প্রসূন ভট্টাচার্য
টানা আক্রমণ চালাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি জোট সরকার। আক্রান্ত কৃষক, খেতমজুর শ্রমিক-কর্মচারীরা। বেপরোয়া আক্রমণ প্রতিরোধে বেনজির সমাবেশের লক্ষ্য ঘোষণা হলো সারা ভারত কৃষক সভার সম্মেলনে। ৫ এপ্রিল দিল্লিতে ৫ লক্ষের বেশি মানুষের জমায়েত করবে তিন সংগঠন- সারা ভারত কৃষক সভা, সিআইটিইউ এবং সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন। 
বৃহস্পতিবার ত্রিশূরে সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলনকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সভাপতি কে হেমলতা। ৫ এপ্রিল সর্বাত্মক জমায়েতের লক্ষ্য জানান তিনি। কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লাও জানান যে দিল্লিতে বেনজির সমাবেশ হবে ৫ এপ্রিল। গ্রামাঞ্চল থেকে আসবেন কৃষিজীবীরা। 
পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষক সভার সম্পাদক অমল হালদার জানিয়েছেন যে অন্তত ১০ হাজার কৃষক যাবেন রাজ্য থেকে। সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি তুষার ঘোষও জানান যে অন্তত ৬ হাজার খেত,জুরকে নিয়ে দিল্লি যাওয়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। 
হেমলতা এদিন বক্তব্যে, শ্রমিক-কৃষক সমন্বয়ে জোর দিয়ে ধারাবাহিক সংগ্রাম গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন। দেশের পুরনো ৪৪টি শ্রম আইন বাতিল করে চারটি শ্রম কোড আইন পাশ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির অধিকার, ট্রেড ইউনিয়ন গড়ার অধিকার, ধর্মঘটের অধিকার কার্যত বাতিল করার ব্যবস্থা হয়েছে আইনে। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে সামাজিক সুরক্ষার অধিকার। আবার এই সরকারই কৃষকের ফসলের ন্যূনতম দাম পাওয়ার অধিকার মানতে নারাজ। কৃষি উৎপাদনের খরচ মারাত্মক হারে বাড়ছে। কৃষি সঙ্কটে পড়ছে বলে খেতমজুরদের কাজ কমছে। বিপুল অংশের মানুষ মারাত্মক সঙ্কটে। 
হান্নান মোল্লাও বলেছেন যে আমজনতার ন্যূনতম অধিকার খারিজ করে কর্পোরেটের অবাধ ক্ষেত্র তৈরি করার রাস্তায় হাঁটছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কৃষকের কৃষি বাতিল করে কর্পোরেট কৃষি ব্যবস্থা কায়েম করা হচ্ছে। এই বিপদ রুখতেই হবে। সেই লক্ষ্যেই সমাবেশ। 
সম্মেলনে জানানো হয়েছে যে রাজ্যে রাজ্যেও এই তিন সংগঠন যৌথ সংগ্রাম, জমায়েতে গুরুত্ব দেবে। প্রতিরোধের রাস্তায় সমবেত করা হবে ব্যাপকতম জনতাকে। 
সারা ভারত কৃষক সভার সঙ্গে শতাধিক কৃষক সংগঠনের মঞ্চ সংযুক্ত কিষান মোর্চারও বৈঠক রয়েছে ২৪ ডিসেম্ববর। ২৬ জানুয়ারি ফের দিল্লি ঘিরে অবস্থানের লক্ষ্যে এগনো হবে। বছরভর কৃষক আন্দোলন প্রত্যাহারের শর্ত মেনে কেন্দ্র কৃষি বিল বাতিল করেছিল। সেই সঙ্গে দাবি ছিল এমএসপি আইন চালুর প্রক্রিয়া শুরু করার। সরকার সেই দাবি মেনে নিলেও পুরো প্রক্রিয়া স্তব্ধ করে রেখেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
(ছবি: দিলীপ সেন) 
                                        
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
Comments :0