জয়ন্ত সাহা, কোচবিহার
চা বাগানের জমি, চরের জমি আর খাস জমি সরকার যে কাউকে দিয়ে দিতে পারবে। বিধানসভায় তার জন্যই আইন পাশ করেছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। জনবিরোধী আইনের প্রতিবাদ বিধানসভায় হতে দিতে চায় না সরকার। সে জন্যই একমাত্র বিরোধী বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীকে জেলে ঢোকানো হয়েছিল।
সোমবার কোচবিহারে সিপিআই(এম) জেলা দপ্তরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
তিনি বলেছেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি যদি মনে করেন মিথ্যা মামলা দিয়ে বিধায়ক, আইনজীবি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেত্রীকে জেলে ঢুকিয়ে দিয়ে পার পেয়ে যাবেন আর চোর, জোচ্চোরে যাতে তিহার জেলে না যায় তার চেষ্টা চালাবেন, তবে জেনে রাখুন এ রাজ্যের মানুষ তাঁকে ক্ষমা করবে না।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চাই রাজ্যে। মানুষের হক আদায় করব। আর এ কাজে বিজেপি ও তৃণমুল বিরোধী সব শক্তিকে শামিল করাই এখন আমাদের বড় কাজ।’’ সাগরদিঘি কেন্দ্রে বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর জয় প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘শুধু সাগরদিঘিতে নয়। তিস্তা, তোর্সা, গঙ্গাপারের কোনও কেন্দ্রই আর তৃণমূলের জন্য নিরাপদ নয়।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট ভোটে লড়তে প্রস্তুত। বিজেপি ও তৃণমুল বিরোধী সমস্ত শক্তিকে নিয়েই এই লড়াই হবে।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘বিজেপি বিরোধী শক্তি নয়। তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করেই কাজ করছে। বিজেপি বিধায়করাও বিরোধীর ভূমিকা নেয় না।’’ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নেওয়া ক্ষেত্রে টালবাহানা নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। সেলিম বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি বা সিবিআই চাইলেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে অনুব্রতকে তিহার জেলে নিয়ে যেতে পারে। সেটা করা হচ্ছে না। আসলে সময় নষ্ট করা হচ্ছে। যাতে
ভাইপোর মতো অনুব্রতও যাতে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট থেকে বাড়তি পেতে পারেন।’’
কৃষক সঙ্কট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ধান বিক্রির সময় তৃণমূলের লোকেরা যেমন মান্ডি কব্জা করে, এখন আলুর সময়ে কোল্ড স্টোরেজেরও দখল নিচ্ছে। অথচ আলুর দাম না পেয়ে উত্তরবঙ্গের আলু চাষীরা রাস্তায় আলু ফেলে দিচ্ছেন। রাজ্য সরকারের সেদিকে হুঁশ নেই। দালালরাজ কায়েম করেছে তৃণমূল। ১১ ই মার্চ কৃষকসভা পথ অবরোধ করবে। সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকরা ১০ ই মার্চ ধর্মঘট করবে। আমরা ওঁদের আন্দোলনকে সমর্থন করছি।’’
এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও অশান্তির বাতাবরণে জেলার মানুষ তিতিবিরক্ত। মানুষকে স্বস্তি ও শান্তি ফিরিয়ে দিতে জোট বেঁধেই লড়াই হবে।’’ সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন অলকেশ দাশ, জীবেশ সরকার ও তমসের আলিও।
Comments :0