HANNAN MOLLAH FARMER'S Rally

কৃষকরা পারলে অন্যরাও হারাতে পারবে মোদীকে, লড়াইয়ের আহ্বানে হান্নান মোল্লা

রাজ্য কলকাতা

HANNAN MOLLAH FARMERS Rally মঙ্গলবার কৃষক সমাবেশে বলছেন হান্না মোল্লা।

অনিন্দ্য হাজরা

দিল্লি ঘেরাও হয়েছিল। এবার ভারত ঘেরাও হবে। গোটা দেশের সামনে বিজেপির কৃষক এবং শ্রমিক বিরোধী চরিত্র তুলে ধরতে হবে। গোটা বিশ্ব সেই আন্দোলনের দিকে তাকিয়ে থাকবে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের কৃষিনীতির ফলে কৃষকরা ক্ষতিপ্রস্ত। 

নভেম্বরে প্রত্যেক রাজ্যে রাজভবন অভিযান এই ভাষাতেই ব্যাখ্যা করেছেন হান্নান মোল্লা। দিল্লিতে বছরভর কৃষক আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগঠক এই কৃষকনেতা বলেছেন, ‘‘কৃষক আন্দোলন দেশে আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। কৃষকরা পারলে অন্যরাও মোদীকে হারাতে পারবে। মোদী অপরাজেয়, এই মিথ ভেঙেছেন দেশের কৃষকরা। তিন কৃষি আইন বাতিল করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।’’ 

এদিন ধর্মতলায় পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার ডাকে সমাবেশে বলেছেন তিনি। 

তিনি বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার কৃষি আত্মহত্যা আড়াল করতে মিথ্যা কথা বলে। বলে পারিবারিক বিবাদে চাষি আত্মহত্যা করে। জঘন্য মিথ্যা।’’ সারা ভারত কৃষকসভার সভাপতি অশোক ধাওলে বলেছেন, ‘‘আমরা বাংলার জেলায় জেলায় গিয়েছি। লাল ঝান্ডার কর্মীদের তৃণমূল খুন করেছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। তারা এত আক্রমণ সত্ত্বেও লাল ঝান্ডা ছাড়েননি। সমস্ত জেলায় মানুষ তৈরি হচ্ছেন। এ রাজ্যের মত এত জঘন্য নির্বাচন দেশের কোথাও হয়নি। তার জবাব দিতে হবে। ’’ 

সংগঠনের সহসভাপতি হান্নান মোল্লার আহ্বান, ‘‘দিন বদল আনতে শ্রমিক কৃষকের ঐক্য গড়তে হবে। সেই কাজ শুরু হয়েছে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যে ২৬ তারিখ রাজভবন ঘেরাও হবে। আজ ৫০ হাজার কৃষক এসেছেন। ২৬ তারিখ আরও ব্যাপক জমায়েত করতে হবে। রাজ্যের সংযুক্ত কিষান মোর্চাকে জীবন্ত করতে হবে। কলকাতা অবরুদ্ধ হবে সেদিন। আঘাতের প্রত্যাঘাত করার লক্ষ্য নিয়ে সেদিন রাস্তার লড়াই হবে।’’

হান্নান মোল্লা বলেছেন, ‘‘সারা বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেললেও লাভ মেলে না কৃষকের। কৃষিনীতি কৃষকের কথা ভেবে হয়নি। পুঁজির মালিকদের স্বার্থ দেখা হয়েছে। কৃষককে কেন্দ্রে রেখে আইন তৈরির দাবি জানাচ্ছি। বাজারের ব্যবস্থা, গোডাউনের ব্যবস্থা করা, উৎপাদন খরচ কমানো, কৃষককের কৃষি উৎপাদনকে লাভজনক করা- কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে এগুলো করতে হবে।’’

হান্নান মোল্লা বলেছেন, ‘‘কৃষির সঙ্গে অন্য পণ্যের তুলনা হয়না। কৃষক অন্নদাতা। কৃষককে বাঁচানো প্রতি সরকারের কর্তব্য হওয়া উচিত। হয় না। সেটা যন্ত্রণার। জিন্দেগি ভর লোকসানে চলবে কৃষক, এটা চলতে পারে? কৃষি বীজের দাম বেড়েছে কোথাও হাজার গুণ। কৃষক ঋণ পায় না। খরা বন্যার জন্য বিমা নেই। পরিস্থিতি চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। কৃষিতে সব থেকে বেশি কর্মসংস্থান।কিন্তু তারজন্য সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।’’

মোল্লা বলেন, ‘‘সরকার চাইছে কৃষকের হাত থেকে কৃষি কেড়ে কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে। সরকার আইন আনুক। ফসলের ন্যূনতম দাম বেঁধে দিক। তার থেকে কম দামে কৃষকের থেকে ফসল কিনলে জেলের সংস্থান রাখতে হবে। নইলে কৃষক বাঁচবে না। ফসলের দেড়গুণ দাম সুনিশ্চিত করতে হবে।’’

প্রধানমন্ত্রীর হাজারো প্রতিশ্রুতির কড়া সমালোচনা করেন মোল্লা। তিনি বলেন, ‘‘মোদী তিনশোর বেশি জনসভায় কৃষি ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আয় দ্বিগুণের কথা বলেছিল। এতবড় মিথ্যাবাদী প্রধানমন্ত্রী এর আগে দেশ দেখেনি। কৃষকদের আন্দোলনের ফসল হচ্ছে ১০০ দিনের কাজ। আজ সেটাও তুলে দিতে চাইছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে হবে। চাষির ঘর নেই, জমি নেই, ফসলের দাম নেই। এই বঞ্চনা কতদিন চলবে?’’ 

অশোক ধাওয়ালে বলেন, ‘‘তেভাগার ঐতিহ্য গোটা দেশের সম্পদ। তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সামনে লোকসভা। দেশ বাঁচানোর লড়াই। শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র যুব, মহিলাদের পাশাপাশি লড়াই চালাবেন কৃষকরা। বাংলার গ্রামে গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় কৃষককর্মীরা যাবেন। নিবিড় প্রচার চালানো হবে। তৃণমূল বিজেপিকে রাজ্য থেকে উৎখাত করতে হবে। ফের গোটা পশ্চিমবঙ্গে লাল ঝান্ডা উড়বে।’’

Comments :0

Login to leave a comment