Sandeshkhali Supreme Court

সন্দেশখালি সুপ্রিম কোর্টের নজরে তদন্ত চেয়ে মামলা

জাতীয় রাজ্য

সন্দেশখালির ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের আরজি জানিয়ে মামলা দায়ের হলো শীর্ষ আদালতে। মামলায় আবেদনকারী বলেছেন, সন্দেশখালিতে মহিলারা যে সমস্ত অভিযোগ জানিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তিন জন বিচারপতিকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হোক। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে শুক্রবার দায়ের হওয়া এই জনস্বার্থের মামলায় বলা হয়েছে, মণিপুরে জাতিদাঙ্গায় নজরদারিতে শীর্ষ আদালত যেমন তিন জন বিচারপতির কমিটি তৈরি করেছিল, সন্দেশখালির ক্ষেত্রেও তেমন একটি কমিটি তৈরি করা হোক। সন্দেশখালির ঘটনায় মহিলা কমিশন এবং তফসিলি কমিশনের প্রতিনিধিরা সেখানকার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা ঘটনার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। শীর্ষ আদালত সেখানকার ঘটনা নিয়ে সিবিআই’র সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিক। এদিকে এদিনই কলকাতা হাইকোর্টেও সন্দেশখালিতে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের হয়েছে। আইনজীবী সংযুক্তা সামন্ত এই মামলা দায়ের করে বলেছেন, সন্দেশখালিতে মহিলারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা সরাসরি বলছেন, সন্দেশখালিতে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই। এই অবস্থায় সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিসন বেঞ্চ মামলাটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে। 
এদিকে সন্দেশখালি সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তফসিলি জাতি ও আদিবাসীদের উপর হামলার ঘটনা রোধে রাজ্যে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপের  দাবি জানালো ন্যাশনাল কমিশন ফর সিডিউল কাস্ট (এনসিএসসি)। এদিন রাষ্ট্রপতির কাছে এনিয়ে ডেপুটেশন জমা দিয়েছে এনসিএসএসসি। সংগঠনের মুখপাত্র অরুণ হালদার জানান, সন্দেশখালি সহ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে তফসিলি ও আদিবাসীদের উপর নির্যাতন চলছে। রা‍‌জ্যের পুলিশ প্রশাসন তা রুখতে যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে না। হালদার জানান, রাষ্ট্রপতি এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে সন্দেশখালিতে শিশুদের উপর যে নির্যাতন চলছে, তা নিয়ে জেলাশাসককে তদন্ত চালিয়ে অবিলম্বে রিপোর্ট পেশের নোটিস পাঠালো ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস (এনসিপিসিআর)। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের কাছে সন্দেশখালিতে যেসব পরিবারকে জমি লুট করে উচ্ছেদ করেছেন তৃণমূল নেতারা, তাদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে কমিশন।      
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় ইডি’র আধিকারিকদের উপর হামলার পর ৪০ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এই সময়ের মধ্যে শাহজাহান তিন বার আগাম জামিনের জন্য আবেদন জানিয়েছিল। আদালত তিন বারই তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এর আগেই সন্দেশখালির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্টের দু’টি পৃথক বেঞ্চ। আগেই সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় এই মামলা রুজু করে মন্তব্য করেছেন, এখনই সেখানকার অবস্থা বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের উপযুক্ত সময় বলে মনে করছে আদালত। তিনি সন্দেশখালির পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে ‘আদালত বান্ধব’ হিসাবে নিয়োগ করেছেন। ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এই মামলার সঙ্গেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত সন্দেশখালিতে জারি করা ১৪৪ নম্বর ধারা বাতিল করে দিয়েছেন। বিচারপতি সেনগুপ্ত রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে বলেছেন, এই মামলা হালকা করে দেখবেন না। মামলায় যে সমস্ত অভিযোগ রয়েছে, তা মারাত্মক। বিচারপতি আরও বলেন, মামলায় যেসব গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তা দেখে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।

Comments :0

Login to leave a comment