আসামের জনপ্রিয় সংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব জুবিন গার্গের ১৯ সেপ্টেম্বরে আকস্মিক প্রয়াণ ঘটে। আকস্মিক এই ঘটনায় গোটা আসামই প্রায় শোকস্তব্ধ হয়ে পরে। ২১ সেপ্টেম্বর তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি হলে একটি শোকসভা আয়োজন করে। সেই সভায় কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মনে আঘাত হানে। রাজ্য সরকার দাপ্তরিক শোকের ঘোষণ পরেও সেদিনই ছাত্র পরিষদ নির্বাচনের জন্য জোরে করা হলে তা ছাত্রছাত্র্রীদের মনে ক্ষোভের জন্ম হয়। কর্তৃপক্ষের সংবেদনশীলতার অভাব শক্তিশালী আন্দোলনের জন্ম দেয়। পরেরদিন ছাত্রছাত্রীরা এই ঘটনায় কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি চেয়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ভিডিও চলে উপস্থিত হয়ে, "এটি একটা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বিষয়গুলি কে হাস্যকর করবেন না", (“It’s a Central University, don’t make things funny,”) বলে মন্ত্যব্য করেন। তা শিক্ষার্থীদের অসম্মান জনক বলে মনে করে তৎক্ষণাৎ তারা সাত দফা স্বারকলিপি জমা দেয়। সেই অনুযায়ী প্রশাসন পরেরদিন একটি বৈঠক আয়োজন করে। শিক্ষার্থীরা সেই বৈঠক বর্জন করে। তারা উপাচার্যের মুখোমুষি হলে তিনি অসম্মানজনক মন্ত্যব্য করেন এবং ক্ষমা চাইতেও অস্বীকার করেন। হঠাৎ করেই ক্যাম্পাস ছেড়ে উপাচার্য পালিয়ে যান। এই ঘটনাই আন্দোলনের জন্ম দেয়। ২৩ সেপ্টেম্বর আন্দোলনটি প্রতীকী মোর নেই। শিক্ষার্থীরা জুবিন গর্গের স্মরণে ৫০০০ মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে শোকপ্রকাশের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়।পাশাপাশি জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে উপাচার্যের উপর ম্যাজিস্ট্রায়াল তদন্ত শুরু হয়। হঠাৎ প্রশাসনের তরফে শিক্ষামূলক ছুটি ঘোষণার মাধ্যমে আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে। তারপর বিশ্ব্যবিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও এবং অ-শিক্ষক কর্মচারীরাও শিক্ষাথীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন। প্রশাসনিক স্বৈরাচার, দুর্নীতি, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হন। এরপর তারা সম্মিলিতভাবে উপাচার্য শম্ভূনাথ শিং কে অপসারণের জন্য স্বরকলিপি জমা দেয়।পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ও শপথ নেন তারা। ১২অক্টোবর আসামের রাজ্যপাল ঘটনার তদন্তের জন্য তিন সদ্যসের তথ্যঅনুসন্ধান কমিটি বৈঠকে বসে। তারা উপাচার্যকে অপসারণ ও প্ৰতিষ্ঠানের সততা পুনরুদ্ধারের জন্য বাব্যস্থাগ্রহণ করেন।
পরেরদিকে বৃহত্ত্বর দাবি নিয়ে এই আন্দোলন বহুমাত্রিক নাগরিক আন্দোলনে পরিণত হয়।
Assam tezpur
প্রতিবাদে উত্তাল তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়
×
Comments :0