মালবাজারের তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে জয়ী হয়েছেন আলেমা বানু। বামফ্রন্ট সমর্থিত এই নির্দল প্রার্থী জয়ের আনন্দ করতে পারেননি। বুধবারই তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিয়ে যেতে হয়েছে হাসপাতালে (দেখুন ভিডিও)।
ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে। সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের করলা ভ্যালি ১৮/২৫ পঞ্চায়েতের আসনে জয়ী রুবিনা মুন্ডার বাড়িতে অনেক রাত পর্যন্ত চলে আক্রমণ। বারবার পুলিশকে বলা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এমনই ছবি। আর বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘‘বিক্ষিপ্ত ঘটনা হয়েছে কয়েকটি জায়গায়। সত্তর হাজার বুথের মধ্যে কয়েকটিতে হয়েছে গন্ডগোল।’’ হিংসা বন্ধ করার আবেদন জানানো দূর, উলটে বলেছেন, যে যে জায়গায় গণ্ডগোল হয়েছে সেখানে গত কুড়ি-পঁচিশ বছর ধরেই এমন হচ্ছে। ডোমকল বা ভাঙড়ের মতো এমন এলাকায় জয়ী হয়েছে বিরোধীরা।’’
বিরোধীরা জয়ী হয় যেখানে, সেখানেই সন্ত্রাস চলছে কেন রাজ্যবাসী জানেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের খুনে আক্রমণের দায় নেওয়ার সামান্য প্রয়াসও দেখাননি মুখ্যমন্ত্রী।
লক্ষ্যণীয় মানুষের রায়ে হেরে জয়ী বিরোধীদের- বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং নির্দল প্রার্থী এবং সমর্থকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে তৃণমূলের বাহিনী।
হামলার বিবরণ দিতে গিয়ে আলেমা বানু বলেছেন, ‘‘পরপর ঢিল মেরেছে। পাথরে পাথর করে দিয়েছে বাড়ি।’’
তখন রক্তে ভিজে রয়েছে তাঁর শাড়ি। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
রাজগঞ্জ ব্লকের মাঝিয়ালী গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ১৮/১০৭ বুথের জয়ী সিপিআই(এম)এর পঞ্চায়েত সবেজা বেগম এর বাড়িতে রাত পর্যন্ত চলে আক্রমণ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপরও আক্রমণ নামিয়ে আনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে চলে বাড়ি ভাঙচুর। নির্বাচন কমিশনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন।
মঙ্গলবার মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের গণনা কেন্দ্রে যখন ভোটের ফলাফল গণনা চলছে সেই সময় গণনা কেন্দ্রের বাইরে ৩১ নং জাতীয় সড়কের পাশেই কংগ্রেস কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেই অভিযোগ উঠেছে। আকবর আলি নামে ওই কংগ্রেস কর্মীকে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা কিল ঘুসি চড় মারছে।
প্রসঙ্গত আকবর আলি তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কংগ্রেসের কর্মী বলেই পরিচিত। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা ১০ নম্বর আসনে প্রার্থী ওয়ারেসুল আম্বিয়ার বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার কাজ করেছিলেন।
আলেমা বানু ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস।
রক্তাক্ত হন নির্দল প্রার্থী আলেমা বানু, তাঁর মেয়ে এবং পরিবারের অন্যরা। মাথায় চোট লাগে পরিবারের এক সদস্যের।
ঘটনাস্থলে যায় মালবাজার থানার পুলিশ। আহতদের মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কয়েকজনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
Comments :0