বিরোধীশূন্য রাজনীতি তৈরির ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বিজেপি। মঙ্গলবার হিমাচলপ্রদেশে রাজ্যসভা নির্বাচনে ক্রসভোটিং করায় বিজেপি। কংগ্রেস বিধায়কদের একটা অংশকে ভাঙিয়ে নিয়ে ভোট দেওয়ায় বিজেপির পক্ষে। কিন্তু তারপরেও লটারির সাহায্যে রাজ্যের একমাত্র রাজ্যসভা আসনে জয়ী হতে হয় গেরুয়া শিবিরকে।
৬৮ আসনের হিমাচল প্রদেশ বিধানসভায় কংগ্রেস জয়ী হয় ৪০ আসনে। বিজেপি পায় ২৫ আসন। ৩টি আসনে জয়ী হয় নির্দল প্রার্থীরা। সমীকরণ অনুযায়ী জয়ী হওয়ার কথা ছিল কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিংভির। কিন্তু বিজেপির তরফে কংগ্রেসের ৬ বিধায়ককে ভাঙানোর অভিযোগ উঠেছে। ৩ নির্দল বিধায়ককেও দলে টানে বিজেপি।
কংগ্রেসের অভিযোগ, ৯ বিধায়ককে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং হরিয়ানা পুলিশের ঘেরাটোপে হরিয়ানার পঞ্চকুলার একটি পিডব্লিউডি’র গেস্ট হাউসে রাখা হয়। পঞ্চকুলার সেক্টার-১’র ওই গেস্টহাউস সংলগ্ন গোটা এলাকা পুলিশ দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। সাধারণ মানুষ সহ সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয় সেখানে।
পঞ্চকুলার আস্তানা থেকে শিমলায় আনা হয় ওই ৯ বিধায়ককে। শিমলায় এসে তাঁরা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ক্রসভোটিং বা দলীয় হুইপ অগ্রাহ্য করে ভোট দেন।
কিন্তু এই দল ভাঙানোর পরেও ম্যাজিক সংখ্যা পেরোতে পারেনি বিজেপি। দুইদলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৪। তারপর লটারির মাধ্যমে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন।
এই জয়ের পরে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে, হিমাচল প্রদেশের কংগ্রেস সরকার গরিষ্ঠতা হারিয়েছে। খুব শীঘ্রই সরকার ফেলে দেওয়া হবে। গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখ্খু। তিনি বলেছেন, কংগ্রেস এর শেষ দেখে ছাড়বে।
যদিও কেবল হিমাচল প্রদেশ নয়, উত্তরপ্রদেশেও ক্রসভোটিং করিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার ৩ রাজ্যের মোট ১৫ আসনে নির্বাচন হয়। উত্তরপ্রদেশের ১০ আসনের মধ্যে বিধানসভার আসন সংখ্যার নিরিখে বিজেপির ৭টি এবং সমাজবাদী পার্টির ৩টি আসন জেতার কথা। কিন্তু বিধানসভায় সমাজবাদী পার্টির মুখ্যসচেতক মনোজ কুমার পান্ডে সহ একাধিক বিধায়ক বিজেপির পক্ষে ক্রস ভোটিং করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। মনোজ কুমার পান্ডে মুখ্য সচেতকের পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন বলে খবর। সেক্ষেত্রে বিজেপি ৮টি আসনে জয়ী হতে পারে। যদিও উত্তরপ্রদেশের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল এখনও সামনে আসেনি।
এছাড়াও কর্ণাটকে ৪টি রাজ্যসভা আসনে নির্বাচন হয়। আসন সংখ্যার নিরিখে কংগ্রেস ৩টি এবং বিজেপির ১টি আসনে জেতার কথা ছিল। কিন্তু বিজেপির তরফে জেডিএস’র সঙ্গে জোট করা হয় এবং ২জন প্রার্থী দেওয়া হয়। যদিও সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। ৩ কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছেন বলে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
২০ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিন ছিল। মনোনয়ন জমার সময়সীমা শেষের পরে দেখা যায় বিজেপি ২০টি আসনে, কংগ্রেস ৬টি, তৃণমূল ৪টি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস ৩টি, আরজেডি ২টি, বিজেডি ২টি এবং এনসিপি, শিবসেনা, বিআরএস এবং জেডিইউ ১টি করে আসনে জয়ী হয়। ১৫টি আসনে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ে। মঙ্গলবার নির্বাচন হয়।
Comments :0