VIJAYAN RAM MANDIR

বৈচিত্র, বহুত্বকে রক্ষায় আত্মনিয়োগের সময়, রামমন্দির প্রতিক্রিয়ায় বিজয়ন

জাতীয়

ভাষা, ধর্ম, আঞ্চলিক বৈচিত্র নির্বিশেষে ভ্রাতৃত্ব ও সংহতি দৃঢ় করার জন্য আত্মনিয়োগ করতে হবে। বহুত্ব এবং বৈচিত্রের ধারণাকে বিকশিত করেই ভারত সমৃদ্ধ হয়েছে। 

সোমবার দুপুরে ভিডিওবার্তায় এইআহ্বান জানিয়েছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য পিনারাই বিজয়ন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে দেশের সংবিধান কোনও একটি ধর্ম বা ভাষা বা অঞ্চলের প্রাধান্যকে স্বীকৃতি দেয়নি। বরং স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় থেকে সব বৈচিত্রের সম বিকাশকেই স্বীকৃতি দিয়েছে।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন জানিয়েছেন সংবিধানের শপথ নিয়ে সাংবিধানিক পদে আসীন হয়ে কোনও একটি ধর্মকে প্রাধান্য দেওয়া চলে না। সংবিধানের সেই নির্দেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি বদ্ধ থেকেই রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। 

এদিনই দুপুরে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনে পুরোহিতদের সরিয়ে ধর্মীয় রীতি ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ পর্বের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘ ভাষণও দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে ভাষণ দিয়েছেন বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির ভিত্তি সংগঠন আরএসএস’র প্রধান মোহন ভাগবত। ধর্মের নামে রাজনৈতিক কর্মসূচির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এদিনের কার্যক্রমে। 

সেই সময়ই বিজয়ন বলেছেন, ‘‘ধর্মনিরপেক্ষতাই ভারতীয় গণতন্ত্রের মর্মবস্তু। স্বাধীনতার লড়াইয়ে জাতীয় সংগ্রামের প্রথম দিন থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাই ভারতের পরিচিতি হয়ে থেকেছে। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী বা কোনও ধর্মে বিশ্বাস করেন না এমন বহু মানুষও যোগ দিয়েছেন স্বাধীনতা সংগ্রামে। 

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রাম থেকে আরএসএস কেবল দূরে সরে থাকেনি। বরং, সেই সংগ্রামকে দুর্বল করার চেষ্টা চালিয়েছে দেশের ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের বিভেদে মদত দিয়ে। ব্রিটিশকে প্রধান শত্রু হিসেবেও চিহ্নিত করেনি। 

বিজয়ন বলেছেন, ‘‘এই দেশ সব ধর্মের মানুষের। ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয়। সংবিধান প্রত্যেককে নিজে নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে। সাংবিধানিক পদে আসীন প্রত্যেকের দায়িত্ব এই নির্দেশ পালনে সচেষ্ট থাকা।’’ 

আজকের পরিস্থিতিতে খেদ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে ধর্ম এবং রাষ্ট্রের মধ্যে নিজস্ব সীমারেখা রয়েছে। কিন্তু সেই ব্যবধান ক্রমশ মুছে ফেলা হচ্ছে। সংবিধানে আসীন ব্যক্তিরা যেভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান দায়িত্বনির্বাহী হয়ে উঠছেন তাতে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতার চরিত্র বড় প্রশ্নের মুখে পড়ছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান হিসেবে পালন করা হচ্ছে।’’ 

বিজয়ন বলেছেন, ‘‘ভারতের বিকাশিত হবে বিজ্ঞানসম্মত চেতনা, মানবতা, অনুসন্ধিৎসু চিন্তার হাত ধরে।’’  

Comments :0

Login to leave a comment