Vikram S: A Grand Start towards privatising space reserach

‘বিক্রম এস’ কি মহাকাশ ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা হারানোর প্রারম্ভ?

জাতীয়

Vikram S Space Research Self dependence ISRO

দশক ছয় আগে প্রথম রকেট মহাকাশে উড়িয়েছিল ভারত। প্রধান দায়িত্বে ছিলেন বিক্রম সারাভাই। মহাকাশ গবেষণায় ভারতের পতাকা উড়িয়েছিল সরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান ‘ইসরো’। শুক্রবার এই প্রতিষ্ঠানেরই সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে উড়ল ‘বিক্রম এস’। বিক্রম সারাভাইকে স্মরণ করে উৎক্ষেপণ হলো প্রথম বেসরকারি রকেটের। 

এদিন কেন্দ্রের মন্ত্রীরা ছিলেন অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটায় উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে। সরকারি ভাষ্য, ‘মিশন প্রারম্ভ’ সফল করার কাজ শুরু হলো। মহাকাশ ক্ষেত্রে দেশের নিয়ামক প্রতিষ্ঠান ‘আইএন স্পেস’ চেয়ারম্যান পবন গোয়েঙ্কা বললেন, ‘‘ঠিক যেমন পরিকল্পনা করা হয়েছিল রকেট একেবারের তাই করেছে। ৮৯.৫ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছেছে। আকাশে উড়েছে মহাকাশ স্টার্টআপ ‘স্কাইরুট এয়ারোস্পেস’ সংস্থার তৈরি এই রকেট। 

প্রায় ৬ মিটার লম্বা ‘বিক্রম এস’-র কাঁধে রয়েছে তিনটি কৃত্রিম উপগ্রহ। একটির নির্মাতা চেন্নাইয়ের ‘স্পেসকিডজ’। অন্য দু’টির নির্মাতা অন্ধ্র প্রদেশের ‘এন স্পেস টেক’ এবং আর্মেনিয়ার ‘বাজুম কিউ স্পেস’। গোয়েঙ্কা বলেছেন, ‘‘আজকের সাফল্যে আরও বহু মহাকাশ বাণিজ্য স্টার্টআপ এগিয়ে আসবে।’’ 

‘মিশন প্রারম্ভ’ কি আসলে ইসরো’র বেসরকারিকরণের আরেকটি ধাপ? যেভাবে ঢাকঢোল পিটিয়েছেন কেন্দ্রের মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং থেকে ভাগবত কারাদরা, এই প্রশ্ন একেবারে এড়ানো যায়নি। এর আগে ইসরো’কে ব্যাখ্যাও দিতে হয়েছিল যে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে অংশগ্রহণ বা তাদের উৎসাহ দেওয়ার অর্থ বেসরকারিকরণ নয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ বিজ্ঞানীরাও এই ব্যাখ্যায় একমত নন। 

২০১৮’তে বদলি করে দেওয়া হয়েছিল মহাকাশ বিজ্ঞানী তপন মিশ্রকে। আমেদাবাদের স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের অধিকর্তা ছিলেন ইসরোর এই বিজ্ঞানী। মিশ্রকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বেঙ্গালুরুতে, তখনকার প্রধান কে শিবনের পরামর্শদাতা হিসেবে। রাষ্ট্রপতিকে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চিঠি দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরাই লিখেছিলেন, দু’টি কারণে সরানো হলো মিশ্রকে। প্রশাসনিক পদ কেড়ে পরামর্শদাতা করা হলো যাতে ইসরোর ডিরেক্টর পদে বিবেচনা করার উপায় না থাকে। এক, ইসরোর নিজস্ব প্রকল্পে দেরি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মিশ্র। প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন্দ্রের সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে। দুই, ইসরোর বেসরকারিকরণে ছিল তাঁর তীব্র আপত্তি। 

মহাকাশ বাণিজ্য বাড়ছে বিশ্বেই, ভারত এখন ছয় নম্বরে। শত বাধা সত্ত্বেও ভারতের সাফল্যের মেরুদণ্ড ইসরোর মতো প্রতিষ্ঠান। ২০২০-তে মহাকাশ বাণিজ্য বেসরকারি সংস্থার জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। পরের বাজেটে স্টার্টআপের জন্য অনুদানের ঘোষণাও হয়েছে। 

১৯৬৩-তে থুম্বা থেকে মহাকাশে উড়েছিল প্রথম রকেট, স্বনির্ভরতার লক্ষ্য জানিয়ে। এমন ‘ঐতিহাসিক দিনেও’ প্রশ্ন পিছু ছাড়ছে না, স্বনির্ভরতার লক্ষ্যকেই কী পিছে ঠেলে দেওয়া হলো ধুমধাম করে! 

Comments :0

Login to leave a comment