জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিককে তলব করল সিবিআই। শুক্রবার মালিক নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে। সরকারি কর্মচারীদের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে বিপুল জালিয়াতির অভিযোগ তুলে রাজ্যপাল হিসেবে চুক্তি বাতিল করেন। অনিল আম্বানির মালিকানাধীন রিলায়েন্সের বিমা সংস্থা বিরুদ্ধে তদন্তে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তাঁকে সিবিআই ডেকেছে বলে জানিয়েছেন মালিক।
গত সপ্তাহেই সংবাদমাধ্যমে পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হানায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে মুখ খোলেন মালিক। সে সময়ে তিনি রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন, জানিয়েছিলেন সে তথ্যও। পুলওয়ামায় হামলা এবং তারপরে পাকিস্তানের বালাকোটে বোমাবর্ষণ ঘিরে গত লোকসভা ভোটে ব্যাপক প্রচার করে বিজেপি। কিন্তু পুলওয়ামা হামলার তদন্তের হাল কী, দেশ জানে না। সতর্কবার্তা থাকা সত্ত্বেও কেন আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের বিমানে করে না নিয়ে সড়কপথে নেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নও উসকে দেন মালিক। দেশজুড়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিজেপি। তারপরই সিবিআই’র তৎপরতায় ফের প্রশ্ন উঠেছে মোদীর ভূমিকা নিয়ে।
মালিক ২০১৮’তে রিলায়েন্সের ওই স্বাস্থ্য বিমা চুক্তি বাতিল করেছিলেন চালু হওয়ার এক মাসের মধ্যেই। ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কর্মচারীর বিমা জড়িত ছিল কর্মচারীরাও এই বিমায় জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন। মালিক ফাইল দেখে সেই বক্তব্যে সহমত হন বলে জানিয়েছেন। কিরু জল বিদ্যুৎ তাপ প্রকল্পে কর্মরত সরকারি কর্মীদের টেন্ডার রিলায়েন্সকে পাইয়ে দেওয়ার ৩০০ কোটি টাকার ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। আরএসএস এবং বিজেপি নেতা রাম মাধবকে এই ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য দায়ী করেন।
তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অনিল আম্বানির রিলায়েন্স বিমা সংস্থা এবং অপর একটি দালাল সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে সিবিআই। গত বছরের সেপ্টেম্বরেও একবার সিবিআই দপ্তরে এই তদন্তের কারণেই হাজিরা দিয়েছিলেন মালিক।
শুক্রবার তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কর্মসূচির কারণে রাজস্থান যাচ্ছেন তিনি। ২৭-২৯ এপ্রিল সিবিআই দপ্তরে যাবেন।
২০১৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন সত্যপাল মালিক। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের কিছুদিন আগেই তাকে সেখানকার রাজ্যপাল পদ থেকে সরান হয়।
এর আগে ২০১৭’তে বিহারের রাজ্যপাল ছিলেন তিনি। ১৯৭৪’এ কংগ্রেস বিধায়ক হন, তারপর ১৯৮৪’তে সাংসদ পদেও নির্বাচিত হন। বোফর্স মামলাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ছেড়ে ১৯৮৮‘থে ভিপি সিংয়ের জনতা দলে যোগ দেন। তারপর ২০০৪’এ বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
Comments :0