ইস্টবেঙ্গল-২
হায়দরাবাদ এফসি-১
ঘরের মাঠে হায়দরাবাদ এফসিকে ২-১ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মুখোমুখি হয় দুই দল।
প্রথমার্ধের ৮ মিনিট। ঘরের মাঠে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। সমর্থকদের একাংশ হতাশ। আবার কি আগের মরশুমগুলির রিপিট টেলিকাস্ট? আবারও একের পর এক হারের কলঙ্ক?
কিন্তু চলতি মরশুমের যেন অন্য লাল হলুদ। চেনা লাল হলুদ। জয়ের জন্য মাঠে নামা লাল হলুদ। লিগ চ্যাম্পিয়নের দৌড়ে থাকা লাল হলুদ। এই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে গত ৩ মরশুমের ইস্টবেঙ্গলকে গুলিয়ে ফেললে মুশকিল। আর তাই ৮ মিনিটে পিছিয়ে পড়া ম্যাচ ৯০ মিনিট শেষে ২-১ গোলে জিতে মাঠ ছাড়ল ইস্টবেঙ্গল।
লাল হলুদের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের গাফিলতিতে হয় প্রথম গোলটি। হায়দরাবাদের ৭ নম্বর জার্সিধারী পেন্নানেন অরক্ষিত রক্ষণের সুযোগ নিয়ে জোরালো শট নেন। সেই শট কোনও রকমে প্রতিহত হয়, এবং বল চলে আসে হিতেশের কাছে। তিনি আওয়ে ম্যাচে দলকে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি।
কিন্তু হায়দরাবাদের এই লিডের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র ৯০ সেকেন্ড! গোল খাওয়া মাত্র প্রতি আক্রমণে উঠে আসে লাল হলুদ। বোরহা হায়দরাবাদের পেনাল্টি বক্সে শট নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেন। তাঁকে ট্যাকেল করেন নীম দরজি। বল চলে আসে মার্কারকে এড়িয়ে অরক্ষিত জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা ক্লেইটনের কাছে। তিনি চিপ শটে বল জালে জড়িয়ে দেন।
এরপর গোটা প্রথমার্ধ ম্যাচের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে দুই দলই। কিন্তু দুই তরফের কেউই পুরোপুরি মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। তারফলে খেলা এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত বরাবর হয়েছে। উপভোগ্য ফুটবলের সাক্ষী থাকতে পেরেছেন মরশুমে দলের প্রথম জয়ের খোঁজে আসা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।
এরমধ্যে ৩৬ মিনিটের মাথায় কর্ণার পায় ইস্টবেঙ্গল। শরীরকে শূন্যে ছুঁড়ে দিয়ে হেড করেন ক্লেইটন। কিন্তু বল একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
ইস্টবেঙ্গলের জয়সূচক গোলটিও ক্লেইটনের পা থেকেই এসেছে। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও উপভোগ্য খেলা চলতে থাকে। কিন্তু নতুন করে গোলের দরজা খুলতে পারছিল না কোনও পক্ষই। নির্ধারিত সময় শেষে ৮ মিনিট সংযুক্ত সময় যোগ করেন রেফারি। সংযুক্ত সময়ের ৩ মিনিটের মাথায় ফ্রিকিক পায় ইস্টবেঙ্গল। সরাসরি শট নেন ব্রাজিলীয় ক্লেইটন। মানব প্রাচীর ভেদ করে বল সুইং করে প্রথম পোস্টের দিকে। শরীর ছুঁইয়ে দিতেও বলের নাগাল পেতে ব্যর্থ হন হায়দরাবাদের পরিবর্ত গোলরক্ষক অনুজ।
এই গোলের পরে গ্যালারির দিকে ছুটতে দেখা যায় ক্লেইটনকে। দলের সঙ্গে দেরিতে অনুশীলনে যোগ দেওয়ায় ক্লেইটন সিলভার প্রি সিজন অনুশীলন নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। ডুরান্ড কাপ এবং জামশেদপুরের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে ফর্ম হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু এদিনের ম্যাচে স্পষ্ট, দ্রুত ফর্মে ফিরছেন ২০২২-২৩ মরশুমের আইএসএলে সর্বোচ্চ গোলদাতা। গ্যালারির দিকে ছুটে গিয়ে সমর্থকদের যেন সেই কথাটাই বললেন ক্লেইটন।
এদিন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামেন ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় স্ট্রাইকার জাভিয়ের সিভেরিও। ৯০ মিনিট এবং সংযুক্ত সময়ের ১০ মিনিটের মাথায় দুটি হাফ চান্স একটুর জন্য মিস করেন তিনি। কিন্তু তাঁর চেষ্টা থেকে স্পষ্ট, ফর্মে ফিরতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তিনি।
এই জয়ের ফলে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আইএসএল তালিকার ৪ নম্বরে উঠে এল লাল হলুদ। লিগ শীর্ষে রয়েছে মোহনবাগান। জেসন কামিংসদের সংগ্রহ ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট।
Comments :0