SHILDA ATTACK TRIAL

আগেই ছাড় সুচিত্রাকে, শিলদার নাশকতায় দোষী সাব্যস্ত ২৩

রাজ্য জেলা

23 convicted for attack on Shilda EFR camp

শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ২৪জন জওয়ানকে খুন করার ঘটনায় ২৩জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। মঙ্গলবার মেদিনীপুর আদালত ওই ২৩জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। রায় ঘোষণা পরে হবে। 
ওই ঘটনায় সুচিত্রা মাহাতোকে ছাড় দিয়েছিল মমতা ব্যানার্জির সরকার। বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতা প্রবীর গড়াইয়ের স্ত্রী সুচিত্রা ছিলেন এই হামলার প্রধান অভিযুক্ত। তাকে রেহাই দিয়েছে তৃণমূল। রেহাই দেওয়া হয়েছে আরও বেশ কয়েকজনকে।
২০১০-র ১৫ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রামের শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালায় মাওবাদীরা। মাওবাদীরা তখন তৃণমূলের সাহায্যেই পশ্চিমাঞ্চলের ওই এলাকায় নাশকতা চালাতো। মমতা ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন মাওবাদী নেতা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষাণজী। সুচিত্রা মাহাতো এবং তার তৎকালীন স্বামী শশধর মাহাতো, দুজনেই ছিলেন মাওবাদী অ্যাকশন স্কোয়াডে। দুজনেই ছিলেন কিষাণজীর অত্যন্ত কাছের। শিলদার হামলায় সেদিন ২৪জন ইএফআর জওয়ানকে খুন করে মাওবাদীরা। জওয়ানদের পালটা প্রতিরোধে লালগড়ের বৈতা এলাকার বাসিন্দা মনোজ মাহাতো সহ ৫জনের মৃত্যু হয়। 
চার্জশিটে ২৪জনের নাম ছিল। তার মধ্যে মাওবাদীদের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক সুদীপ চোংদার ওরফে কাঞ্চনের নামও ছিল। কিন্তু কাঞ্চন মারা গেছেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়া অভিযুক্তদের  পরিবারগুলির অনেকেই আদালতে ক্ষোভ উগরে দিয়ে স্লোগান তুললেন। শিলদা কান্ডে জড়িত মূল দোষীরা শাষকদলে ভিড়ে গিয়ে সরকারী অনুদান ও পুনর্বাসন প্যাকেজ নিয়ে খুনের সাজা থেকেও রেহাই পেলেন, এমনই অভিযোগ তোলেন অভিযুক্ত বুদ্ধেশ্বর মাহাতোর মা নিয়তী মাহাত, ধৃতিপ্রসাদ মাহাতোর স্ত্রী সারথী রজকের মত বেশ কয়েকজন।
২০১১-র মে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা ব্যানার্জি। তার বছর আটেক পরে ওই ঘটনার চার্জশিট জমা পড়ে। ততদিনে সুচিত্রার মত মাওবাদীদের একাংশ আত্মসমর্পণ করে, চাকরি, টাকা সহ নানা সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়ে তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক হয়ে উঠেছেন। মঙ্গলবার দীর্ঘ ১৪বছর পর মেদিনীপুর অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক সালিম শাহী ২৩জনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। জামিনে মুক্ত থাকা ৯জন সহ মোট ২২ জনকে মঙ্গলবার তোলা হয়েছিল আদালতে। বেলপাহাড়ির বাসিন্দা বুদ্ধদেব মাহাতোকে আদালতের বাইরে অ্যাম্বুলেন্সে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়েছিল। তার মধ্যে একজন মারা যান। ন’জন জামিনে মুক্ত ছিলেন। আজ (মঙ্গলবার) ২৩ জনকেই আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁদের সকলকেই দোষী সাব্যস্ত করেন এবং জামিনে থাকা ন’জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন। মঙ্গল এবং বুধবার ২৩ জনের বক্তব্য শুনবেন বিচারক, তার পরেই সাজা ঘোষণা হবে।’’
এই মামলা প্রথমে শুরু হয়েছিল ঝাড়গ্রাম আদালতে। পরর্বতীতে সেই মামলার শুনানি শুরু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর আদালতে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, জামিনে মুক্ত ছিলেন লোচন সিংহ সর্দার, চুনারাম বাস্কে, রমসাই হাঁসদা, আশিস মাহাত, ধৃতিরঞ্জন মাহাত, অর্ণব দাম, বিষ্ণু সারেন, বুদ্ধেশ্বর মাহাত এবং প্রশান্ত পাত্র। জেল হেফাজতে ছিলেন শ্যামচরণ হাঁসদা, রাজেশ হাঁসদা, শুকলাল সরেন, রাজেশ মুন্ডা, মানস মাহাত, কানাই হাঁসদা, কল্পনা মাইতি, সনাতন সরেন, মনসারাম হেমব্রম, ঠাকুরমনি হেমব্রম, ইন্দ্রজিৎ কর্মকার, কাজল মাহাত, রঞ্জন মুন্ডা এবং মঙ্গল সরেন।

Comments :0

Login to leave a comment