ABHISHEK SC

‘আর কত রেহাই চাইবে?’ অভিষেকের আবেদনে মন্তব্য চক্রবর্তীর

রাজ্য

আর কত রেহাই চাইবে? বিচার এড়াতে আর কত আদালতে ছুটোছুটি চলবে?
বুধবার এই মন্তব্য করেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। সুপ্রিম কোর্টে এদিন কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বিপক্ষে আবেদন দায়ের করেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি। সে সংক্রান্ত এক প্রশ্নে সংবাদমাধ্যমে এমন প্রতিক্রিয়া জানান চক্রবর্তী। 
অভিষেকের আবেদনে বলা হয়েছে যে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি আদালতের বাইরে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। এমন মন্তব্য না করার নির্দেশ দিতে হবে। আবেদনের আরেকটি অংশ হাইকোর্টেরই বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে ঘিরে। তাঁর এজলাসে চলছে নিয়োগ দুর্নীতির মামলা। 
অভিষেকের আবেদন,  অমৃতা সিনহার এজলাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতির সমস্ত মামলা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টকে। এই নিয়োগ দুর্নীতির মামলাগুলি শুনানির জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে একটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করার কথা বলতে হবে।
এর আগে অভিষেকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির এজলাস থেকে মামলা সরে যায়।  অমৃতা সিনহার এজলাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা আসে। বিচারপতি বদল হলেও নিস্তার মেলেনি বিচারে। বরং কেন্দ্রের তদন্ত সংস্থা ইডি’র তদন্তে গাফিলতি নিয়ে সরব হন বিচারপতি সিনহা। এজলাসে তিনিই ইডি’কে মনে করিয়ে দেন যে অভিষেকের হলফনামায় দেখা গিয়েছে ২০১৪’র পর তাঁর ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-র সম্পত্তি লাফিয়ে বেড়েছে। তার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। 
চক্রবর্তী মনে করিয়েছেন যে দুর্নীতির বিভিন্ন মামলা থেকে নিস্তার পেতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত ভোঁতা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর তদন্তের গতি কমতে দেখা গিয়েছে। চক্রবর্তীর মন্তব্য, এবারও নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ধরে রেহাই পেতে হবে। বারবার তদন্ত এড়াতে এক বেঞ্চ থেকে অন্য বেঞ্চ অথবা সুপ্রিম কোর্টে ছুটে যান তৃণমূলের নেতারা। 
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চ্যাটার্জির, মানিক ভট্টাচার্য, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কুন্তল সহ যাঁরা জেলে রয়েছেন তাঁদের আয়ের উৎস জানতে চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি গাঙ্গুলি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, একজন মানুষের আয়ের সোর্স কী এটা জানাতে বাধা কোথায়। সমাজিক মাধ্যমে এই আয়ের উৎস অভিষেক ব্যানার্জি জানিয়ে দিতে পারেন। বুধবার অভিষেক ব্যানার্জি সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলায় আবেদনে বলেছেন, বিচারপতির আদালতের বাইরে করা মন্তব্য মূল মামলার শুনানির ওপর যাতে প্রভাব না ফেলে তা দেখতে হবে। 
লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’র ডিরেক্টর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র যিনি বেশি পরিচিত হয়ে উঠেছে ‘কালীঘাটের কাকু’ নামে, তাঁর কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের হয়েছে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশের কারণেই। হাইকোর্টের নির্দেশের পরও চার মাস ধরে এই প্রক্রিয়া ঝুলে ছিল। ইডি আধিকারিকরা বলছিলেন যে এসএসকেএম’র চিকিৎসকরা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ভদ্রের কন্ঠস্বের নমুনা নিতে দিচ্ছেন না। 
এই কন্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহের নির্দেশের বিরোধিতা করে আবার ‘কাকু’-র পক্ষ থেকে ডিভিসন বেঞ্চে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। বুধবার ডিভিসন বেঞ্চ কাকুর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তবে বিচারপতি সিন্‌হার নির্দেশ ঘিরেও কিছু প্রশ্ন তুলেছে। কারণ মূল মামলাটি রয়েছে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে।
সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনায় বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির মন্তব্য চেয়েছিল সংবাদমাধ্যম। আইনের শাসন নিয়ে এক প্রশ্নে তাঁর মন্তব্য ছিল, আপনার মনে হয় রাজ্যে আইনের শাসন আছে? 
তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে জেনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার বিভিন্ন পদক্ষেপে ওদের অসুবিধা হচ্ছে।’’ চোরেরা জেলে রয়েছেন, আরও অনেকে জেলে যাবেন। সেই জন্যই আমার ওপর বিরূপ। যেভাবে দুর্নীতির তদন্ত আটকানোর জন্য মামলা হচ্ছে তাতে মনে হয় কোন দিন চোরেরাই আইনজীবী দাঁড় করিয়ে বলবে আমাদের চৌর্যবৃত্তি করার অধিকার দেওয়া হোক।

Comments :0

Login to leave a comment