Covid situation

আরও ৩ জনের মৃত্যু করোনায়, ‘সক্রিয়’ রোগী হাজার ছুঁইছুঁই

রাজ্য

কিছুদিন ম্রিয়মান থাকার পরে ফের ত্রাস ছড়াতে শুরু করেছে করোনা ভাইরাস। পশ্চিমবঙ্গে গত চব্বিশ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হলো করোনা আক্রান্ত হয়ে। রাজ্যে ‘সক্রিয়’ রোগীর সংখ্যা এই মুহূর্তে পৌঁছেছে প্রায় হাজারে। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০০’র কাছাকাছি। টেস্ট বাড়লে এই সংখ্যাও আরও বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। গত কুড়ি দিনে এই নিয়ে কোভিড আক্রান্ত ৭ জনের মৃত্যু হলো। প্রসঙ্গত, কোভিড পজিটিভ ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের শরীরে উপসর্গ স্পষ্ট, তাঁদেরই ‘অ্যাকটিভ’ বা ‘সক্রিয়’ রোগী হিসেবে চিহ্নিত করেন চিকিৎসকরা।
এরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে সঙ্কটজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন বহু কোভিড রোগী। যথেষ্ট টেস্ট না হওয়ায় রাজ্যে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা স্পষ্ট নয় এখনো। করোনার বিভিন্ন প্রজাতি ক্রমশ চরিত্র বদল করে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে বলে চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। তবুও এরাজ্যে বিধি পালনে রাশ আলগা; শুধু কয়েক দফা নির্দেশিকা জারি করেই ক্ষান্ত দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য প্রশাসন! এমন কি  নিয়মিত কোভিড বুলেটিন প্রকাশও বন্ধ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর।  
জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার খড়দহের বাসিন্দা আরতি দাস (৯২) করোনা আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিড-১৯’র উল্লেখ রয়েছে মৃতার ডেথ সার্টিফিকেটে। একই দিনে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে সুন্দরী ঘোষ (৯৩) নামে আরও একজন বৃদ্ধার। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাটুলিতে। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটেও মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিডের উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া এই হাসপাতালে বৃহস্পতিবারই মারা গিয়েছেন দমদমের বাসিন্দা সুবীর কুমার কর (৮০)। এক্ষেত্রেও কোভিডই মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে। তিনি নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। একই দিনে এভাবে ৩ জনের মৃত্যুর খবরে খানিকটা আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত ২০ দিনে এই নিয়ে কোভিড আক্রান্ত অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হওয়ায় প্রশাসনের আরও সক্রিয়তার দাবিও উঠেছে নানা মহলে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে যেটুকু খবর মিলছে তাতে জানা যাচ্ছে এই মুহূর্তে প্রায় ১ হাজার মানুষ ‘অ্যাকটিভ’ বা সক্রিয় কোভিড রোগী। দিন দুই আগের একটি পরিসংখ্যান বলছে, নতুন কেস এই সময়ে দৈনিক গড়ে প্রায় ১৭০ দাঁড়িয়েছে। তবে তা টেস্টের ওপর নির্ভর করবে বলে অভিমত চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে টেস্ট আরও বাড়লে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও ২০০ ছাড়িয়ে যাবে। তাঁরা বলছেন, এখন কোভিড ভাইরাসের নতুন প্রকরণ মিলছে। যেমন আর্কচুরাস নামে ভাইরাসটিকে নিয়ে চিন্তার কারণ রয়েছে। বহু রাজ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। সেসব রাজ্যে নিয়মিত যাতায়াত থাকায় এরাজ্যের মানুষের মধ্যেও তা ছড়াবে। তবে বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট বক্তব্য, কোন তথ্য গোপন না করে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে সঠিক পরিসংখ্যান সামনে নিয়ে আসা দরকার। মাস্ক পরার বিধিনিয়ম জোরদারভাবে আরোপ করতে হবে প্রশাসনকে। তবে শুধু নির্দেশিকা জারি করলেই কাজ হবে না। উৎসবে, পার্বণে মেলামেশায় নিজেদেরও সতর্ক থাকতে হবে মানুষকে।

Comments :0

Login to leave a comment