ্ছে। এরমধ্যেই বছরের প্রথম দিন সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশ যাদব দাবি তুলেছেন, প্রয়াগে কুম্ভমেলা পরিসরে সম্রাট হর্ষবর্ধনের মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি বলেছেন, দানশালী হর্ষবর্ধন বিশাল কুম্ভমেলার আয়োজন করে প্রচুর দান করেছিলেন। সেটাই কুম্ভমেলার আদর্শ হওয়া প্রয়োজন। বিজেপি শুধু ঘৃণা ছড়াতে পারে। ২০১৩ সালে তাঁর সরকারের সময়ে সম্প্রীতির কুম্ভমেলা হয়েছিল এবং দুনিয়া তার তারিফ করেছিল বলেও মন্তব্য করেছেন অখিলেশ। 
সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবীন্দ্র পুরী বলেছেন, আমরা বলেছি ওদের (মুসলিম) চা, ফলের রস, ফুলের দোকান করতে দেওয়া যাবে না। যদি ওদের দোকান দেওয়া হয়, ওরা তার মধ্যে থুতু দেবে, প্রস্রাব করবে। তাহলে কিন্তু আমাদের নাগা সাধুরা বাধ্য হবে ব্যবস্থা নিতে। এইরকম ঘটনা ঘটে গেলে তখন গোটা দুনিয়ায় খারাপ বার্তা যাবে। আমাদের মেলা সুন্দর, পরিষ্কার, বিশাল, দিব্য এবং শান্তিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। সেই কারণে অহিন্দুদের মেলা থেকে দূরে রাখতে হবে যাতে নিরাপত্তা এবং পবিত্রতা রক্ষা করা যায়। উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসেই আখাড়া পরিষদের এক সভায় সভাপতি রবীন্দ্র পুরী বলেছিলেন, মুসলিমরা নাম বদল করে খাবার, চা বিক্রি করবে। তার মধ্যে থুতু দেবে, যাতে হিন্দুদের ধর্ম নষ্ট হয়। আখাড়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরি গিরি বলেন, মেলায় শুধু সনাতনীদের প্রবেশ করতে দিতে হবে। অন্যরা যাতে পরিবেশ দূষিত করতে না পার, তা নিশ্চিত করতে হবে। ওই বৈঠকেই মহাকুম্ভের সঙ্গে যুক্ত শব্দবন্ধনী শাহী স্নানের ‘শাহী’ বা ‘পেশওয়াই’এর মতো শব্দ বদলে দেওয়ার দাবি করা হয়। কুম্ভ যত এগিয়ে আসছে মুসলিম বিরোধী এই জিগির বাড়াচ্ছে আখাড়া পরিষদ। ৪ নভেম্বর আখাড়া পরিষদের সভায় একটি প্রস্তাব পাশ করে বলা হয়, অহিন্দুরা যেন কুম্ভমেলায় প্রবেশ করতে না পারে। এদিন ফের সংবাদ সংস্থাকে একই কথা বললেন রবীন্দ্র পুরী। এখনও পর্যন্ত উত্তর প্রদেশ সরকার এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। কিন্তু লাগাতার এই ধরনের বিদ্বেষমূলক প্রচারের জেরে এলাহাবাদে সংখ্যালঘুদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন ধর্মগুরুও মুসলিম বিদ্বেষী উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে হোর্ডিং দিচ্ছেন প্রয়াগে। সোশাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে প্ররোচনামূলক বক্তব্য। 
গত রবিবার বছরের শেষ ‘মন-কি-বাত’-এর রেডিও বার্তায় কুম্ভমেলাকে ঘিরে একতার পক্ষে সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এদিন বলেছেন, ‘‘বিবিধতাই কুম্ভের বৈশিষ্ট্য। বিবিধতার মধ্যে একতার এমন দৃশ্য বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না। তাই একে একতার মহাকুম্ভ বলা যায়। মহাকুম্ভ একতার মন্ত্রকেই শক্তিশালী করবে। কুম্ভ থেকে ফেরার সময়ে একতার এই মন্ত্রকে সঙ্গে করে ফিরুন। সমাজে বিভাজন ও বিদ্বেষের মনোভাবকে নষ্ট করার সংকল্প নিতে হবে।’’ তারপরেও হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলি তাদের বক্তব্য অনড় আছে তা রবীন্দ্র পুরীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের রাষ্ট্রীয় অধ্যক্ষ মুফতি শাহবুদ্দিন রিজভি বরেলভি এই নিয়ে আগেই বলেছিলেন, আখাড়া পরিষদের বক্তব্য সাম্প্রদায়িকতাকে বাড়াবে। সমাজে ঘৃণা ছড়াবে। এই ধরনের সিদ্ধান্তে দেশের ক্ষতি হয়। তিনি রাজ্যের যোগীর সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন, আখাড়া পরিষদের এমন দাবি যাতে মানা না হয়। সাম্প্রদায়িকতা যারা ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। মুসলিমদের আরেকটি সংগঠন তেহরিক মুসলিম শব্বানের সভাপতি মুস্তাক মালিক বলেছেন, এরা মুসলমান এবং হিন্দুদের ভাগ করে নতুন হিন্দুস্তান বানানোর চেষ্টা করছে, যা কোনোদিন সফল হবে না। 
উল্লেখ্য, এলাহাবাদের জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ মুসলিম। প্রয়াগের আশপাশ এলাকায় গরিব মুসলিমদের বসবাস। স্বাভাবিকভাবে বরাবরই কুম্ভমেলায় মুসলিমরা খাবার, পানীয় সহ নানা জিনিসের দোকান করেন। নাগরদোলা সহ বিভিন্ন দোলনা তারা চালান। এছাড়াও মাল বয়ে নিয়ে যাওয়া সহ কায়িক শ্রমের আরও অনেক কাজ যে শ্রমিকরা করেন, তাদের বড় অংশই মুসলিম। বিভিন্ন রেল স্টেশন এবং বাস স্ট্যান্ড থেকে সঙ্গমমুখী মানুষের স্রোতও আসে মুসলিম নিবিড় এলাকার উপর দিয়ে। বিপুল গরিব তীর্থযাত্রীরা নানাধরনের সহায়তা পেয়ে থাকেন সংখ্যালঘু এইসব এলাকার বাসিন্দাদের থেকেই। কুম্ভমেলায় আসা দর্শনার্থীদের কোনোদিনই হিন্দু-মুসলিম বিভেদের সমস্যায় পড়তে হয়নি। এবারে মেলা শুরুর অনেক আগে থেকেই বিভেদের জিগির তৈরি করা হচ্ছে। ফলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কাও থাকছে।
এলাহাবাদ, ১ জানুয়ারি— ফের মুসলিম বিদ্বেষী জিগির ছড়ালেন অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদের প্রধান মহন্ত রবীন্দ্র পুরী। এমনকি মুসলিমদের উপরে হামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন। এবারের মহাকুম্ভে প্রয়াগে মুসলিমদের দোকান বানাতে দেওয়া যাবে না বলে দাবি জানিয়ে যাচ্ছে আখাড়া পরিষদ। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাধুদের আখাড়াগুলির যুক্ত মঞ্চ আখাড়া পরিষদ বর্তমানে সঙ্ঘ-বিজেপি’র সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। এবারের মহাকুম্ভকে হিন্দুত্ববাদী জিগির ছড়ানোর আখাড়ায় পরিণত করার চেষ্টা চলছে। রবীন্দ্র পুরীর বক্তব্য সেই লক্ষ্যেই বলে মনে করা হচ্ছে। এরমধ্যেই বছরের প্রথম দিন সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশ যাদব দাবি তুলেছেন, প্রয়াগে কুম্ভমেলা পরিসরে সম্রাট হর্ষবর্ধনের মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি বলেছেন, দানশালী হর্ষবর্ধন বিশাল কুম্ভমেলার আয়োজন করে প্রচুর দান করেছিলেন। সেটাই কুম্ভমেলার আদর্শ হওয়া প্রয়োজন। বিজেপি শুধু ঘৃণা ছড়াতে পারে। ২০১৩ সালে তাঁর সরকারের সময়ে সম্প্রীতির কুম্ভমেলা হয়েছিল এবং দুনিয়া তার তারিফ করেছিল বলেও মন্তব্য করেছেন অখিলেশ। 
সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবীন্দ্র পুরী বলেছেন, আমরা বলেছি ওদের (মুসলিম) চা, ফলের রস, ফুলের দোকান করতে দেওয়া যাবে না। যদি ওদের দোকান দেওয়া হয়, ওরা তার মধ্যে থুতু দেবে, প্রস্রাব করবে। তাহলে কিন্তু আমাদের নাগা সাধুরা বাধ্য হবে ব্যবস্থা নিতে। এইরকম ঘটনা ঘটে গেলে তখন গোটা দুনিয়ায় খারাপ বার্তা যাবে। আমাদের মেলা সুন্দর, পরিষ্কার, বিশাল, দিব্য এবং শান্তিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। সেই কারণে অহিন্দুদের মেলা থেকে দূরে রাখতে হবে যাতে নিরাপত্তা এবং পবিত্রতা রক্ষা করা যায়। উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসেই আখাড়া পরিষদের এক সভায় সভাপতি রবীন্দ্র পুরী বলেছিলেন, মুসলিমরা নাম বদল করে খাবার, চা বিক্রি করবে। তার মধ্যে থুতু দেবে, যাতে হিন্দুদের ধর্ম নষ্ট হয়। আখাড়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরি গিরি বলেন, মেলায় শুধু সনাতনীদের প্রবেশ করতে দিতে হবে। অন্যরা যাতে পরিবেশ দূষিত করতে না পার, তা নিশ্চিত করতে হবে। ওই বৈঠকেই মহাকুম্ভের সঙ্গে যুক্ত শব্দবন্ধনী শাহী স্নানের ‘শাহী’ বা ‘পেশওয়াই’এর মতো শব্দ বদলে দেওয়ার দাবি করা হয়। কুম্ভ যত এগিয়ে আসছে মুসলিম বিরোধী এই জিগির বাড়াচ্ছে আখাড়া পরিষদ। ৪ নভেম্বর আখাড়া পরিষদের সভায় একটি প্রস্তাব পাশ করে বলা হয়, অহিন্দুরা যেন কুম্ভমেলায় প্রবেশ করতে না পারে। এদিন ফের সংবাদ সংস্থাকে একই কথা বললেন রবীন্দ্র পুরী। এখনও পর্যন্ত উত্তর প্রদেশ সরকার এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। কিন্তু লাগাতার এই ধরনের বিদ্বেষমূলক প্রচারের জেরে এলাহাবাদে সংখ্যালঘুদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন ধর্মগুরুও মুসলিম বিদ্বেষী উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে হোর্ডিং দিচ্ছেন প্রয়াগে। সোশাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে প্ররোচনামূলক বক্তব্য। 
গত রবিবার বছরের শেষ ‘মন-কি-বাত’-এর রেডিও বার্তায় কুম্ভমেলাকে ঘিরে একতার পক্ষে সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এদিন বলেছেন, ‘‘বিবিধতাই কুম্ভের বৈশিষ্ট্য। বিবিধতার মধ্যে একতার এমন দৃশ্য বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না। তাই একে একতার মহাকুম্ভ বলা যায়। মহাকুম্ভ একতার মন্ত্রকেই শক্তিশালী করবে। কুম্ভ থেকে ফেরার সময়ে একতার এই মন্ত্রকে সঙ্গে করে ফিরুন। সমাজে বিভাজন ও বিদ্বেষের মনোভাবকে নষ্ট করার সংকল্প নিতে হবে।’’ তারপরেও হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলি তাদের বক্তব্য অনড় আছে তা রবীন্দ্র পুরীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের রাষ্ট্রীয় অধ্যক্ষ মুফতি শাহবুদ্দিন রিজভি বরেলভি এই নিয়ে আগেই বলেছিলেন, আখাড়া পরিষদের বক্তব্য সাম্প্রদায়িকতাকে বাড়াবে। সমাজে ঘৃণা ছড়াবে। এই ধরনের সিদ্ধান্তে দেশের ক্ষতি হয়। তিনি রাজ্যের যোগীর সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন, আখাড়া পরিষদের এমন দাবি যাতে মানা না হয়। সাম্প্রদায়িকতা যারা ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। মুসলিমদের আরেকটি সংগঠন তেহরিক মুসলিম শব্বানের সভাপতি মুস্তাক মালিক বলেছেন, এরা মুসলমান এবং হিন্দুদের ভাগ করে নতুন হিন্দুস্তান বানানোর চেষ্টা করছে, যা কোনোদিন সফল হবে না। 
উল্লেখ্য, এলাহাবাদের জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ মুসলিম। প্রয়াগের আশপাশ এলাকায় গরিব মুসলিমদের বসবাস। স্বাভাবিকভাবে বরাবরই কুম্ভমেলায় মুসলিমরা খাবার, পানীয় সহ নানা জিনিসের দোকান করেন। নাগরদোলা সহ বিভিন্ন দোলনা তারা চালান। এছাড়াও মাল বয়ে নিয়ে যাওয়া সহ কায়িক শ্রমের আরও অনেক কাজ যে শ্রমিকরা করেন, তাদের বড় অংশই মুসলিম। বিভিন্ন রেল স্টেশন এবং বাস স্ট্যান্ড থেকে সঙ্গমমুখী মানুষের স্রোতও আসে মুসলিম নিবিড় এলাকার উপর দিয়ে। বিপুল গরিব তীর্থযাত্রীরা নানাধরনের সহায়তা পেয়ে থাকেন সংখ্যালঘু এইসব এলাকার বাসিন্দাদের থেকেই। কুম্ভমেলায় আসা দর্শনার্থীদের কোনোদিনই হিন্দু-মুসলিম বিভেদের সমস্যায় পড়তে হয়নি। এবারে মেলা শুরুর অনেক আগে থেকেই বিভেদের জিগির তৈরি করা হচ্ছে। ফলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কাও থাকছে।

Comments :0

Login to leave a comment