রাম মন্দিরের উদ্বোধন, লোকসভা ভোট এবং সেইসঙ্গে সাংস্কৃতিক মার্কসবাদীদের আক্রমণ বিজয়া দশমীর ভাষণে এই তিন উপাদানে জোর দিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।
নাগপুরে বিজয়া দশমী পালন অনুষ্ঠান প্রতিবছরই করে বিজেপির ভিত্তি সংগঠন উগ্র হিন্দুত্ববাদী আরএসএস। ভাগবত বলেছেন, " ২২ শে জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে দেশের সব মন্দিরে অনুষ্ঠান করে ওই দিনটি পালন করতে হবে।"
হিন্দু ধর্ম আর ভোটের ফায়দা তুলতে রাজনৈতিক স্লোগান 'হিন্দুত্ব' যে আলাদা, বিরোধীরা সেই প্রচারে তৎপর।
ভাগবত বলেছেন, "ভোটের জন্য দেশকে বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তা সত্বেও সেরা বিকল্প বেছে নিতে হবে। আবেগ উসকে দিয়ে ভোটে জয়ের চেষ্টা করা সমর্থনযোগ্য নয়।"
উগ্র হিন্দুত্ববাদী আবেগকে উস্কে দিয়ে বিজেপির জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই কাজ করে আরএসএস।
এই সময়ে জাতভিত্তিক এবং আর্থসামাজিক সমীক্ষার দাবিতে বিরোধীদলগুলির মঞ্চ ইন্ডিয়া সোচ্চার সরব বামপন্থীরাও। বিজেপি সেই দাবি মানতে নারাজ।
ভাগবত বলেছেন," ভারতের উত্থানের সঙ্গে বিশ্বের মঙ্গল সর্বদা জড়িত কিন্তু স্বার্থপর বিভেদমুখী এবং প্রতারক কিছু শক্তি সংকীর্ণ স্বার্থে সামাজিক সংহতি নষ্ট করতে তৎপর। তাদের নানা সাজসজ্জা রয়েছে। এদের কেউ কেউ নিজেদের সাংস্কৃতিক মার্কসবাদী বলে দাবি করে।"
সংঘ প্রধানের সংযোজন, "এরা মহৎ লক্ষ্যের দাবী জানালেও শৃঙ্খলা নৈতিকতা সংস্কৃতি মর্যাদা এবং সংযমবোধের ক্ষতি করতে চায়।"
সংবাদ মাধ্যমের ওপর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরএসএস এবং বিজেপির দখলদারির বিরুদ্ধে সারাদেশের বিভিন্ন অংশ প্রতিবাদে সামিল হয়েছে। নিউজ ক্লিক এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রবির পুরকায়স্থকে গ্রেপ্তার করে সন্ত্রাসবাদ রোধই আইনে দায়ী করার প্রচেষ্টা তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এই সময়েই ভাগবত বলছেন, "সাংস্কৃতিক মার্কসবাদীদের মূল লক্ষ্য সংবাদ মাধ্যম এবং বিদ্যা চর্চার প্রতিষ্ঠানে কর্তৃত্ব কায়েম করা শিক্ষা রাজনীতি সামাজিক পরিবেশকে নৈরাজ্য এবং দ্বন্দ্বের মুখে ঠেলে দেওয়া। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া।"
হিন্দুত্ববাদী কর্পোরেট আতাত এখন দেশের রাজনীতিতে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠীকে রক্ষা করা এবং সিএনজি রিপোর্টে দুর্নীতি ফাঁস হওয়ায় সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বদলি প্রতিবাদের মুখে পড়েছে।
ভাগবত মনিপুরের প্রসঙ্গ টেনেছেন। আর এস এস এর বিরুদ্ধেই এ রাজ্যে বিভেদ ছড়ানোর অভিযোগ তীব্র।
ভাগবত বলছেন, " মণিপুর এক দশক ধরে শান্ত ছিল কিন্তু সেখানে সংহতি বিনষ্ট হলো সংঘাত দেখা দিল। কারা এর পেছনে রয়েছে? শান্তির পদক্ষেপ নিতে চাইলেই কারা ঘৃণা এবং হিংসা ছড়াচ্ছে?"
'এক ভাষা এক দেশ এক ধর্ম' ভাবনায় বিশ্বাসী আরএসএস প্রধান জাতীয় সংহতির জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি উপাদানের উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, " মাতৃভূমির প্রতি ভক্তি পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং অভিন্ন সংস্কৃতি দেশকে এক রাখতে পারে।"
নাম না করেও মুসলিমদের লক্ষ্য করেই বলেছেন," বাইরে থেকে আসা ধর্মে বিশ্বাসীদেরও এই তিন উপাদানে আস্থা রাখতে হবে।"
Comments :0