UDAYAN PRASAD MADHYAMIK

বাবা হোলটাইমার, মাধ্যমিকে থার্ড উদয়ন চায় জেলাতেই ডাক্তারি করতে

রাজ্য

বাবা উমেশ প্রসাদের সঙ্গে উদয়ন। (ভেতরে) বালুরঘাটে সিপিআই(এম) দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা দপ্তরে সম্বর্ধনা।

খুশির রেশ বালুরঘাটে। খুশির রেশ স্কুলে। ফল বেরনোর পর থেকেই ব্যস্ত উদয়ন। ব্যস্ত বাবা উমেশ প্রসাদও। 
বৃহস্পতিবার মাধ্যমিকের ফল ফল ঘোষণা হতেই উদয়ন জেনেছে তৃতীয় হওয়ার খবর। বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র স্কুলের ইউনিফর্ম পরে সকালেই গিয়েছে বালুরঘাটে, সিপিআই(এম) জেলা দপ্তরে। এখানেই কাজ করেন বাবা উমেশ প্রসাদ। সিপিআই(এম)’র সর্বক্ষণের কর্মী। 
সংবাদমাধ্যম উদয়নকে জিজ্ঞেস করেছে বাবা কী করেন? সে বলেছে, ‘‘বাবা সিপিআই(এম)’র হোলটাইমার।’’ 
খুশি উপচে পড়ছিল কমলেন্দু রায়ের গলায়। জেলা দপ্তরেই উমেশ প্রসাদের সহকর্মী, সহযোদ্ধা তিনি। ‘‘উমেশদার ছেলে ‘লেনিন’ থার্ড হয়েছে, সকালেই ঘুরে গিয়েছে।’’
জেলা দপ্তরেই একদফা সম্বর্ধনা দেওয়া হয়েছে উদয়নকে। বাইশে এপ্রিল জন্ম বলে সিপিআই(এম) জেলা দপ্তরে উদয়নকে ‘লেনিন’ নামে ডাকা হয়। তবে পাড়ায় সেটি তার ডাকনাম নয়, নিজেই জানালো উদয়ন।
উদয়ন পড়াশোনা করবে বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়েই। তারপর চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে। কেন? ‘‘আমাদের জেলা পিছিয়ে আছে। এখানে ডাক্তারের খুব অভাব। অনেক জায়গায় ডাক্তার নেই? আমি জেলাতেই ডাক্তারি করতে চাই।’’ 


দুপুরেও ছোট্ট বাড়িটায় পাড়া-পড়শি থেকে আসছেন শিক্ষকরা। বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উদয়ন আর উমেশ প্রসাদকে। মা গিয়েছেন মামাবাড়ি। 
উমেশ প্রসাদ বলছেন, ‘‘খুশির খবর। আমার না, সবাই সঙ্গে থেকেছে। পার্টি কমরেডরা, শিক্ষকরা ওকে বরাবর খুব সাহায্য করেছেন।’’
জেলা দপ্তরে সারাদিন তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও উদয়নের পড়াশোনায় পাশে থেকেছেন বাবা উমেশ প্রসাদই। বলছেন, ‘‘প্রি প্রাইমারি থেকেই ও পড়াশোনায় ভালো। নিজের আগ্রহেই পড়েছে। আমাকে পিছনে লেগে থাকতে হয়নি। সঙ্গে থেকেছি শুধু।’’
ছোট্ট ঘরে এদিন খুশির ঝলক। ব্যস্ততা দুপুরেও। তার মধ্যেও উদয়ন বলল, ‘‘পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়ার ওপর জোর দিয়েছি। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা খুব সাহায্য করেছেন। প্রাইভেটে যাঁদের কাছে পড়তাম, তাঁরাও সহায়তা করেছেন বরাবর।’’ তাঁর পরামর্শ, ‘‘পাঠ্যবই এমন করে পড়া উচিত যাতে সাজেশনের ভরসায় থাকতে না হয়।’’
বাবা সিপিআই(এম)’র সর্বক্ষণের কর্মী। বাবাকে নিয়ে, তাঁর কাজ নিয়ে কী মনে হয়?
উদয়নের ছোট্ট জবাব, ‘‘সব কাজই বড়। বাবা যে কাজকে ঠিক মনে করেছেন করছেন। উনি নিজের কাজই করবেন।’’

Comments :0

Login to leave a comment