PROBANDHA / TAPAN KUMAR BAIRAGAYA / P C ROY / MUKTADHARA / 20 NOVEMBER / 3rd YEAR

প্রবন্ধ / তপন কুমার বৈরাগ্য / ভারত নারীর বিশ্বজয় / মুক্তধারা / ২০ নভেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩

সাহিত্যের পাতা

PROBANDHA  TAPAN KUMAR BAIRAGAYA  P C ROY  MUKTADHARA  20 NOVEMBER  3rd YEAR

প্রবন্ধ 

 

মুক্তধারা 

প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ইচ্ছাশক্তি
 

তপন কুমার বৈরাগ্য

২০ নভেম্বর ২০২৫, বর্ষ ৩

১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে যিনি মারকিউরাস নাইট্রেট আবিষ্কার করে সারা পৃথিবীজুড়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন, যেটি একটা যোগিক পদার্থ। পারদের একটা যৌগ।যাকে সাধারণ ভাষায় রস সিন্দুর বলে।
তার আবিষ্কারক হলেন ভারতীয় বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্র রায়।যার চরিত্রের  মূলকথা ছিল ইচ্ছাই হলো জীবনের মূলকথা।এই ইচ্ছাশক্তি ছিলো বলেই,তিনি মাত্র সাতশো টাকা মূলধন নিয়ে বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস নামক যাদবপুরে একটা রসায়ন শিল্পের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।তারপর একদিন তিনি একে অনেক অনেক বড় করে গড়ে তোলেন। 
১৮৮৮খ্রিস্টাব্দে প্রফুল্লচন্দ্র রায় ইংল্যান্ড থেকে বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে দেশে ফিরেছেন।ইংল্যান্ডে থাকার সময় ইংরেজ ছাত্রদের কাছ থেকে ভারতীয় বলে তাকে অনেক  কটূক্তি শুনতে হয়েছিল।তিনি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন দেশে ফিরে তিনি
চিরদিনের জন্য সাহেবী পোশাক ত্যাগ করে স্বদেশের পোশাক পরবেন। ১৮৮৮খ্রিস্টাব্দে তিনি বিদেশি পোশাক ত্যাগ করে সেই যে স্বদেশি পোশাক পরলেন,আর কোনোদিন তিনি তার সেই পোশাক ত্যাগ করেন নি।এমনই ছিল তার ইচ্ছাশক্তি ।
প্রফুল্লচন্দ্র তখন স্কটল্যান্ডে এডিনবার্গে আছেন।এই এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  একটা বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হল। এই পরীক্ষায় পাশ করলে বিনা পয়সায় পড়াশুনা করার সুযোগ পাবে।তবে এই পরীক্ষায় বসতে গেলে বেশ কিছু শর্ত মেনে 
পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে।তাকে ইংরেজি ছাড়াও লাতিন, গ্রিক,সংস্কৃত,ফরাসি,জার্মান ভাষা জানতে হবে।পরীক্ষার তখনো মাসখানেক দেরী ছিলো।প্রফুল্লচন্দ্র তখন ইংরেজি, বাংলা এবং সংস্কৃত জানতেন।তিনি তার ইচ্ছেশক্তি  নিয়ে
একমাসের মধ্যে এই সব ভাষাগুলো শিখে নিলেন।তারপর বৃত্তি পরীক্ষায় বসলেন।তিনি বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম হলেন। এরপর থেকে বিনা পয়সায় তিনি সারাজীবন পড়াশুনার সুযোগ পেলেন। প্রফুল্লচন্দ্রের কাছ থেকে আমরা শিক্ষা লাভ
করলাম ইচ্ছাশক্তি সব কিছুর জয়ের মূলে। প্রফুল্লচন্দ্র তখন বি.এ পড়েন। তার পিতা হরিশচন্দ্র রায় নিজের খরচে সংস্কৃত এবং ইংরাজি অভিধান ছাপিয়েছেন।কিন্তু সেগুলো বিক্রি হলো না।এজন্য হরিশচন্দ্র খুব ভেঙ্গে পড়লেন।পিতার মনের
কথা পুত্র বুঝতে পারলেন। পিতার মনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি পিতার বইগুলো সুন্দর করে বাঁধালেন।তারপর কাগজে বিজ্ঞাপন দিলেন।এতো সুন্দর বই বাইন্ডিং দেখে এবং বিজ্ঞাপন দেখে হুড়হুড় করে বইগুলো বিক্রি হয়ে গেল।হরিশচন্দ্রের সে কি
আনন্দ।পুত্রকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।প্রফুল্লচন্দ্র তার ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে যে কোন বিষয়কে জয় করবার ক্ষমতা রাখতেন। এই আত্মত্যাগী ভারতীয় মহানবিজ্ঞানী পরলোক গমন করেন ১৬ইজুন১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে। 

Comments :0

Login to leave a comment