পরপর তিন বছর আর্থিক বৃদ্ধিতে বড় সব অর্থনীতির মধ্যে দ্রুততম। এই তথ্যে বাস্তব ধরা পড়ছে কতটা। মাথাপিছু আয়ের তুলনামূলক তথ্যে উঠছে এই প্রশ্ন।
মাথাপিছু আয়ের বিচারে বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে সবচেয়ে নিচে ভারত। সব অর্থনীতি হিসেবে এলেও কেন্দ্রের আসীন বিজেপি সরকারের পক্ষে তথ্য অস্বস্তিকর। আফ্রিকার অ্যাঙ্গোলা বা আইভরি কোস্টের চেয়েও মাথাপিছু আয় কম।
জনসংখ্যায় চীনকে টপকে যাচ্ছে ভারত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই তথ্য প্রকাশ পেতেই আলোচনা রয়েছে বহু অংশেই। চীন এবং ভারতের তুলনামূলক বিশ্লেষণও রয়েছে আলোচনায়।
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মন্তব্য, ‘‘বৃহৎ সব অর্থনীতির মধ্যে ভারতের বৃদ্ধির হার দ্রুততম, ঠিক। কিন্তু মাথাপিছু আয়ে এই দেশগুলির মধ্যে একেবারে নিচে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘উৎপাদন কমে গিয়েছিল বলে এখন বৃদ্ধির হার অঙ্কের হিসেবে বেশি। কেবল অঙ্কের হিসেব আসলে বাস্তবতা সম্পর্কে ধন্দ তৈরি করছে।’’
আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার বা আইএমএফ’র তথ্য অনুযায়ী ২০২১ থেকে বৃদ্ধির হার বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২১’এ হার ছিল ৯.১ শতাংশ, ২০২২’এ ৬.৮ শতাংশ এবং ২০১৩’এ ৫.৯ শতাংশ। কিন্তু এই তথ্যে বলা হচ্ছে না যে কোভিডের বছর, ২০২০’তে ভারতের মোট জাতীয় উৎপাদন কমে গিয়েছিল। হ্রাসের হার ছিল ৫.৮ শতাংশ, অন্য বড় দেশের তুলনায় বেশি ছিল।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরের বছরে উৎপাদন বাড়তেই শতাংশের বিচারে বৃদ্ধির অঙ্ক লাফিয়ে বেড়েছে। অর্থনীতির পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘বেস এফেক্ট’। কিন্তু ফারাক বোঝা যাবে অর্থনীতির আয়তনের দিকে তাকালে। বোঝা যাবে মাথাপিছু আয়ের তুলনা করলে।
ভারতের অর্থনীতিতে যোগ করেছে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার। এক বিলিয়নে একশো কোটি। চীন যোগ করেছে ১২৭৪ বিলিয়ন ডলার। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যোগ করেছে ১৩৯০ বিলিয়ন ডলার। অথচ ২০২৩-এ বৃদ্ধি হারের বিচারে ভারত ৫.৯ শতাংশ। চীন ৫.২ শতাংশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১.৬ শতাংশ। অন্য তুলনায় দেখা যাচ্ছে চীনের অর্থনীতির আয়তম ভারতের পাঁচগুন। চীনে গড়ে মাথাপিছু আয় ভারতের ৫.৪ গুন।
অর্থনীতিবিদ এবং সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য টমাস আইজাকের ব্যাখ্যা, ‘‘জনসংখ্যায় চীনকে টপকে গিয়ে আনন্দের কিছু নেই। চ্যালেঞ্জ হলো মাথাপিছু আয়ে এগনো। বিশ্বে মাথাপিছু আয়ের ক্রম তালিকায় চীন ৬৩ নম্বরে। ভারত ১৪৭-এ।’’
Comments :0