বিড়ি মালিকরাই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা। তারাই বিধায়ক, সাংসদও। বিড়ি শ্রমিকদের অবাধে মজুরি চুরিতে এরা চোখ বন্ধ করেই থাকবে। তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি বাড়ছে মজুরি চুরির টাকায়। বিজেপি সরকার চালাচ্ছে কেন্দ্রে। শ্রম আইন করেছে শ্রমিকের বিরুদ্ধে। বিড়ি শ্রমিকরাই লড়াই করে দাবি আদায় করবেন। রবিবার ধুলিয়ান কাঞ্চনতলা হাইস্কুলের সামনে বিড়ি শ্রমিকদের বিশাল সমাবেশ থেকে উঠে এসেছে এই বার্তা।
সমাবেশে বক্তা ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, বামফ্রন্ট সরকারের সময় বিড়ি শ্রমিকদের যে অধিকার, সুযোগ সুবিধা ছিল সে সবই আজ বিপন্ন। ন্যূনতম মজুরি, কাজের অধিকার থেকে পিএফ, লুট হয়েছে শ্রমিকদের অধিকার। তৃণমূল সরকার সহজে কথা শুনবে না। লড়াই তীব্রতর করে অধিকার, নূন্যতম মজুরি ছিনিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেছেন, নদী ভাঙনে বিপন্ন মানুষের জীবন-মরণ সঙ্কট কলকাতা এবং দিল্লিতে পৌঁছে দেবে বামপন্থীরাই। রাজ্যের বঞ্চনা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
সমাবেশে সিপিআই(এম) মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, বিড়ি শ্রমিকদের দুরবস্থা প্রতিদিন বাড়ছে। রাজ্যের সরকার নির্বিকার। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা চুরি করতেই ব্যস্ত। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জ্যোতিরূপ ব্যানার্জি, মোদাসসার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন মহম্মদ আজাদ। উপস্থিত ছিলেন সচ্চিদানন্দ কান্ডারী, তোয়াব আলি। নেতৃবৃন্দ বলেন, বিড়ি শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী ১৭৮ টাকা মজুরি পাওয়ার কথা। তা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। চুক্তি ভেঙেছে মালিকরাই। সপ্তাহে সাতদিন কাজ হচ্ছে না। পাড়ায় পাড়ায় কাজের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হবেন বিড়ি শ্রমিকরা।
সেলিম বলেন, স্বাধীনতার লড়াইয়ের দেশের সব ধর্ম, জাতির মানু্ষ এককাট্টা হয়েছিলেন। বিজেপি ধর্মের নামে ভাগ করছে। বিজেপি'র পথে হাঁটছে তৃণমূলও। তাই মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আরএসএস খারাপ সেটা তিনি বিশ্বাস করেন না। পশ্চিবঙ্গের মানুষ বিজেপি-আরএসএস'র কাছে মাথা নোয়াবে না। লড়ছে বামপন্থীরা। রাজ্যের বঞ্চনা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন মুখ্যমন্ত্রী।
সামসেরগঞ্জে নদী ভাঙন প্রসঙ্গে কেন্দ্র এবং রাজ্যের উদাসীনতা নিয়ে সরব হন সেলিম। তিনি বলেন, নদী ভাঙন নিয়ে সংসদ বা বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ, এমএলএ'রা লড়ছেন না কেন? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলছেন, নমামী গঙ্গে! আর গঙ্গা যখন জমি ভাঙছে দেখতে পাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী? স্কুল, মন্দির, কবরস্থান তলিয়ে যাচ্ছে সরকার কোথায়? বলা হচ্ছে দুয়ারে সরকার। কিন্তু দুয়ারে যখন নদী, সরকার কোথায়? সামসেরগঞ্জের ভাঙন রোধের দাবি কলকাতা, দিল্লি অবধি পৌঁছে দেবে বামপন্থীরাই। দাবি আদায়ে তীব্রতর হবে সংগ্রাম।
রবিবার শেষ হয় মুর্শিদাবাদ জেলা বিড়ি মজদুর অ্যান্ড প্যাকার্স ইউনিয়নের মুর্শিদাবাদ জেলা ১১ তম সম্মেলন। ধুলিয়ানের কাঞ্চনতলা জেজিজে ইনস্টিটিউশনে সম্মেলন থেকে ৭৫ জনের জেলা ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জ্যোতিরূপ ব্যানার্জি। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ আজাদ। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন তাপস আচার্য।
Comments :0