Conference

দেশ বাঁচানোর আহ্বানে শুরু সরকারি কর্মীদের সম্মেলন

রাজ্য

ক্যাপশন : বারুইপুরে সম্মেলনে বলছেন লিটন পান্ডে।


অনিল কুণ্ডু – বারুইপুর
আরএসএস ভারতবর্ষকে হিন্দু, হিন্দুস্তান করতে চাইছে। আরএসএস’র দূর্গা এ রাজ্যে ধর্মকে রাজনীতিকরণ করছে। এই ধর্মীয় রাজনীতি, মানুষের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতির চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পরাস্ত করতে হবে এই দুই শক্তিকে। শনিবার বারুইপুরে সম্মেলন মঞ্চে এই আহ্বান জানান রাজ্য সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের নেতা লিটন পান্ডে। ওয়েস্ট বেঙ্গল সাব অর্ডিনেট ফরেস্ট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’র ৬১তম দ্বিবার্ষিক রাজ্য সম্মেলন এদিন বারুইপুরে শুরু হয়। এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি। 
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির কোষাধ্যক্ষ লিটন পান্ডে তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, কর্মচারীদের অর্জিত দাবিকে রক্ষা করতে আমরা পরিবর্তনের পরিবর্তন চাই। বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা, নিজেদের দাবি দাওয়াসহ সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী গড়ে তুলতে হবে। লোকসভা নির্বাচনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামনে কঠিন দায়িত্ব। ভারতবর্ষকে বাঁচানোর লড়াই। তা না হলে আরএসএস, আরএসএস’র দূর্গা দেশকে ধ্বংস করবে। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। আরো বেশি সংগঠিত হতে হবে। সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা সঠিকভাবে পালন করতে হবে।  
তিনি বলেন, দেশে ৩টি রাজনৈতিক হত্যা গোটা পৃথিবী জুড়ে আলোড়ন পড়েছিল। মহাত্মা গান্ধীকে নাথুরাম গডসে হত্যা করেছিল। দেশের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তারপর রাজীব গান্ধী খুন হয়েছেন। দেশদ্রোহীদের কোন জাত নেই। এই ধরণের ঘটনা দেশে হলে মানুষ সমস্যায় পড়ে। অস্থিরতা বাড়ে। রাজ্যের পরিস্থিতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১১ সালের পর থেকে বেকারদের চাকরি নেই। নিয়োগ দুর্নীতি, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা দিচ্ছে না সরকার। গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ২০১১ সালে রাজ্যে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলাম সরকার কর্মচারী, জনস্বার্থবাহী সিদ্ধান্ত নিলে স্বাগত জানাবো। জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত নিলে বিরোধীতা করবে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি।  এরপর বঞ্চনা, মহার্ঘ্য ভাতার দাবির কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। তারপর থেকেই আমরা সমস্যায় পড়ছি। দমনপীড়ন নীতি নিয়ে চলছে এই সরকার। তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করছেন আপনারাও। এই পরিস্থিতিতে আপনারা এগিয়ে যাচ্ছেন।  প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কাজ করতে হচ্ছে। সতর্ক থাকতে হবে। আরো নতুন বন্ধুদের এই লড়াই সংগ্রামে শামিল করেই রাজ্যে সংগঠনকে শক্তিশালী গড়ে তুলতে হবে। এই বার্তাই সমস্ত কর্মচারী বন্ধুদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। নিজেদের পরিবার পরিজনদেরকেও রাজনৈতিক সচেতনতা, দুই সরকারের নীতি ও বিপদ সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। নিজেদের রাজনৈতিক চেতনাকে আরো শাণিত করতে হবে। বিশ্ব উষ্ণায়ণ, পরিবেশ বাঁচাতে আপনারা অরণ্য সপ্তাহ পালন করছেন। 
তিনি এদিন কর্মচারী আন্দোলনের সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, মনে রাখবেন আমাদের আন্দোলনে সরকার ভয় পাচ্ছে। কর্মচারী, সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমরা লড়াই করছি। যৌথ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।  
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির অন্তর্গত ওয়েস্ট বেঙ্গল সাব অর্ডিনেট ফরেস্ট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’র দু’দিন ব্যাপী রাজ্য সম্মেলন এদিন শুরু হয় বারুইপুরে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা দপ্তর কর্মচারী ভবনে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কমরেড সমীর ভট্টাচার্য নগর কমরেড প্রহ্লাদ বেরা মঞ্চ নামকরণ করা হয়। সম্মেলন স্থলে শুক্রবার কমরেড মুক্তি দে বক্সী স্মরণে পুস্তক বিপণন কেন্দ্র’র উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন করেন ১২ জুলাই কমিটির জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মনোজ ব্যানার্জি। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে লাল ঝান্ডায় সেজে উঠেছে বারুইপুর পদ্মপুকুর এলাকা। 
সম্মেলনে সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন সংগঠনের রাজ্য যুগ্ম সম্পাদক বিভাস দাস। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১১৮ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন। প্রতিবেদনের উপর আলোচনা করছেন প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি তপন মিশ্র, ১২ই জুলাই কমিটির তরফে অশোক সাহা। সম্মেলন চলবে রবিবার পর্যন্ত। সুকুমার ঘোষ, তপন ভট্টাচার্য ও সুশান্ত দলুইকে নিয়ে গঠিত সভাপতিমন্ডলী সম্মেলন পরিচালনা করছেন
 

Comments :0

Login to leave a comment