শুক্রবার বিকেলে উড়ান প্রদর্শনের সময় দুবাইয়ে বিধ্বস্ত হল ভারতীয় বায়ুসেনার তেজস যুদ্ধবিমান। দুর্ঘটনায় পাইলটের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ২টো ১০ মিনিট নাগাদ দুর্ঘটনার পর আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কালো ধোঁয়া ঢেকে যায়। ভারতীয় বায়ুসেনা এক বিবৃতিতে জানায়, দুবাই এয়ার শো চলাকালীন তেজস বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। পাইলট প্রাণ হারিয়েছেন। গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকার বাত্রা দেওয়া হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হচ্ছে।
দুর্ঘটনার পরপরই দমকল ও জরুরি সহায়তাকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড নির্মিত এক সিটের লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট তেজস।
দুর্ঘটনার ছবি ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সেই ভিডিও যাচাই করেনি গণশক্তি ডিজিটাল। সেখানে দেখা গেছে বিমানটি দ্রুত মাটির দিকে নীচে নেমে মুহূর্তের মধ্যে আগুনের বলয়ে বিস্ফোরিত হয়। কোনো ইজেকশন সিস্টেম সক্রিয় হয়েছে কি না, তা ভিডিওয় ধরা পড়েনি। তেজসের দগ্ধ ও বিধ্বস্ত ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে রয়েছে।
রাশিয়ার মিগ-২১ যুদ্ধবিমানগুলির জায়গায় হালকা যুদ্ধবিমান ‘তেজস’কে স্থলাভিষিক্ত করার প্রথম পরিকল্পনা নেওয়া হয় তিন দশক আগে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী নামকরণ করেন ‘তেজস’, সংস্কৃত ভাষায় যার অর্থ তেজস্বী।
ভারতীয় প্রযুক্তিতে হালকা যুদ্ধ বিমান প্রস্তুতির ধারণা প্রথমে ১৯৭০ সালে হলেও, প্রকল্প প্রথম শুরু হয় ১৯৮০ সালে। ১৯৯৮ সালে পোখারানে ভারতের আণবিক বোমা পরীক্ষা ‘শক্তির’ পর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। প্রভাব পড়ে স্বাধীন যুদ্ধবিমান প্রস্তুতির কাজেও। ২০০১ সালে প্রথম বিমান তৈরি হলেও, তার ১৫বছর পর আরো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ‘তেজস’ অন্তর্ভুক্ত হয় বিমানবাহিনীতে।
অত্যাধুনিক ‘তেজস’ যুদ্ধবিমানে রয়েছে মাল্টি মোড রেডার, মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরে নেওয়ার সক্ষমতা। একটি ‘তেজস’ বিমান নির্মানের উৎপাদন খরচ ২৭৫ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকা। ঘণ্টায় ১৭৩০ কিলোমিটার গতিবেগে উড়তে সক্ষম ‘তেজস’। অবর্থ্য নিশানায় আঘাত হানতে পারে আকাশ থেকে আকাশ মিসাইল শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমানে। জানা গেছে যে বিধ্বস্ত বিমানটি হল তেজস মার্ক ১এ, তেজস বিমানের সবচেয়ে উন্নত সংস্করণ। বিমানটি প্রতি ঘন্টায় ২,২০০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে পারে এবং প্রায় নয় টন ওজনের অস্ত্র বহন করতে পারে। এক সাথে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। এটি বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধবিমান স্যুট দিয়ে সজ্জিত।
Tejas Fighter Jet
দুবাইয়ের এয়ার শো-তে ভেঙে পড়ল ‘তেজস’
×
Comments :0