Road Accident In Maheshtala

মহেশতলায় বিধায়ক ও কাউন্সিলরকে ঘিরে বিক্ষোভ

রাজ্য


অনিল  কুণ্ডু : মহেশতলা


মহেশতলায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত দুই কিশোরের বাড়িতে ঢুকতেই পারলেন না মহেশতলার তৃণমূল বিধায়ক তথা পৌরসভার চেয়ারম্যান দুলাল চন্দ্র দাস। সতীর্থ তথা পৌরসভার দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার চন্দননগর লালপোল এলাকায় দুর্ঘটনায় মৃতদের বাড়িতে ঢুকতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদেরকে বাধা দেয়। তাঁদেরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। এমনকি বিধায়ক ও সতীর্থ কাউন্সিলরদের ধাক্কাধাক্কি, হেনস্থা করেন বিক্ষোভকারী সাধারণ মানুষ। অভিযোগ, ভেঙে দেওয়া হয় বিধায়কের গাড়ির কাঁচ। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় মহেশতলা থানার পুলিশ তাঁদেরকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। 
পথ দুর্ঘটনায় দুই কিশোরের মৃত্যু হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় মানুষেরা। বুধবার বিকালে দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের চন্দননগরে দুর্ঘটনাস্থলে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। এমনকি পুলিশকে মৃতদেহ তুলতেও বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের এই ক্ষোভের আগুনে ঘি দিয়েছেন বিধায়ক তথা পৌরসভার চেয়ারম্যান দুলাল চন্দ্র দাস। এমনটাই এদিন জানালেন বিক্ষোভকারী স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর পথ অবরোধ, বিক্ষোভ হওয়ায় বিক্ষোভকারীদের ‘দালাল’ বলে অভিহিত করেছেন বিধায়ক। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে দুলাল চন্দ্র দাস বলেছেন, দালালরা অবরোধ, বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়েছেন মহেশতলার চন্দননগর লালপোল এলাকার সাধারণ মানুষ। 
এদিকে এই ঘটনায় সিপিআই(এম) দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী শুক্রবার এক প্রতিক্রীয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, বেহাল বজবজ ট্রাঙ্ক রোড সংস্কার নিয়ে মিথ্যাচার করছে। ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ বলে দাবি করে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি দিয়ে প্রচার করেছে। গত এক বছরেও কাজ হয়নি। কোথায় গেল বরাদ্দ ৫২ কোটি টাকা। অবিলম্বে বেহাল বজবজ ট্রাঙ্ক রোড সংস্কার করতে হবে। এই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করায় সিপিআই(এম) কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তিনি এদিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত বেহাল রাস্তা মেরামত করা না হলে সিপিআই(এম) সাধারণ মানুষকে নিয়ে তীব্র আন্দোলন করবে। পথ দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।


এদিনের ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, এদিন বেলা ১১ টা নাগাদ দুলাল চন্দ্র দাস পৌরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে পথ দুর্ঘটনায় মৃত আরিয়ান মোল্লা ও সানোয়ার মোল্লার বাড়িতে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদেরকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায়। তৃণমূল বিধায়ক, কাউন্সিলরদের ধাক্কাধাক্কি, হেনস্থা করেন বিক্ষোভকারী বাসিন্দারা। মৃতদের পরিবারের বাড়িতে তাঁরা পৌঁছতে পারেননি। ঐক্যবদ্ধ মানুষের ক্ষোভবিক্ষোভে পরিস্থিতি উত্তপ্ত ও বেগতিক হওয়ায় মহেশতলা থানার পুলিশ তাঁদেরকে উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। যদিও সাধারণ মানুষের এই বিক্ষোভের ঘটনায় তৃণমূল বিধায়ক মহেশতলার তৃণমূল যুব সভাপতি শুভ নাগচৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তাঁর কথায়, মানুষের এই বিক্ষোভের নেপথ্যে যুবরা রয়েছে। বিক্ষোভকারী স্থানীয় বাসিন্দারা এদিনও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল বজবজ ট্রাঙ্ক রোড অবিলম্বে মেরামত ও পথ দুর্ঘটনায় মৃত দুই কিশোরের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান।
সিপিআই(এম) মহেশতলা ২ এরিয়া কমিটির উদ্যোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। বেহাল বজবজ ট্রাঙ্ক রোড অবিলম্বে সংস্কার ও মৃতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিতে মহেশতলার পুরাতন ডাকঘর থেকে ডাকঘর পর্যন্ত মিছিল পরিক্রমা করে। মিছিল শেষে আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) নেতা রতন বাগচী, প্রভাত চৌধুরী, দেবব্রত চৌধুরী, প্রকাশ হালদারসহ স্থানীয় নেতৃত্ব।

Comments :0

Login to leave a comment