RAJIV KUMAR DG

এই রাজীব কুমারের গ্রেপ্তারিতে সায় ছিল সুপ্রিম কোর্টের, এগোয়নি সিবিআই

রাজ্য

সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ছিলেন আইপিএস আধিকারিক রাজীব কুমার। রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের সচিবও হন মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ এই আধিকারিক। এবার রাজ্য পুলিশের প্রধানও তিনি। 
এক সময়ে এই আইপিএস আধিকারিকের গ্রেপ্তারিতে বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টও। সিবিআই হলফনামায় শীর্ষ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছিল এই আধিকারিকের বিরুদ্ধে। 
সারদা এবং রোজভ্যালি তদন্তকে বিভ্রান্ত করা, প্রমাণ বিকৃত করার চেষ্টা, প্রভাবশালী অভিযুক্তদের আড়াল করার মতো একাধিক অভিযোগই তুলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।  
রাজীব কুমারকে যদিও আগেই তথ্য প্রযুক্তি দপ্তরের সচিব করেছিলেন তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। কোনও আইপিএস আধিকারিককে পুলিশের পদ থেকে তুলে সরকারি দপ্তরের সচিব করার উদাহরণও প্রায় বিরল। 
রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে আসীন মনোজ মালব্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে বুধবারই। এদিনই সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে ডিজি পদে নিয়োগ করা হবে রাজীব কুমারকেই। রাজ্যপাল এই নির্দেশে সই করেছেন। 
রাজীব কুমারের সরকারি বাসভবনে হানা দিয়েছিল সিবিআই। ২০১৯’র ৩ ফেব্রুয়ারি সিবিআই’র তল্লাশির সময়েই রাস্তায় ধর্না দিতে বসে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ওই দিনই বামফ্রন্টের ডাকে নির্বাচনী সমাবেশ হয় ব্রিগেডে। বস্তুত রাজ্যের রাজনীতিতে তৃণমূল এবং বিজেপি’র দ্বৈরথ ভাষ্যকে গুরুতর চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল উপচে পড়া ব্রিগেড। সেদিনই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বিকেলে হানা দেয় রাজীব কুমারের বাসভবনে। মিডিয়া ভাষ্য সমাবেশকে পিছনে ঠেলে দিতে সহায়ক হয়েছিল সেই হানাদারি, মত রাজনৈতিক মহলে গুরুত্বপূর্ণ অংশের।
কিন্তু তার পরে সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ খারিজ হলেও রাজীব কুমারকে গ্রেপ্তার করেনি সিবিআই। ২০১৯’র ১৭ মে সুপ্রিম কোর্ট গ্রেপ্তারিতে স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। ৫ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশকে ‘নৈতিক জয়’ বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সে মাসেই শিলঙে জেরা হয় রাজীব কুমারের।
অথচ সুপ্রিম কোর্টে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে কড়া অভিযোগ জানিয়েছিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার অভিযোগ ছিল, রাজীব কুমার ২০১২’র জানুয়ারি থেকে ২০১৫’র ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন। তাঁর এলাকার মধ্যে ছিল সারদা ও রোজভ্যালি দুই বৃহৎ চিট ফান্ড কোম্পানির সদর দপ্তর। তিনি কমিশনার থাকাকালীনই এই দুই সংস্থা বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিভিন্ন প্রকল্পে বাজার থেকে সর্বাধিক পরিমাণ টাকা তোলা হয়েছিল। 
সারদাকাণ্ড ফাঁস হওয়ার আগে ২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষে সারদা ৮০৫কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা বাজার থেকে তুলেছিল। ঐ একই সময়কালে রোজভ্যালি তুলেছিল ৪৩২৯ কোটি ৫লক্ষ টাকা। তার পরের বছর রোজভ্যালি তুলেছিল ২৫৩৬কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। এই হলফনামায় সিবিআই দাবি করে, শুধু প্রভাবশালীদের আড়াল করাই নয়, সারদাকাণ্ডে রীতিমত নথি লোপাট, কল রেকর্ডস বিকৃত করে গোটা তদন্তকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা বারেবারে করেছেন তিনি।

Comments :0

Login to leave a comment