Winter Bengal

পারদ কিছুটা নামলে ছন্দপতন ঘটাতে পারে ঘূর্ণাবর্ত

রাজ্য

  সবে হালকা ঠান্ডার অনুভূতি মেলা শুরু হয়েছে। দিনের বেলায় পারদ তেমন না নামলেও রাতের দিকে একটা শীত শীত ভাব দেখা মিলেছে। চলতি আবহের মধ্যে রবিবার কালীপূজোতে শীতের আমেজ বজায় থাকবে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। এই সময় আবহাওয়া শুষ্ক হতে থাকায় ত্বকে টানও অনুভূত হবে। দক্ষিণবঙ্গের অনেক জেলায় পারদ নেমে গেছে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে আগামী পাঁচদিন দক্ষিণবঙ্গের কোথাও বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। রাতের তাপমাত্রায় সামান্য নীচের দিকে নামতে পারে বলে জানা গেছে।
দক্ষিণবঙ্গ শুষ্ক থাকলেও উত্তরবঙ্গের বৃষ্টির সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। আগামীকাল দার্জিলিঙ ও কালিম্পঙের কোথাও কোথাও হালকা বর্ষণ হতে পারে। এরপর থেকে পরবর্তী পাঁচদিন দার্জিলিঙ, জলপাইগুড়ি, কালিম্পঙ, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদায় আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। উত্তরবঙ্গের পারদও স্বাভাবিকের থেকে নীচে নেমে যাওয়ার কথা। দার্জিলিঙে ইতিমধ্যে ১০ ডিগ্রির নীচে নেমেছে তাপমাত্রা।   সমতল শহরে রাত আর ভোরের পারদ নিম্নমুখী হতে দেখা যাচ্ছে।    
বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গড় সর্বোচ্চ থেকে এই তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অবশ্য সেঅর্থে নামে নি। গড় সর্বনিম্ন যা থাকার তাই হয়েছে। এদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ২১.২ডিগ্রি। আগামিকাল ও পরশু, ১০ ও ১১ নভেম্বর কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকবে। তারপর ১২ তারিখ, কালীপুজোর দিনও শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রির আশেপাশে থাকতে পারে। পরে ১৫ তারিখ পর্যন্ত সর্বনিম্ন পারদ ২২-এর ঘরেই থেকে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর।
তবে এরই মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গেছে। বুধবার রাতে আসানসোলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে ১৬.৭ ডিগ্রি, মেদিনীপুরে ১৯.৩ ডিগ্রি, কৃষ্ণনগরে ২০.২ ডিগ্রি, মুর্শিদাবাদে ১৮.১ ডিগ্রি, পুরুলিয়ায় ১৫.৫ ডিগ্রি, শ্রীনিকেতনে ১৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবারে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা কি না স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি নীচে।  বৃহস্পতিবার সেই তাপমাত্রাই বেড়েছে।   
আলিপুর যখন ঠান্ডার হালহকিকত জানাচ্ছে, ঠিক তখনই দিল্লির মৌসম ভবন ঘূর্ণাবর্তের খবর জানাচ্ছে। বর্তমানে আরব সাগরে নাকি একটি ঘূর্ণাবর্ত বিস্তার করতে শুরু  করেছে। এর জেরে দক্ষিণ ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। তবে বঙ্গোপসাগরে আপাতত নিম্নচাপ নেই। এই পরিস্থিতিতে আগামী পাঁচদিন বাংলার আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে।  তবে   আগামী সপ্তাহেই শীতের ইনিংসে ছন্দপতন ঘটতে পারে। কারণ, নভেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে ২টি ঘূর্ণাবর্ত। পর পর ৩টি ঘূর্ণাবর্তের মধ্যে অন্তত ১টিতে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস বলছে, আগামী ১৫ – ১৮ নভেম্বরের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হবে একটি ঘূর্ণাবর্ত। ১৮– ২১ নভেম্বরের মধ্যে সেটি ভূভাগে প্রবেশ করার কথা। আর ওই   ঘূর্ণাবর্তের জেরে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্তটি ভূভাগে প্রবেশ করার আগেই আন্দামান সাগরে আরেকটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। ২৪ বা ২৫ নভেম্বর ঘূর্ণাবর্তটি ভূভাগে প্রবেশ করতে পারে। ওই ২ ঘূর্ণাবর্ত ঠিক কোথা দিয়ে কী ভাবে ভূভাগে প্রবেশ করবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। 
তাই এরাজ্যে কতটা প্রভাব পড়বে তা এখনো অনিশ্চিত। কিন্তু ২টির মধ্যে অন্তত ১টি ঘূর্ণাবর্তের জেরে রাজ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি না হলেও আর্দ্র বাতাসের জন্য বাড়তে পারে শীতের তাপমাত্রা।  চলতি মাসের একেবারে শেষে বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আরও ১টি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে বঙ্গোপসাগরে। ঘূর্ণাবর্তগুলি কতটা শক্তিশালী হবে তা বলা যাবে সেটি তৈরি হওয়ার পর।

Comments :0

Login to leave a comment