Trinamool attack

সিপিআই(এম)'র সভায় তৃণমূলের হামলা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ রাস্তা অবরোধ

রাজ্য জেলা

Trinamool attack ছবি: সিপিআই(এম)'র আহ্বানে সভার প্রাক মূহুর্তে তৃণমূলী হামলার প্রতিবাদে হাড়োয়া থানা ঘেরাও করে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ পার্টি কর্মীদের।


প্রয়াত সুব্রত মুখার্জি নিদান দিয়েছিলেন সপ্তাহে একবার সিপিআই(এম)কে পেটাতে। শনিবার এগরায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রকাশ্য সমাবেশে সুব্রত মুখার্জির সেই নিদান স্মরণ করে কার্যত সিপিআই(এম)কে সপ্তাহে একদিন পেটানোর নির্দেশ দিলেন দলীয় কর্মী ও দলের আশ্রিত সমাজবিরোধীদের। ২৪ঘন্টাও কাটে নি। রবিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশকে অক্ষরে আক্ষরে পালন করতে দেখা গেল উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া ব্লকের গোপালপুর - ২গ্রাম পঞ্চায়েতের পুকুরিয়া বটতলা বাজারে। এদিন সেখানে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বাকবুল মুন্সির নেতৃত্বে বাইকবাহিনী তান্ডব চালালো সিপিআই(এম) ডাকা সভার প্রস্তুতি পর্বে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পার্টির কর্মী সমর্থকরা।

 সাধারণ মানুষ নিন্দা জানাতে থাকেন। ঘটনার প্রতিবাদে সিপিআই(এম)'র কর্মীরা হাড়োয়া থানা ঘেরাও করে এবং রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দেড় ঘন্টা ধরে চলে রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ। শেষে পুলিশ লিখিত অভিযোগ নিতে বাধ্য হয়। পাশাপাশি ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়। এরপর এদিন বিকালেই তৃণমূলের চোখে চোখ রেখে হামলা উপেক্ষা করে ৬ জুন বারাসতে কাছারি  ময়দানে পার্টির উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির আহ্বানে জনসভার সমর্থনে ও চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি চ্যালেঞ্জ নাও, পঞ্চায়েত ভোটের তারিখ দাও আওয়াজ তুলে সভা হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন হাড়োয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক অধীর মল্লিক, আশিফ আলম ও জব্বার সরদার। রাস্তা অবরোধ চলাকালীন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধীর মল্লিক এদিন জানান, পুলিশ এবং প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে গোপালপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পুকুরিয়া বটতলা বাজারে সভার আয়োজন করা হয় পার্টির পক্ষ থেকে। সেই মতো পার্টির কর্মীরা সভাস্থল সাজিয়ে তুলতে লাল পতাকা টাঙানো এবং ডেকরেটর্সের কর্মীরা মাইক বাঁধার কাজ করছিলেন। আচমকা সেখানে তৃণমূলের গোপালপুর -২অঞ্চল সভাপতি বাকবুল মুন্সির নেতৃত্বে ১৫-২০ টি বাইকবাহিনী আগ্নেয়াস্ত্র সহ ঘটনাস্থলে আসে। আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেয় এখানে সিপিআই(এম) সভা করলে রক্তের হোলি খেলা হবে। সিপিআই(এম)র কর্মীদের রক্তে রাস্তা ভেসে যাবে এবং সেই সাথে অকথ্য খিস্তি খেউর করতে থাকে। জীবন বাঁচাতে পার্টির কর্মীরা এবং ডেকরেটর্সের কর্মীরা মালপত্র ফেলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আর তখন ডেকরেটর্সের মাইক, চেয়ার ইত্যাদি জিনিসপত্রে বেপরোয়া ভাঙচুর চালায়।

 মমতার ব্যানার্জি জিন্দাবাদ অভিষেক ব্যানার্জি জিন্দাবাদ, হাজি নুরুল জিন্দাবাদ ধ্বনি দিতে দিতে প্রকাশ্য রাস্তায় পার্টির পতাকা ফেলে তাতে আগুন দিয়ে পুঁড়িয়ে দেয় এবং উল্লাসে মাতে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে যথেষ্ট উত্তেজনা এবং আতঙ্ক। পার্টির ডাকে এদিনের সভা বানচাল করতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে পার্টির জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূলীরা ভয় পেয়েছে। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের লুট তোলাবাজি, রাহাজানি সহ নানান দুর্ণীতিতে সাধারণ মানুষ বীতশ্রদ্ধ। মানুষ এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাইছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বামপন্থীদের প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়ছে দেখেই তৃণমূলীরা মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করতেই এই হামলা চালিয়েছে। তবে তৃণমূলীরা যতই হামলা চালাক না কেন মানুষের পঞ্চায়েত গড়তে মানুষের জয় অবসম্ভাবী।



 

Comments :0

Login to leave a comment