PATNA OPPOSITION MEET

ঘৃণার রাজনীতি রুখতে সমন্বয়ের লক্ষ্য ঘোষণা পাটনার বিরোধী বৈঠকে

জাতীয়

PATNA OPPOSITION MEET ছবি টুইটার থেকে।

বিজেপি বিরোধী অভিন্ন বক্তব্য নির্দিষ্ট করে দেশজুড়ে প্রচারের লক্ষ্য ঠিক করল ১৬টি বিরোধী দল। বিজেপি’র বিভেদ আর বিদ্বেষের রাজনীতিতে দেশ ভাঙছে। দেশ বাঁচাতে পারস্পরিক সমন্বয় রেখে চলার লক্ষ্যও জানিয়েছেন বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব। 

শুক্রবার পাটনায় এই বৈঠক হয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী এবং জনতা দল (ইউ) নেতা নীতীশ কুমারের আহ্বানে। যোগ দেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে, দলের নেতা রাহুল গান্ধী। সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই’র সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, আম আদমি পার্টির দুই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও ভগওয়ান্ত মান, শিবসেনার নিজের গোষ্ঠীর নেতা উদ্ধব থ্যাকারে অংশ নেন বৈঠকে। 

খারগে জানান ফের বৈঠক হবে জুলাইয়ের ১০ বা ১২ তারিখ, হিমাচল প্রদেশের সিমলায়। এদিন বৈঠকে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও। এনসিপি, আরজেডি, পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতি, ন্যশনাল কংগ্রেস নেতা ওমর আবদুল্লা ও যোগ দেন বৈঠকে। ডিএমকে, জেএমএম নেতৃত্ব যোগ দেন বৈঠকে। 

ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের চরিত্র অক্ষুণ্ণ রাখা। তার জন্যই এই বৈঠক। আমাদের দেশের চরিত্র হলো ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র। এই চরিত্র বদলে ফ্যাসিবাদী হিন্দুরাষ্ট্র করতে চাইছে বিজেপি-আরএসএস। তাকে রুখতে হবে।’’

বৈঠক শেষে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘লড়াইটা হচ্ছে মতাদর্শের। আমাদের সকলের মধ্যে রাজনৈতিক পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু বিচারবোধের দিক থেকে অভিন্ন অবস্থানের জায়গা রয়েছে। তা নিয়েই আমরা একসঙ্গে লড়াই করব।’ আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ বলেন ‘আমাদের দেশের মানুষ চান যেন আমরা বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াই করি।’

শুক্রবার সকাল ১১ টায় বৈঠক শুরু হয় চলে দুপুর ৩.৩০ পর্যন্ত। নীতীশ কুমার বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীরা আলোচনা করে একটা ঐকমত্যে আসা সম্ভব হয়েছে। যা অত্যন্ত ইতিবাচক। হিমাচল প্রদেশে পরবর্তী বৈঠকে আরও বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।’ 

মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে। আমরা একজোট আছি। একসঙ্গে লড়াই হবে। আমাদের কেবল বিরোধী নই, এ দেশের নাগরিক।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপি একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে।’’ 

জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, ‘‘গান্ধীর ভারতকে গডসের ভারত হতে দেব না।’’

নীতীশের আহ্বানে এই বৈঠকের আগে দিল্লি জাতীয় স্তরে একাধিক আলোচনা হয়েছে। যার অন্যতম রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলির বৈঠক। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশোবন্ত সিং’কে প্রার্থী করা হয় মমতা ব্যানার্জির প্রস্তাব মেনে। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী বোঝাপড়ায় থাকেনি তৃণমূল। বিজেপি’র প্রার্থী জগদীপ ধনকরের বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। নিজের কোনও সুযোগ না থাকলেও উত্তর পূর্বে মেঘালয় এবং ত্রিপুরায় গোড়া থেকে বিজেপি বিরোধী শক্তির উলটো অবস্থান নিয়েছে তৃণমূল। গোয়াতে দলের একই ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। 

এদিন সংবাদমাধ্যমে মমতা ব্যানার্জির অবস্থানের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিআই(এম)। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী বলেছেন, ‘‘সংসদে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরোধিতা থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখছে তৃণমূল। রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী ভোট কাটার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিজেপি’র চালিকা শক্তি আরএসএস’র বিরুদ্ধে কোনোদিন মমতা ব্যানার্জিকে একটি কথা বলতে শোনা যায়নি। বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।’’ লাহিড়ী বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখছে সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা।’’

Comments :0

Login to leave a comment