এক প্রতিবন্ধী শিশুকে মারধর করার অভিযোগ উঠলো কর্তব্যরত এক শল্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। টাকী গ্রামীণ হাসপাতালের ঘটনা। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। প্রতিবন্ধী শিশুটির নাম শাহিন মণ্ডল, পিতা গোলাম মণ্ডল হাসনাবাদ থানার আমলানী গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিপুরের বাসিন্দা। অভিযুক্ত শল্য চিকিৎসক ডাঃ পুলক জানা। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কী এমন অভিযোগ যে শেষমেশ পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে হলো আক্রান্ত শিশুটির পরিবারকে? গোলাম মণ্ডলের স্ত্রী পারভিনা মণ্ডল ও আক্রান্ত শিশুটির মাসি সাকিলা পিয়াদা শল্য চিকিৎসক ডাঃ পুলক জানার অমানবিক আচরণের কাহিনী তুলে ধরে বলেন, গত দিন কুড়ি আগে আচমকা পড়ে গিয়ে শাহিনের বা হাত ভেঙে যায়। তড়িঘড়ি শাহিনকে নিয়ে পারভিনা টাকী গ্রামীণ হাসপাতালে আসে। সেখানে কর্তব্যরত শল্য চিকিৎসক ডাঃ পুলক জানা শাহিনকে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানায় হাত প্লাস্টার করতে হবে তবে, হাসপাতালে নয় পার্শ্ববর্তী তার নিজস্ব চেম্বারে। খরচ হবে ৩ হাজার টাকা। দীনমজুরী করে সংসারের হেঁশেল সামলাতে হিমসিম খাওয়া পারভিনা বলেন, ডাক্তারবাবু আমরা গরীব মানুষ। কোথায় পাবো অত টাকা ?কে শোনে কার কথা? বাধ্য হয়ে ২৯০০ টাকা কোনক্রমে জোগাড় করে ডাঃ পুলক জানাকে দিলে তিনি তার ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে শাহিনের হাত প্লাস্টার করে দেন এবং পরেরদিন কার্যত জোরপূর্বক বাকি ১০০ টাকা নিতে দ্বিধা করেন না।
এমতবস্থায় বাড়ি ফিরে যান পারভিনা। এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতে শাহিনের হাতে জীবাণু সংক্রামক হয়ে যন্ত্রনা শুরু হলে ফের শাহিনকে নিয়ে তার মা ও মাসি রবিবার ডাঃ পুলক জানার কাছে আসেন। চিকিৎসক জানান ফের হাত প্লাস্টার করতে হবে। শাহিনের মাসি সাকিলা পিয়াদা বলেন, প্রথমদিন হাত প্লাস্টার করার সময় শাহিন ব্যাথা পায়। এদিনও ব্যাথা পেলে শাহিন ডাঃ পুলক জানাকে লক্ষ্য করে থুথু ছিটিয়ে দেয়। প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ডাঃ পুলক জানা শাহিনের মা মাসিকে ঘর থেকে বার করে দিয়ে শাহিনের মুখে পিঠে মারতে থাকেন। শাহিনের চিৎকার শুনে মা মাসি গিয়ে দেখতে পান তখনও শাহিনকে মারধর করছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।
পারভিনা জানতে চান কেন আপনি শাহিনকে মারছেন? উত্তরে অভিযুক্ত চিকিৎসক জানান মেরেছি বেশ করেছি। যা করার করে নিন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সংবাদমাধ্যম টাকী গ্রামীণ হাসপাতালে পৌঁছালে সংবাদমাধ্যমকে শাহিনের মা ও মাসি সবিস্তারে জানান প্রতিবন্ধী শাহিনের উপর চিকিৎসকের অত্যাচারের কাহিনী। শাহিনের পরিবার সূত্রে এও জানা গিয়েছে শাহিন বহুদিন ধরে স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হয়ে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসারত। অভিযুক্ত চিকিৎসক এ হেন অমানবিক আচরণের বিষয়টি বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার সি এম ও এইচ রবিউল ইসলাম গাইনের নজরে আসে। আক্রান্ত শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয় হাসনাবাদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সাহিন হাসানের কাছে। বসিরহাট স্বাস্থ্যজেলার পক্ষ থেকে অভিযুক্ত চিকিৎসকের এই অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেদিকেই তাকিয়ে আছে শাহিনের পরিবার।
Comments :0