Hornbill Bird

ধনেশ পাখির সংখ্যা বাড়াতে কৃত্রিম বাসা আলিপুরদুয়ারে

জেলা

মানুষের তৈরি পাখির বাসায় নাকি সংখ্যা বাড়বে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের হর্নবিলদের। কৃত্রিম এই বাসায় ছানাদের লালন করবে হর্নবিল বা ধনেশ মায়েরা। রাজ্যে এই প্রথম বার মানুষের তৈরি হর্নবিলের বাসা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উঁচু গাছের মগডালে রাখা হবে। হর্নবিল সংরক্ষণে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে এর আগে অন্য রাজ্যে সাফল্য এসেছে।
এবার তাকেই অনুসরণ করে আলিপুরদুয়ার জেলাতে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প। রাজ্যে এই প্রথমবার মানুষের তৈরি পাখির বাসা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উঁচু গাছের মগডালে রাখা হবে। ধনেশ পাখির পাঁচটি প্রজাতির সংখ্যা আরও বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য বন দপ্তর। কিছুদিন আগেই সপ্তম বক্সা পাখি উৎসবে অংশ নিয়ে বন দপ্তরের ওই অভিনব সিদ্ধান্তের কথা জানান রাজ্যের বন্যপ্রাণ শাখার প্রধান মুখ্য বনপাল দেবল রায়। 
বন দপ্তরের পর্যবেক্ষণ, বক্সার বাঘবনে ধনেশ পাখিদের বাসা তৈরির জন্য উঁচু জায়গায় ময়না, বয়রা, লালি ও শাল গাছের সংখ্যা হর্নবিলদের তুলনায় যথেষ্ট নয়। ধনেশ পাখিরা বংশবৃদ্ধির জন্যে মাটি থেকে কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ ফুট উচ্চতায় গাছের কোটরে বাসা বানাতে পছন্দ করে। যাতে শিকারিদের হাত থেকে নিজেদের ডিমকে সুরক্ষিত রাখতে পারে তারা। এ ধরনের গাছের সংখ্যা কমে আসায়, এখন হর্নবিলরা খানিকটা সঙ্কটে বলে মনে করছে বন দপ্তর। স্বাভাবিক ভাবেই, বিকল্প ভাবনা হিসেবে অরুণাচলপ্রদেশের উদাহরণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অরুণাচলপ্রদেশে হর্নবিল সংরক্ষণে কৃত্রিম বাসা তৈরি করে সাফল্য মিলেছে। সেটাই এই রাজ্যেও প্রয়োগ করতে চায় বন দপ্তর।
ঠিক কেমন হবে মানুষের তৈরি ধনেশ পাখিদের বাসা? এর আকৃতি হবে ষড়ভূজ। জল নিরোধক প্লাইবোর্ড দিয়ে তৈরি করা হবে এই বাসা। আর তা জুড়তে মোটেও ঝাঁঝালো গ্লু ব্যবহার করা যাবে না। বরং ব্যবহার করা হবে স্টিলের স্ক্রু। বাসা তৈরি হয়ে গেলে কপিকল ও মোটা দড়ির সাহায্যে ঝোলানো হবে ধনেশ পাখিদের পছন্দের উঁচু গাছে।
প্রাকৃতিক ভাবে গাছের কোটরে তাদের বাসাকে ‘হেক্টাগনাল’ আকৃতি দেয় হর্নবিলের জোড়া। সেই নিয়ম মেনেই কৃত্রিম বাসাও হবে ষড়ভূজ আকৃতির। ওজন হবে কমপক্ষে ৩০ কিলো। 
পাখি গবেষকরা বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে হর্নবিলের পাঁচ রকম প্রজাতি দেখা যায়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পেও তারা রয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে আমাদের মনে হচ্ছে হর্নবিলের বাসা তৈরির জন্য বড় গাছের অভাব রয়েছে এখানে। আবার বড় গাছ থাকলেই সেখানে অনেক সময় বড় কোটর থাকে না। এই মুহূর্তে বক্সা এবং সমগ্র উত্তরবঙ্গেই হর্নবিলের সংখ্যা কতটা তা এই মুহুর্তে বোঝা যাচ্ছে না। তবে তাদের বাসার প্রয়োজন রয়েছে। তাই বন দপ্তরের এই উদ্যোগ।’’

Comments :0

Login to leave a comment