DHUPGURI RALLY SALIM ADHIR

তৃণমূল-বিজেপি দু’য়ের বিরুদ্ধেই লড়াই, ধূপগুড়িতে জনসভায় সেলিম-অধীর

রাজ্য জেলা

জনসভায় প্রার্থী ঈশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গে সেলিম

তৃণমূল করলে রাজ্যের বাহিনী পাহারা দেবে। বিজেপি করলে কেন্দ্রের পাহারা দেবে। সব চোর, সব লুটের হিসেব চাইবে বামপন্থীরা। মেহনতের টাকা লুট রুখবে জনতাকে সঙ্গে নিয়েই। লুট আড়াল করতেই বিভাজনের রাজনীতি চালায় তৃণমূল এবং বিজেপি। ভাগাভাগির এই রাজনীতিকেও হারাতে হবে।

শুক্রবার ধূপগুড়িতে নির্বাচনী জনসভায় সরাসরি এই বার্তা দিয়েছেন বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ। এদিন ডাকবাংলো ময়দানে এই সুরেই বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। 

ধূপগুড়ির উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট সমর্থিত সিপিআই(এম) প্রার্থী ইশ্বর চন্দ্র রায়কে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে কংগ্রেসও। এদিনই মুম্বাইয়ে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক শেষ হয়েছে। সমন্বয় কমিটিতে রাকা হয়েছে তৃণমূল সাংসদ এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জিকে। তা নিয়ে বিজেপি এবং সংবাদমাধ্যম এ রাজ্যে তৃণমূল বিরোধী লড়াই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। 

সেলিম বলেছেন,‘‘স্লোগান উঠেছিল ‘লাল হটাও দেশ বাঁচাও’। দেশ বাঁচেনি। দেশকে বাঁচাতে হলে লালঝান্ডাকে শক্তিশালী করতে হবে। আমরা বলছি কেবল লাল ঝান্ডা নয়, তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে যাঁরাই লড়ছে তাঁদের সকলকে থাকতে হবে। এখানে কংগ্রেসের সমর্থকরাও এসেছেন, নেতৃত্ব এসেছেন। এটাই লড়াইয়ের বাস্তবতা। সেদিকে না তাকিয়ে দেখানো হচ্ছে মুম্বাইতে কী হচ্ছে। দিল্লিতে ভোর রাতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অভিষেক ব্যানার্জির বৈঠক হচ্ছে। চোখের সামনে কী হচ্ছে বলছে না। ধূপগুড়িতে কী হচ্ছে বলছে না।’’

অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাস আর সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতির মধ্যে এ রাজ্যে নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা চাই। তাই একজন প্রগতিশীল মানুষকে দরকার। সিপিআই(এম) প্রার্থীকে সমর্থনের আহ্বান জানাচ্ছি যাতে বিধানসভায় গিয়ে সন্ত্রাস নয়, সাম্প্রদায়িকতা নয়, মানুষের কথা বলতে পারেন।’’  

মীনাক্ষি মুখার্জি বলেছেন, ‘‘চল্লিশ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ধূপগুড়িতে। অন্য রাজ্যে কাজ করতে যাচ্ছে। ফিরে আসছে কফিনবন্দি হয়েছে। কৃষিভিত্তিক শিল্প তৈরি করতে হবে। বেকার ছাত্র যুব, হাসপাতাল। হেলথ সেন্টার কিছু হলেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়ে দেয়। এই অবস্থা বদলাতে হবে।’’ 

সেলিম বলেন, ‘‘চোরকে চোর বলতে, লুটেরাকে লুটেরা বলতে, ধর্ষককে ধর্ষক বলতে আমরা ভয় পাই না। এদের টাকা রাখতে বিদেশী অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিতে হয়। সিবিআই, ইডি’র কাছে সব হিসেব আছে। কিভাবে কোথা থেকে কাকে দিয়ে টাকা পাঠানো হয়েছে। তার হিসেব আমরা নেব। পার্থ চ্যাটার্জি যদি জেলে যান তা’হলে পিসি-ভাইপো কেন যাবেন না?’’ 

সেলিম বলেছেন, ‘‘বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ। বিজয়বর্গীয়ের টাকা যে অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে রাখা হয়েছে, তৃণমূলের টাকাও রাখা হয়েছে সেই অ্যাকাউন্টে। বিজেপি কখনও তৃণমূলের দুর্নীতির বিচার চাইবে না।’’ 

হাইকোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি তুলে তিনি বলেন, ‘‘আদালতে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে যে ইডি-সিবিআই তৃণমূলের দুর্নীতির তদন্ত করছে না। আদালত প্রশ্ন তুলছে।’’ আদালতের রায়েই যে এই তদন্ত সেই প্রসঙ্গ তোলেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘ধর্মতলায় যাঁরা আন্দোলনে বসে রয়েছেন, যোগ্য চাকরিপ্রার্থী তাঁরা পুজো, ঈদ বাদ দিয়ে লড়াইয়ে রয়েছেন। নিয়োগের নাম করে টাকা তুলেছে। এদিকে স্কুলে শিক্ষক নেই। মাদ্রাসায় শিক্ষক নেই। বিজেপি বলছে স্কুলের দাবি আলাদা, মাদ্রাসার দাবি আলাদা। আমরা বামপন্থীরা বলছি স্কুল এবং মাদ্রাসায় সুষ্ঠু পড়াশোনা চাই, সুষ্ঠু নিয়োগ চাই। দাবি এক, ফলে লড়াই এক।’’ 

Comments :0

Login to leave a comment