NEET SCAM

নিট কান্ডে নতুন করে গ্রেপ্তার ১

জাতীয়

NEET SCAM

সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস কান্ডের মূলচক্রী অভিযোগে এক ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করল সিবিআই। সিবিআই জানিয়েছে, রাকেশ রঞ্জন নামে ওই ব্যক্তি প্রশ্ন ফাঁস কান্ডের মূল পান্ডা। এদিন আদালতে তোলা হলে তার ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। 

অপরদিকে বৃহস্পতিবার নিট সহ কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলির নিয়ামক সংস্থা এনটিএ’কে বাতিল, সর্বপরি ২০২৪ নিট বাতিলের দাবিতে শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, ১৮ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হবে। 

নিট কান্ডের তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার পাটনা এবং কলকাতার চার জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় এক ডজনের বেশি অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই ও একাধিক রাজ্যের পুলিশ। তারমধ্যে ঝাড়খন্ডের হাজারিবাগের একটি বেসরকারি স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং ভাইস প্রিন্সিপালও রয়েছে। রাকেশ রঞ্জন সহ ৯ জন রয়েছে সিবিআই হেফাজতে। 

প্রশ্নফাঁস কান্ডের তদন্তভার হাতে নিয়ে এখনও অবধি ৬টি এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। বিহারের তিনটি নির্দিষ্ট ঘটনার তদন্তে দায়ের হয়েছে ৫টি এফআইআর। 

অপরদিকে প্রশ্নফাঁসের যাবতীয় দায় হাজারিবাগের একটি বেসরকারি স্কুলের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে সিবিআই। কেন্দ্র ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে সেই রকম তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। সিবিআই’র দাবি, ওয়েসিস নামের সেই বেসরকারি স্কুলে সবার প্রথম প্রশ্নফাঁস হয়। সেখান থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পৌঁছে যায় বিহারের পাটনায়। পাটনা থেকে চড়া দামে দেশের একাধিক প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয় নিটের ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র। 

যদিও একটি বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষে কিভাবে নিটের মত সরকারি পরীক্ষার প্রশ্নের নাগাল পাওয়া সম্ভব, সেই বিষয়ে সিবিআই’র তরফে কিছু স্পষ্ট করা হয়নি। 

প্রসঙ্গত, ৫ মে ২৪ লক্ষের বেশি পড়ুয়া ভারত এবং ভারতের বাইরের একাধিক পরীক্ষাকেন্দ্র নিট দেয়। পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, ৬৭ জন পড়ুয়া ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০ নম্বর পেয়েছে। নিটের ইতিহাসে, কোনও বছর এত সংখ্যক পড়ুয়া ফুল মার্কস পায়নি। সেখান থেকেই পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক মহলে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে। 

এরইমাঝে নিটের পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা এনটিএ জানায়, ১৫৬৩ জন পড়ুয়াকে প্রশ্নপত্র দিতে দেরি হওয়া সহ একাধিক প্রশাসনিক কারণে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়। 

এই সমস্ত ঘটনা সামনে আসায় সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। মামলা সুপ্রিম কোর্ট অবধি গড়ায়। আদালত গ্রেস মার্কস পাওয়া পড়ুয়াদের ফের পরীক্ষায় বসার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কয়েকশো পড়ুয়া সেই পরীক্ষায় বসেনি। 

এই সঙ্কটের ফলে কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা এনটিএ’র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এসএফআই, এনএসইউআই’র মত ছাত্র সংগঠন সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তরফে এনটিএ বাতিলের দাবি তোলা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার এনটিএ বাতিল ও নতুন করে নিট পরীক্ষার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালার বেঞ্চ জানায়, ১৮ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি। 

এর আগের শুনানিতে সর্বোচ্চা আদালত বলেছিল, পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নিতে গলে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়বেন। বিস্তর পয়সা খরচ করে তাঁদের দূরবর্তী পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হবে। কিন্তু যদি আমরা বুঝি যে সেটা ছাড়া পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করা কঠিন, তখন আমাদের সেই কঠিন সিদ্ধান্তই নিতে হবে। 

 

Comments :0

Login to leave a comment