ICC T20 WORLDCUP FINAL

পাকিস্তানকে হারিয়ে ৩০ বছর আগের হারের প্রতিশোধ নিলেন ইংরেজরা

খেলা

ICC T20 WORLD CUP FINAL ENGLAND PAKISTAN CRICKET কাপ জিতে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাস

রবিবার মেলবোর্ন স্টেডিয়ামে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড এবং পাকিস্তান। সেই ম্যাচে পাঁচ উইকেটে পাকিস্তানকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য পুরুষদের টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল ইংল্যান্ড। এদিন টসে জিতে প্রথমে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠান ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। ২০ ওভারে মাত্র ১৩৭ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হন বাবর আজমরা। ৬ বল এবং পাঁচ উইকেট বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেন জস বাটলাররা।

ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এদিনের ম্যাচে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় টস। অ্যাডিলেড হোক কিংবা মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়ার পিচগুলি প্রথমে ব্যাট করতে নামা টিমগুলির কাছে বাড়তি চ্যালেঞ্জ। প্রথমে ব্যাট করতে নামা টিমের পক্ষে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৫০’র গন্ডী টপকানো যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সেকেন্ড ইনিংসের সময়, পিচ অনেকটাই ‘সিজন্‌ড’ হয়ে যায়। ফলতঃ এই পিচে রান তাড়া করার ক্ষেত্রে বাড়তি কিছু সুবিধা পেলে। টসে জিতে সেই সুযোগের সম্পূর্ণ সদব্যবহার করেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার।

প্রথম থেকেই রান তুলতে সমস্যায় পড়েন পাকিস্তানের ব্যাটাররা। পাক ইনিংসকে কাঙ্খিত দৃঢ়তা দিতে ব্যর্থ হয় টপ অর্ডার। বলার মতো রান করেন একমাত্র শান মাসুদ। তিনি ২৮ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। বাকিরা, অর্থাৎ পাক অধিনায়ক বাবর আজম ২৮ বলে ৩২, মহম্মদ রিজওয়ান ১৪ বলে ১৫, মহম্মদ হারিস ১২ বলে ৮ এবং ইফতিকার আহমেদ ৬ বলে ০ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান। ফাইভ ডাউনে নেমে শাদাব খান কিছুটা লড়াই দেওয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু ১৪ বলে ২০ রানের মাথায় আউট হন তিনি। টপ অর্ডারের মতোই পাকিস্তানের লোয়ার অর্ডারও  এদিন সম্পূর্ণ ভাবে ব্যর্থ।

বল হাতে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট নেন স্যাম কুরান। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট সংগ্রহ করেন তিনি। এছাড়া আদিল রাশিদ এবং ক্রিস জর্ডান ২টি করে এবং বেন স্টোকস ১টি উইকেট সংগ্রহ করেন।

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন পাক বোলাররা। প্রথম ওভারেই ইংল্যান্ডের ওপেনার অ্যালেক্স হেলসকে ফেরত পাঠান শাহিন আফ্রিদি।  ১২ ওভার অবধি মোটের উপর চাপ বজায় রাখতে সফল হন পাক বোলাররা। ৭ ওভারের মাথায় ইংল্যান্ডের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটের বিনিময়ে ৫৪ রান। কিন্তু সেখান থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে যান ইংরেজরা।

বল হাতে তেমন সফল না হলেও এদিন ব্যাট হাতে দুর্দান্ত খেলেন বেন স্টোকস। ফোর ডাউনে নেমে তাঁর ৪৯ বলে ৫২ রানের ইনিংস ইংল্যান্ডের মিডিল অর্ডারকে ভরসা যোগায়। এছাড়া অধিনায়ক জস বাটলারের ১৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে ইংল্যান্ডকে।

বল হাতে পাকিস্তানের হয়ে হারিস রৌফ ২টি উইকেট, শাহিন আফ্রিদি ১টি উইকেট, শাদাব খান ১টি একটি এবং ইফতিকার আহমেদ ১টি উইকেট সংগ্রহ করেন।

এদিন প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন স্যাম কুরান। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও তিনিই নির্বাচিত হন।

এর আগে ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ী হয়েছিল ইংল্যান্ড। তার ঠিক আগের বছর শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে কাপ জিতেছিল পাকিস্তান। এতদিন সবথেকে বেশি, অর্থাৎ ২বার টি-২০ বিশ্বকাপ জেতার নজির ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। রবিবার মেলবোর্নে পাকিস্তানকে হারিয়ে সেই নজির পকেটে পুরলেন ইংরেজরা। ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে  পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয় ইংল্যান্ড। ৩০ বছর পরে সেই পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধ নিলেন জস বাটলার, স্যাম কুরানরা। 

Comments :0

Login to leave a comment