গল্প | মুক্তধারা
আশার আলো
নবপর্ণা
নিবেদিতা দেখল ওর চাকরির পরীক্ষার প্যানেল লিস্টে নাম উঠেছে।ওর তো আনন্দে মন নেচে উঠেছে।নিবেদিতা অতি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে,ওর এই চাকরিটা হয়ে গেলে ওদের পরিবারের অনেকটাই সুরাহা হবে। নিবেদিতার বাবা একটি কারখানাতে চাকরি করতেন,কিন্ত সরকারের দ্বিচারিতার কারণে
হঠাৎ করেই কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়।যার জন্যে পুরো পরিবার গভীর হতাশা ও অন্ধকারে ডুবে যায়।সেই হতাশার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে,নিবেদিতা ছোটো ছোটো বাচ্চাদের পড়ানোর টিউশন শুরু করে আর তার সাথে সাথে বাড়িতে বসে ওর মাকে সঙ্গে নিয়ে ফলস,
পিকো ও অলটারেশনের কাজ শুরু করে।এতে কিছুটা হলেও খানিকটা আলোর দিশা পায় ওদের পরিবার।নিবেদিতার ছোটোবোনের
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা,ওর পড়াশোনার যাতে কোনো ক্ষতি না- হয় সেই চেষ্টাই করতে থাকে। তার ভেতরেই এই স্কুলের চাকরির খবরটি ওদের পরিবারে একটি খুশির হাওয়া ছড়িয়ে দেয়, সাময়িক হলেও।খুশির আনন্দে বহুদিন পর সবাই মিলে একটু খাওয়া দাওয়া করে।
হঠাৎ করেই এর মধ্যে খবর আসে যে যারা চাকরির পরীক্ষায় পাস করেছে, তাদের জায়গায় যাদের নাম ওঠেনি চাকরির পরীক্ষায়, তাদের চাকরি হয়ে গেছে।এই খবর শুনে নিবেদিতা এক চরম হতাশার ভেতরে চলে যায় আবার।এরপর সব চাকরি প্রার্থীরা চরম আন্দোলনের পথে নামে।কিন্ত সরকার তাতে কর্নপাত করে না।এরই মধ্যে বহু চাকরি প্রার্থী হতাশায় ডুবে,আত্মহননের পথ বেছে নেয়।সেই আন্দোলন এখনও চলছে। কিন্ত আর কতদিন এইভাবে যুব সমাজ শেষ হবে আর আমাদের সমাজ আরও কত অন্ধকারের পথে যাবে ? কবে এই যুব সমাজের উন্নতি হবে আর আমাদের সভ্যসমাজ উন্নতির পথে অগ্রসর হবে ? আর কবে সরকার মুখ তুলে চাইবে আর নতুন প্রজন্ম আশার আলো দেখবে ?
এবার ন্যায্য অধিকার আদায়ের ঐক্যবদ্ধ লড়াইটা আপসহীন ও তীব্র করতে হবে।
Comments :0