আদিবাসী সমর্থন বাড়িয়েছে বিজেপি। আদিবাসী সংরক্ষিত আসনে কংগ্রেসের ফলাফল শোচনীয় হয়েছে। ছত্তিশগড়ে হারের পর এমন ব্যাখ্যা শোনা গিয়েছে কংগ্রেস নেতা এবং বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রী টিএস সিং দেও’র স্বরে।
জনজাতি নেতা সিং দেও নিজেও ৯৪ আসনে হেরেছেন অম্বিকাপুর কেন্দ্রে। এক প্রশ্নে তিনি আত্মসন্তুষ্টির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সিং দেও বলেছেন, ‘‘আমরা বুঝেছিলাম কঠিন লড়াই রয়েছে। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, কিন্তু আত্মসন্তুষ্টি ছিল না।’’
বিজেপি’র জয় প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের ভোট শতাংশ ছত্তিশগড়ে কমেনি। আমাদের থেকে মানুষ সরে যাননি। কিন্তু প্রায় ১৪ শতাংশ ভোট বেড়েছে বিজেপি’র।’’
ছত্তিশগড়ে এবার বিজেপি জয়ী হয়েছে ৫৪ আসনে। কংগ্রেস জয়ী ৩৫ আসনে। ২০১৮’তে এ রাজ্যেই কংগ্রেস ৬৮ আসনে জিতেছিল। বিজেপি পেয়েছিল ১৫টি আসন।
এবার বিজেপি’র প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৬.২৮ শতাংশ। কংগ্রেসের পক্ষে ভোটের হার ৪২.১৯ শতাংশ ভোট। ২০১৮’তে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৪৩ শতাংশ, বিজেপি’র ৩৩ শতাংশ।
সিং দেও বলেছেন, ‘‘বস্তার এবং সরগুজা মিলিয়ে ২৬টি আদিবাসী সংরক্ষিত আসন রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৪টি আসনে কংগ্রেস জিততে পেরেছে। এই ৪ আসনই বস্তারে।’’
ছত্তিশগড়ে ৯০ আসনের মধ্যে ২৯টি আদিবাসী সংরক্ষিত। গতবার কংগ্রেসের জয়ের পিছনে এই আসনগুলি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সিং দেও বলেছেন, ‘‘বিজেপি আদিবাসী এলাকায় বাড়ি বাড়ি ফর্ম বিলি করেছে। বলেছে সরকার গড়লে এই ফর্ম দেখিয়ে সুবিধা নেওয়া যাবে। বাড়ি বাড়ি প্রচারের প্রভাব রয়েছে। আদিবাসীদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন ভোটের মুখে প্রার্থীও দিয়েছে।’’
গতবার ব্যাপক জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ভূপেশ বাঘেল। আড়াই বছর পর সিং দেও-কে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। দ্বন্দ্ব সামলাতে সিং দেওকে ভোটের কয়েকমাস আগে উপমুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে কংগ্রেস।
এ রাজ্যে প্রথম দফার ভোটের ঠিক আগে ইডি বিবৃতি দিয়ে জানায় যে মহাদেব বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কারির টাকা মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। তাদের হাতে ধৃত এক অভিযুক্ত এই স্বীকারোক্তি করেছেন। ভোট মিটতে সেই অভিযুক্ত আবার আদালতে জানান যে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকেই টাকা দেননি। ঠিক ভোটের আগে ইডি’র এ ধরনের বিবৃতিতে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেছেন সিং দেও। তাঁর মত, বেটিং অ্যাপ অভিযোগ শহর এলাকায় প্রভাব ফেলেছে। তবে গ্রামে এই প্রচার মুখ্যমন্ত্রীর বিপক্ষে যায়নি।
ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের সরকার পড়ে যাবে, এমন অনুমান রাজনৈতিক মহলেও ছিল না। ধানের সংগ্রহ মূল্য, কেন্দু পাতার দর, কৃষকের ঋণ মকুবের কাজ কংগ্রেসকে এগিয়ে রাখছিল। তবে বিজেপি’র আসন বাড়ার ইঙ্গিত ছিল। গণনার দিন দেখা গিয়েছে বিজেপি স্পষ্ট গরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে। হেরেছেন রাজ্যের ১৩ মন্ত্রীর মধ্যে ৮জনই।
সিং দেও বলেছেন, ‘‘কেবল মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখে ভোট হয়নি। ব্যানারে পোস্টারে অন্য নেতারাও ছিলেন। ফলে পরাজয়ের দায়িত্ব সবার।’’
Chhattisgarh Result Singh Deo
আদিবাসী আসনে ধসকে দায়ী করলেন ছত্তিশগড়ের উপমুখ্যমন্ত্রী
×
Comments :0