Sujan Chakraborty at Purba Medinipur

দুর্নীতি স্পষ্ট রাজ্যের সর্বত্র, দেশে স্বৈরাচার: চক্রবর্তী

রাজ্য


তৃণমূলের যত বড় নেতা তত বড় চোর। মেয়ের নামে, স্ত্রীর নামে, বান্ধবীর নামে কোটি কোটি টাকা, সম্পত্তি রেখে দিয়ে এরা। তৃণমূল সংগঠিত অপরাধ করেছে। মঙ্গলবার তমলুকের কুলবেড়িয়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। 
চক্রবর্তীর ক্ষোভ, শুধু রেশন নয়, যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। বিরোধী নেতানেত্রীদের ফোন হ্যাক করা বিজেপি’র স্বৈরাচারী মনোভাবকে স্পষ্ট করছে। 
এদিন পার্টির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কেন্দ্রে একটি সভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি। সভার শেষে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যা কিছু দুর্নীতি চলছে এর সব কিছুই পরিচালনা করা হয়েছে কালীঘাট থেকে। মমতা ব্যানার্জি সবটাই জানেন। উনিই দায়ী এই সব কিছুর জন্য। মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন দশ কোটি মানুষকে রেশন দেন। পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যা সাড়ে নয় কোটির কাছাকাছি। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী কোন যোগ্যতায় বলেছিলেন ১০ কোটি মানুষকে রেশন দেন? আসল সত্যিটা হলো এ রাজ্যে সাত কোটির কিছু বেশি মানুষ রেশন দ্রব্য পায়। তাহলে বোঝা যাচ্ছে প্রতি সপ্তাহে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের নামে রেশন দ্রব্য চুরি করেছে তৃণমূল। 
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন, তাঁকে দিয়েই এই দুর্নীতি করানো হয়েছিল। এটা সম্মিলিত সংগঠিত অপরাধ। শুধু খাদ্য নয়, সমস্ত ক্ষেত্র, পৌর নিয়োগ, স্বাস্থ্য, পিএসসি, এসএসসি, টেট, প্রাইমারি, পঞ্চায়েত দপ্তর, সরকারি প্রকল্প, যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই দুর্নীতি আর লুট করেছে তৃণমূল।’’


ট্রাইব্যুনালের রায় দিয়েছে যে সিঙ্গুরে কারখানা না হওয়ার জন্য টাটা মোটর্সকে ক্ষতিপূরণের টাকা দেবে রাজ্য। এই প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার চলছে একজনের ঔদ্ধত্যে। সেজন্য রাজ্যবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রাজ্যে শিল্প ধ্বংস হয়েছে, যুবকের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে, টাটাকে সিঙ্গুর থেকে তুলে নরেন্দ্র মোদীর কাছে ভেট দেওয়া ছিল তৃণমূলের লক্ষ্য। রাজ্য সরকার ট্রাইবুনালে জিততেই চায়নি। যাতে বাংলার মানুষের স্বপ্নভঙ্গ হয় সেই কাজই করেছে তৃণমূল। এখন টাটাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এর দায় মমতা ব্যানার্জি, শুভেন্দু অধিকারী, রাজনাথ সিং-দের যৌথভাবেই নিতে হবে। কারণ এরাই সিঙ্গুর থেকে টাটাকে তাড়িয়েছে। এই শুভেন্দু অধিকারীরা সারদা মামলায় বাঁচতে রাজ্যের মানুষের ট্যাক্সের ১১ কোটি টাকা খরচ করেছে। তৃণমূল বিজেপি তাদের দলের তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ দিক। রাজ্যের মানুষের করের টাকায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া চলবে না।’’
সীতারাম ইয়েচুরি সহ দেশের বিরোধী নেতানেত্রীদের ফোন হ্যাক করার প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দেশের সরকার বিরোধী নেতানেত্রীদের ফোন হ্যাক করেছে। এ কোন দেশে বাস করছি আমরা? গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে না? সাংবিধানিক অধিকার প্রতি মুহূর্তেই ক্ষুণ্ণ হবে? ফোন নির্মাতা কোম্পানি ইমেইল করে জানাচ্ছে দেশের সরকার ফোন হ্যাক করছে। রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি, সুপ্রিয়া সুলে, অখিলেশ যাদব, মহুয়া মৈত্র সহ বিরোধী নেতানেত্রীদের ফোন হ্যাক করছে সরকার। বোঝা যাচ্ছে বিজেপি কত বড় অপরাধী। বিজেপি হ্যাকারদের সঙ্গে যুক্ত। কত বড় স্বৈরাচারী মনোভাব। দেশের মানুষের সঙ্গে এরা অন্যায় করছে প্রতি মুহূর্তে।’’

Comments :0

Login to leave a comment