Fire in Uluberia

উলুবেড়িয়ায় ঘুমের মধ্যেই পুড়ে মৃত শিশু সহ ৪

রাজ্য

Fire in Uluberia

মর্মান্তিক এক ঘটনায় ঘুমের মধ্যে ঘরে আগুন লেগে মৃত্যু হল একই পরিবারের এক শিশু সন্তান সহ ৪ জনের। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার গভীর রাতে উলুবেড়িয়া পৌরসভার ২৫ নং ওয়ার্ডের পারিজাত দক্ষিন পাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হল ইয়াসিন মল্লিক (৩২), মহিমা বেগম (২৭) হুমাইয়ারা খাতুন (১) এবং নুরজাহান বেগম (৫৫)। মৃত ইয়াসিনের স্ত্রী মহিমা বেগম, মা নুরজাহান বেগম ও মেয়ে হুমাইয়ারা খাতুন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ইয়াসিন, মহিমা  ও হুমাইয়ারার। নুরজাহান বেগমকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার প্রথমে উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় এলাকার বাসিন্দারা। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কলকাতায় হাসপাতলে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বিকালে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার অনেকক্ষন পরে ঘটনস্থলে পুলিশ ও দমকল বাহিনী আসে। পুলিশ ও দমকল বাহিনীকে প্রথমে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। পরে পুলিশ ও দমকল বাহিনী উদ্ধারকার্যে হাত লাগায়। পুলিস মৃতদেহগুলি কোনরকমে উদ্ধার করে। আগুনে পুরো ঝলসে গিয়েছিল মৃতদেহগুলি। পুলিশ কোনক্রমে কাপড়ে মুড়ে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ ও দমকল বাহিনীর প্রাথমিক অনুমান শট সার্কিট থেকেই এই আগুন লেগেছে। যাতে শেষ হয়ে গেছে গোটা পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই বাড়ির তিনটি ঘরে থাকতো আটজন। শনিবার রাতে বাড়ির একটি ঘরে স্ত্রী মহিমা ও মেয়ে হুমাইয়ারাকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন ইয়াসিন। পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন ইয়াসিনের বড় বৌদি ও ভাইপো। অন্য একটি ছোট ঘরে ছিলেন মা নুরজাহান বেগম। ইয়াসিনের দাদা হাওড়ায় হাটে গিয়েছিলেন ব্যবসার কাজের জন্য। সে বাড়িতে ছিলেননা। বাবা জয়নাল মল্লিক শনিবার আজমীর শরীফে ঘুরতে যায়। শনিবার  রাত ৩ টে নাগাদ আচমকাই ইয়াসিনের ঘর থেকে আগুন বের হতে দেখা যায়। বাড়ি থেকে কুল কুল করে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। আগুন লাগার ঘটনা টের পেয়ে  পাশের ঘরে থাকা ইয়াসিনের মা নুরজাহান বেগম চিৎকার শুরু করে দেয়। বৃদ্ধার চেঁচামেচিতে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। নুরজাহান বেগম নিজেও তিনজনকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে সেও অগ্নিদগ্ধ হয়ে পড়ে। এরপর গ্রামবাসীরা বাড়িতে ঢুকে কোনরকমে ইয়াসিনের ঘরের দরজা ভেঙে দেখে ততক্ষনে সব শেষ। ঝলসানো অবস্থায় তিনজনকে ঘরের মধ্যে দেখতে পায় তারা। ঘরে তখনও থিকথিক করে আগুন জ্বলছে। গোটা ঘর ধোঁয়ায় ভর্তি হয়ে গেছে। গ্রামবাসীরা কোনরকমে জল দিয়ে তা নেভানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ও দমকলে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ ও দমকল অনেক পরে ঘটনাস্থলে আসে। নুরজাহান বেগমকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার প্রথমে উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় এলাকার বাসিন্দারা। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কলকাতায় হাসপাতলে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বিকালে তার মৃত্যু হয়। পরে দমকল ও পুলিস কর্মীরা মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া মেডিকেল কলেজে পাঠায়। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিসের এক কর্তা জানান কি কারণে আগুন লেগেছে পুলিস তদন্ত করছে। রবিবার ভোরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায় থমথমে গোটা এলাকা। আগুনে বাড়ির সমস্ত জিনিস পুড়ে ছাঁই হয়ে গিয়েছে। যে খাটে ইয়াসিন তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে শুয়েছিল সেটি প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment