ভিনরাজ্যে বাংলায় কথা বললেই অনুপ্রবেশকারী বলে যে হুমকি শুনতে হচ্ছে তার জন্য মমতা ব্যানার্জিকেই দায়ী করলেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বুধবার ঠাকুরনগরের খেলার মাঠে বিশাল খেতমজুর সমাবেশে তিনি বলেছেন, মমতা ব্যানার্জি যখন বিজেপি’র সঙ্গী ছিলেন তখন লোকসভায় ভোটার লিস্ট ছুঁড়ে সবাইকে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী বলেছিলেন। আরএসএস-বিজেপি এখন সারা দেশে সেই কথাই বলে বেড়াচ্ছে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী বলে পুলিশকে দিয়ে হেনস্থা করাচ্ছে।
সেলিম বলেছেন, বামফ্রন্ট সরকার থাকাকালীন ক্ষমতার লোভে তৃণমূল যা করেছে তার ফলে বাংলাভাষীদের সারা দেশে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। আরএসএস’এর প্রচারে বাংলাভাষী মানেই বাংলাদেশী বলা হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশী বলে এফআইআর করেছে যাদের নামে তারা বাংলাদেশী এটা পুলিশ বুঝলো কী করে? তাঁদের কথা শুনে নাকি পুলিশের বাংলাদেশী বলে মনে হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের একেক জেলায় একেকরকম উচ্চারণে মানুষ বাংলায় কথা বলে, সবাই কলকাতার ভাষায় কথা বলে না। ‘আ মরি বাংলা ভাষা’, আমরা তিল তিল করে বাংলা গড়েছি, বাংলাকে ধংস করতে দেবো না। ভাষার জন্য বাংলাদেশী বলে কাউকে তাড়ানোর চেষ্টা করলে মেনেও নেবো না।
একদিকে অমিত শাহ, অন্যদিকে মমতা ব্যানার্জি সিএএ-এনআরসি নিয়ে হইচই করে বাংলার মানুষকে ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। সেলিম এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ভোট আসছে, আবার সিএএ এনআরসি এনপিআর’এর ভয় দেখাচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে, ফর্ম পূরণ করাচ্ছে। কথায় বলে, ‘ভিখ চাইনে কুকুর সামলা’। সিএএ এনপিআর তেমনই। লোকে যাতে খাদ্য চাকরি শিক্ষা স্বাস্থ্য না চায়, তার জন্য ডালকুত্তার মতো লেলিয়ে দিচ্ছে। মানুষকে এই হেনস্থার হাত থেকে কোনো মমতা ব্যানার্জি বাঁচাবে না। মানুষই এককাট্টা হয়ে মানুষকে বাঁচাতে পারে। মানুষই মুখ্যমন্ত্রীকে ঠিক করে, প্রধানমন্ত্রীকে ঠিক করে। প্রয়োজনে ক্ষমতায় বসায়, প্রয়োজনে টেনে হিঁচড়ে নামায়। ওরা সেটা জানে বলেই মানুষকে ভয় পাচ্ছে এবং মানুষকে ভাষা জাত ধর্মের নামে ভাগ করার চেষ্টা করছে, মানুষকে ভয়ের বাতাবরণে রাখছে।
এদিন ঠাকুরনগরে সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির দ্বিতীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে, বৃহস্পতিবার তা শেষ হবে। এই উপলক্ষে ঠাকুরনগর খেলার মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে মিছিলে লাল পতাকার জনজোয়ারে মাঠ উপচে যায়।
Comments :0