Hannan Mollah

২৬ জানুয়ারি দেশজুড়ে রাজপথে নামবেন কৃষকরা: ঘোষণা হান্নান মোল্লার

রাজ্য জেলা

 চিন্মর কর- পশ্চিম মেদিনীপুর 
‘‘নিজেকে দেশের সর্বকালের সেরা মিথ্যাবাদী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রমাণিত করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি দেশের কৃষকদের সাথে প্রতারণা করেছেন, প্রতারণা করেছেন শ্রমজীবী মানুষ ও শিক্ষিত বেকার যুব সমাজের সঙ্গেও। কৃষকরা ভিক্ষা চায় না, ফসলের ন্যায্য দাম চায়।’’ 
মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরে এই ভাষাতেই সরব হলেন কৃষক আন্দোলনের নেতা হান্নান মোল্লা। প্রয়াত দুই কৃষকনেতার স্মরণসভায় তিনি বলেছেন, ‘‘ফসলের ন্যায্য দাম কৃষকরা পাবেন না কেন? কৃষি প্রধান ভারতে কৃষক না বাঁচলে অর্থনীতি, শিল্প সব কিছুই মুখ থুবড়ে পড়বে।’’ তাঁর আহ্বান, ‘‘গণআন্দোলন প্রসারিত করে সমস্ত ধরনের প্রতিবাদী ও বঞ্চিত মানুষ ও সংগঠনকে একসঙ্গে আন্দোলনে শামিল করতে হবে।’’ ২৬ জানুয়ারি দেশজুড়ে কৃষক আন্দোলনের ডাক মনে করিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরে বিদ্যাসাগর হলে সারা ভারত কৃষক সভার দুই নেতা কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্ত ও কমরেড নির্মল ঘোষের স্মরণ সভা হয়েছে। সংগঠনের সহসভাপতি হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘এই কাজ করার মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের প্রয়াত কমরেডদের প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে পারব।’’ 
সংগঠনের জেলা কমিটির ডাকে এই স্মরণ সভায় হান্নান মোলা সহ বক্তব্য রাখেন রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার, দীপক সরকার, তরুণ রায়, সুশান্ত ঘোষ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি সুভাষ দে। বক্তব্য রাখেন জেলা সম্পাদক মেঘনাদ ভূঁইয়া।
কেন্দ্র সরকারের মানুষমারা নীতির তীব্র সমালোচনা করে হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী আড়াই পৃষ্ঠা জুড়ে যেসব প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন তা চেয়ারে বসার পর ভুলে গিয়েছেন। বিজেপি ও  কর্পোরেটের যোগ বিভাজন ও সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিকে পুষ্ট করছে। আমরা কৃষক শ্রমজীবী মানুষ সেই নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরে হিসাব নেব রাজপথ দখল করে। কৃষক সমাজ ও শ্রমজীবী মানুষ আজ দেশ বাঁচাতে, সংবিধান বাঁচাতে, রুটি রুজির জন্য বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে।’’ 
হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘আগামী ২৬ জানুয়ারী লালকেল্লায় যখন প্রধানমন্ত্রী প্যারেড উপভোগ করবেন তখন দেশজুড়ে জেলায় জেলায় কৃষকরা তাঁদের কৃষি যন্ত্র ও উপকরণ নিয়ে দেশ ও দেশের মানুষ রক্ষা করতে রাজপথ দখল করে প্যারেড করবে। মোদী কৃষক ভিত্তিক কৃষিকে আক্রমণ করে কালা আইন কার্যকর করে কর্পারেট ভিত্তিক কৃষি নীতি কার্যকর করার জন্য এখনেও সচেষ্ট।’’
তিনি বলেন, দেশে কৃষক আন্দোলন হয়েছে টানা ৩৮৪ দিন। শহীদ হয়েছেন ৭৫০ জন। প্রতিবছর কৃষির ঋণের চাপে এবং ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে হাজার কৃষকের আত্মহত্যায় বিজেপি সরকার ও তার প্রধানমন্ত্রী নীরব।
অমল হালদার বলেন, ‘‘প্রয়াত দুই কৃষক নেতার বিত্তবান পরিবারে জন্ম। তবুও সম্পত্তি মোহ ত্যাগ করে পাঁচ ও ছয়ের দশকে খাদ্য আন্দোলন থেকে জমির আন্দোলন, মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন সহ সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে, পিছিয়ে পড়া, অনগ্রসর জনজাতির মানুষকে সংগঠিত করে শ্রেণির আন্দোলন বিস্তার করেছিলেন।’’ 
তিনি বলেন, ‘‘বামপন্থী মতাদর্শকে হাতিয়ার করে গরিব মানুষের স্বার্থে  প্রকল্প রূপায়নে দিশা দেখিয়ে গেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসাবে কমরেড হরেকৃষ্ণ সামন্ত। রুক্ষ বনভূমিকে কাজে লাগিয়ে এলাকার মানুষকে স্বনির্ভর করা সহ স্বাক্ষরতা আন্দোলনকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও বিস্তার ঘটানোর ক্ষেত্রেও প্রয়াত দুই কমরেডের ভূমিকা ছিলো অগ্রণী।’’
 

Comments :0

Login to leave a comment