Trinamool is behind RSS: Salim

‘আইপ্যাক’ নয়, তৃণমূলের পিছন আছে আরএসএস: সেলিম

জেলা

সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা ২৩তম জেলা সম্মেলনে লাভা নৃত্য। ছবি: দিলীপ সেন

শাসকদলের নেতারাই বলছেন, টাকা নিয়ে তৃণমূল নেতা থেকে এমএলএ, এমপি ঠিক করা হয়। কিন্তু এত টাকা আসছে কোথা থেকে? প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, নোটবন্দির পর ২০ হাজার টাকার বেশি  লেনদেন করা যাবে না। তাহলে মন্ত্রীদের খাটের তলা থেকে কোটি কোটি টাকা বের হচ্ছে কী করে? তৃণমূলের মন্ত্রী থেকে পঞ্চায়েত প্রধানদের কাছে এত টাকা আসছে কী করে? রাজ্যের গরিব মানুষের টাকা লুট করে তৃণমূলের নেতাদের কাছে জমা হচ্ছে। সোমবার সিপিআই(এম) কোচবিহার জেলা ২৩তম জেলা সম্মেলনে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘আইপ্যাক’ নয়, তৃণমূলকে পিছন থেকে পরিচালনা করছে আরএসএস। আসলে আরএসএস-ই ওদের দলের সবকিছু ঠিক করে দেয়। অন্য দলের কথা বলতে পারব না, সিপিআই(এম)’র ‘আইপ্যাক’ বা ‘আইটি সেল’-র প্রয়োজন হয় না। আমাদের পার্টির বিভিন্ন স্তরের সম্মেলন হচ্ছে। আমরা সেখানেই সিদ্ধান্ত নেই। 
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এদিন মহম্মদ সেলিম বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে বামফ্রন্ট যখন গ্রাম পঞ্চায়েত, পৌরসভা কিংবা জেলা পরিষদে ছিল, তখন  জনকল্যাণের কাজই করা হতো। আর এই সময়কালে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু তা পূরণ করেনি। তাই নতুন উদ্যমে আজ বামপন্থার পুনর্জাগরণ হচ্ছে। 
তিনি বলেন, কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের মানুষ উন্নয়নের প্রশ্নে, কাজের প্রশ্নে, কৃষকদের ফসলের দামের প্রশ্নে খুব বিপদে আছেন। আদিবাসী, তফসিলি, রাজবংশীদের মতো নির্দিষ্ট অংশের মানুষদের জাতিসত্তার নামে ভাগ করা হচ্ছে। এই বিপদ থেকে মানুষকে একমাত্র উদ্ধার করতে পারে লাল ঝান্ডাই।
শিলিগুড়িকে রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী করার প্রস্তাব প্রসঙ্গে দিন মহম্মদ সেলিম বলেন, ৬ মাস পর পর বিজেপি নানা ইস্যু তুলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কোথায় জনমত তৈরি হলো? কোন সমীক্ষায় এই জনমত তৈরি হলো? সেটা আগে জানা প্রয়োজন। এর আগেও উত্তরবঙ্গ সহ পাহাড়কে আলাদা করার জন্য অনেক মন্তব্য করে হাওয়া গরম করার চেষ্টা হয়েছে। এটাও তারই অঙ্গ।
সীমান্ত নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বিএসএফ এখন আরও বেশি পুলিশিরাজ কায়েম করেছে। বিএসএফ’র কাজ সীমান্তকে সুরক্ষা রাখা। সেটাই ঠিকমতো হচ্ছে না। বিএসএফ বর্ডার ম্যানেজমেন্ট করছে না। বিএসএফ অনুপ্রবেশ আটকাতে পারছে, পাচারও আটকাতে পারছে না। আবার কৃষকদের জমিতে পাট, ভুট্টা, গম সহ বিভিন্ন লম্বা ফসল চাষ করতে দিচ্ছে না। বিএসএফ’র জন্ম হয়েছিল সীমানা সুরক্ষার জন্য। এখন তারা সীমান্তের গ্রামবাসীদের ওপর জুলুম করছে। আগে থেকেই সীমান্তের জেলাগুলিতে জেলা পুলিশ সুপার ও বিএসএফের কমাড্যান্ট এবং এমএলএ, সাংসদদের নিয়ে যৌথ কমিটি আছে। এখন এমএলএ, এমপিরা সব অপদার্থ। এরাও কোনও কাজ করছে না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বছরে এই যৌথ কমিটি কটা বৈঠক করে? কেন সীমান্তের মানুষের কথা তাদের অভিযোগের কথা শোনা হচ্ছে না? এর জবাব তো বিএসএফ’র কমান্ড্যান্ট ও এসপি-দের দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, সীমান্তের স্থল বাণিজ্যকেন্দ্রগুলির ব্যবসা দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে। চ্যাংরাবান্ধা স্থল বাণিজ্যকেন্দ্র ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। ওদেশের মৌলবাদীরাই হোক কিংবা এদেশের সরকার সীমান্তে এমন উত্তেজনা তৈরি করছে যে সীমান্ত বাণিজ্যের বারোটা বেজে যাচ্ছে। অন্যদিকে, অবৈধ বাণিজ্য বাড়ছে। আর এতে তৃণমুল ও বিজেপি’র মদত রয়েছে। রাজ্যের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বিএসএফ’র সমন্বয়েরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে মহম্মদ সেলিম মন্তব্য করেন।

Comments :0

Login to leave a comment