ISRAEL PALESTINE CONFLICT

গাজায় মৃতদেহ রাখতে হচ্ছে আইসক্রিমের ট্রাকে

আন্তর্জাতিক

israel palestine conflict hamas usa israel iran india bengali news এই আইসক্রিমের ট্রাকেই সংরক্ষণ করা হচ্ছে মৃতদেহ

ইজরায়েলের চরম দক্ষিণপন্থী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকার শনিবার বিকেল থেকে গাজায় বেনজির বিমান হামলা চালাচ্ছে। নেতানিয়াহু সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গাজায় পানীয় জল এবং বিদ্যুতের সংযোগ ছিন্ন করা হবে। সেই মত কাজ করে ইজরায়েল। প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা শুক্রবার জানিয়েছিলেন, গাজায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানো না হলে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের সমস্ত হাসপাতাল মর্গে পরিণত হবে। চিকিৎসা পরিকাঠামো বহাল রাখা সম্ভব নয়। 

প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই আর্তি যে কতটা বাস্তব, তার প্রমাণ মিলেছে আল-জাজিরা’র প্রতিবেদনে। আল জাজিরা জানাচ্ছে, আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের মর্গ মৃত প্যালেস্তিনীয়দের দেহে উপচে পড়ছে। বিদ্যুৎ নেই। জেনারেটরের জ্বালানি বাড়ন্ত, কারণ ইজরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধের ফলে গাজায় কোনও পণ্য প্রবেশ করতে পারছে না। এই অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য আইসক্রিমের ট্রাক ব্যবহার করছে।

একই ছবি ধরা পড়েছে গাজা শহরের শিফা হাসপাতালেও। মর্গ ভর্তি হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের পার্কিং লটে বাণিজ্যিক ফ্রিজ নিয়ে এসে মৃতদেহ সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। 

এরইমাঝে ভয়ঙ্কর খবর মিলেছে রাশিয়ার আরটি সংবাদসংস্থার প্রতিবেদনে। আরটি জানাচ্ছে, গাজা শহর ছেড়ে দক্ষিণ গাজা ভূখণ্ডে যাওয়ার সময় সাধারণ মানুষের একটি কনভয়ে বিমান হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। রাষ্ট্রসংঘের সংস্থা ‘অফিস ফর দ্যা কো-অর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স’ বা ‘ওসিএইচএ’কে উদ্ধৃত করে আরটি জানাচ্ছে, একটি কনভয়ে বিমান হানা চালানো হয়েছে। বিমান হানায় ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত’র সংখ্যা ১৫০। ‘ওসিএইচএ’ মনে করছে, এই ধরণের হামলার ফলে গাজার সাধারণ মানুষকে নিরাপত আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বাড়বে। 

প্রসঙ্গত, ইজরায়েল সেনা জানিয়েছে, তাঁরা গাজা শহরকে হামাস মুক্ত করতে সামরিক অভিযান শুরু করবে। গাজা’র ১০ লক্ষ বাসিন্দাকে দক্ষিণ গাজায় চলে যেতে মাত্র ২৪ ঘন্টা সময় দিয়েছে ইজরায়েল সেনা। বহু প্যালেস্তিনীয় সেই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করলেও বহু সাধারণ মানুষ পরিবার নিয়ে দক্ষিণ গাজায় চলে যাচ্ছেন। তেমনই একটি কনভয়ে হামলার খবর মিলেছে। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও রুশ টেলিগ্রাম চ্যানেল ‘স্লাভিয়ানগ্রাডে’ও দেখা গিয়েছে। যদিও সেই ভিডিও’র সত্যতা যাচাই করা যায়নি। 

ইজরায়েলের এই নৃশংসতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটেরেস। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে লিখেছেন, ‘‘একটি ঘনবসতী পূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে ১০ লক্ষ মানুষকে বাধ্য করা হচ্ছে এমন জায়গায় যেতে, যেখানে পানীয় জল, খাবার কিংবা আশ্রয়ের মত মৌলিক সুবিধাও নেই। একটা গোটা ভূখণ্ডকে অবরুদ্ধ করে রেখে এই জাতীয় কাজ করা শুধু বিপজ্জনকই নয়, বরং অন্যায়। এই বিপুল পরিমাণ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিণাম ভয়ঙ্কর হতে চলেছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment