Dengue

ডেঙ্গু: প্রশাসন কতটা সচেতন? প্রশ্ন চিকিৎসকের

রাজ্য

Dengue

শীতের মুখেও ডেঙ্গুর আক্রমণ কমার লক্ষণ নেই। কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের সর্বত্র লাফিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম টানা দায়ী করে চলেছেন নাগরিকদের। শনিবারও তিনি বলেছেন, নাগরিকরা সচেতন না হলে পরিস্থিতি মোকাবিলা অসম্ভব। কিন্তু কর্পোরেশন এবং রাজ্য সরকার কতটা সচেতন সেই প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসকরা।
সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন এএইচএসডি’র পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক মানস গুমটার পালটা বক্তব্য, প্রথমে সচেতন হতে হবে সরকার এবং পৌরসভাকেই। গণশক্তি ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন হতে বললেই সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। সরকারকেও সচেতন হতে হবে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে যে জমা জল না রাখতে। কিন্তু শহরের বিভিন্ন জায়গায় জমা জল পরিষ্কার করার জন্য কেন পৌরসভা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না?’’ 
বছরের বিভিন্ন সময় পৌরসভার পক্ষ থেকে এলাকায় মশার তেল দেওয়া হতো। কিন্তু চলতি বছর সেই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না। তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু উঠতে শুরু করেছে। পৌরসভার এই গাফিলতি নিয়েও ক্ষোভ জনিয়েছেন চিকিৎসক মানস গুমটা। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় সব থেকে প্রয়োজনীয় হচ্ছে জনস্বাস্থ্য পরিষেবা। দরকার পৌরসভার নজরদারি। নিয়মিত প্রচার প্রয়োজন। কিন্তু তা হচ্ছে না।’’
পৌরসভার গাফিলতির পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়েও  প্রশ্ন তুলেছেন গুমটা। তাঁর কথায়, ‘‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। করোনা পরিস্থিতিতেই সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাব স্পষ্ট হয়েছে। সেই সময় পরিকাঠামো তৈরির কথা বলা হলেও তা হয়নি। কিন্তু কোভিড অজানা রোগ হলেও ডেঙ্গু আমাদের পরিচিত। তবু বহু হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক নেই, ডেঙ্গু পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই। প্লেটলেটের অভাব বার বার দেখা যাচ্ছে। গোটা রাজ্যের সব জায়গায় পর্যাপ্ত প্লেটলেটের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’’ 
ডেঙ্গু পরীক্ষার রিপোর্টে আসতে প্রায় ২৪ ঘন্টা সময় লাগছে। মানস গুমটার মতে একজন রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট আসা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘‘দেরিতে রিপোর্ট আসার ফলে চিকিৎসার সমস্যা হচ্ছে। ডেঙ্গু পরীক্ষার রিপোর্ট যদি দুই থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে হাতে চলে আসে তবে একজন রোগীর চিকিৎসায় সমস্যা কম হয়।’’ তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে প্রয়োজনে ডেঙ্গু মোকাবিলায় বিভিন্ন চকিৎসক সংগঠন যৌথভাবে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তৈরি।
প্রশাসনিক দুর্বলতার পাশাপাশি একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর কী করণীয় তা তিনি জানিয়েছেন। গুমটা বলেছেন, ‘‘বয়স্কদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। তার কারণ কো-মর্বিডিটি। জ্বর হলে রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। দরকার পর্যাপ্ত পরিমানে জল খাওয়া এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। রোগীর শরীরে জল কমে গেলে সমস্যা জটিল হয়।’’  
 

Comments :0

Login to leave a comment