পয়লা বৈশাখ সব বাঙালির। পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে বাইরে রয়েছেন এমন বাঙালিরও। পয়লা বৈশাখ ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কী করে হলো?
বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় ভোটাভুটিতে পাশ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্ন তুলেছেন সিপিআই(এম’ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, ‘‘ পশ্চিমবঙ্গ কী নবগঠিত রাজ্য? এই সিদ্ধান্ত অনৈতিহাসিক, ভুল। ইতিহাসকে বিকৃত করা হলো।’’
এর আগে কেন্দ্র নিযুক্ত রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেন। রাজ্য সরকার সেই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েচিল। আপত্তি জানান বামপন্থীরাও।
চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘যেহেতু বিজেপি বলছে ২০ জুন, আরএসএস’র পরিকল্পনা অনুযায়ী, তার পালটা অন্য দিন ঘোষণা করা হলো। আরএসএস’র এক হাতে মুখ্যমন্ত্রী আরেক হাতে রাজ্যপাল। তার জন্য বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হলো।’’
চক্রবর্তীর যুক্তি, ‘‘ইতিহাসের দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের আজকের মানচিত্র পূর্ণাঙ্গ হয়েছিল ১৯৫৬’র ১ নভেম্বর। ওইদিন পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল মানভূম-পুরুলিয়া। তার আগে কোচিবহারের মতো বিভিন্ন অংশ যুক্ত হয়েছে। ফলে ইতিহাসের দিক থেকে ১ বৈশাখকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ বলা বেঠিক।’’
পয়লা বৈশাখ প্রসঙ্গে চক্রবর্তীর ব্যাখ্যা, ‘‘ওইদিন কেবল পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের অন্য প্রান্তের বাঙালিরাও নববর্ষ পালন করেন। পালন করেন দেশের বাইরে বাংলাদেশের মানুষ। আবার আমেরিকায় বাঙালিরাও বছরের প্রথম দিন হিসেবে পালন করেন। তা’হলে পশ্চিমবঙ্গ দিবস বলা হবে কী করে?’’
লোকসভায় বিশেষ অধিবেশন প্রসঙ্গেও পরপর প্রশ্ন তুলেছেন চক্রবর্তী। তাঁর ক্ষোভ, কেন বিশেষ অধিবেশন জানায়নি বিজেপি সরকার। এত গোপনীয়তা কিসের? বিশেষ অধিবেশন ডেকে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি, দেশজুড়ে হিংসা বা মণিপুর, হরিয়ানার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হলে তার একটা মানে ছিল। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু বিজেপি মানুষের জীবনজীবিকা নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নয়। বরং, প্রয়োজনীয় বিষয় থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী। এরা ধরা পড়ে গিয়েছে।’’
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী এক ব্যক্তি এক ভোট। প্রত্যেকের ভোটেরর সমান মূল্য। আর নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ‘এক দেশে এক ভাষা’, ‘এক দেশ এক নেতা’ মার্কা প্রচার। স্বৈরাচারী মনোভাব স্পষ্ট। সেই মনোভাবেই চলছে ‘এক দেশ এক ভোট’ প্রচার। এমনকি সংবিধানে ভারত এবং ইন্ডিয়া, দু’টি নাম থাকলেও বদলানোর চেষ্টা হচ্ছে। বাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে ‘ইন্ডিয়া’-কে।
Comments :0