INSAAF YATRA

শিক্ষা, স্বাস্থ্যের দাবিও ইনসাফ যাত্রায়

রাজ্য জেলা

CPIM TMC BJP AIKS WEST BENGAL PANCHAYAT ELECTION WEST BENGAL POLITICS 2023 BENGALI NEWS md salim

রবিবার বাঁকুড়া মোড় থেকে জনস্রোতে ভেসে ইনসাফ যাত্রা বর্ধমান শহরের তেলিপুকুরে পৌঁছায়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি, লেখাপড়ার মানের অবনমন, মার্কশিট কেলেঙ্কারির কথা তুলে ধরা হয় এই ইনসাফ যাত্রায়। তেমনই ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধেও ইনসাফ চেয়েছেন শহরের মানুষ। স্কুল-কলেজে নিয়োগ দুর্নীতি, প্রাথমিক স্কুল তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে এদিন ইনসাফ যাত্রা। 


তেলিপুকুর থেকে মিছিল শুরু হয় যখন, সেই জনস্রোত আছড়ে পড়ে আরামবাগ রোডে। পথের দু’ধারে মানুষ স্বাগত জানিয়েছেন ইনসাফ যাত্রার প্রতিনিধিদের। পথে বিভিন্ন জায়গায় সিআইটিইউ, ভারতীয় আইনজীবী সঙ্ঘ, পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বস্তি ইউনিয়ন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়ন, মেডিক্যাল সেলস রিপ্রেজেন্টিটিভ, সরকারি কর্মী, ১২ই জুলাই কমিটি, ছাত্র, যুব, মহিলাদের সংগঠনের তরফে সংবর্ধিত করা হয় ইনসাফ যাত্রাকে। বর্ধমান শহরে কার্জন গেটের কাছে সভা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন কমলেশ্বর মুখার্জি, মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা। মিছিলে ছিলেন আভাস রায়চৌধুরি, সৈয়দ হোসেন, অচিন্ত্য মল্লিক, কৌস্তভ চ্যাটার্জি, তাপস সরকার, অপূর্ব চ্যাটার্জি প্রমুখ। মিছিল বর্ধমান স্টেশনে গিয়ে শেষ হয়। 


ইনসাফ যাত্রা পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রথম দফায় প্রবেশ করে কেতুগ্রামের ফুটিসাঁকো থেকে গত ২৩ নভেম্বর। এরপর গোটা জেলা ঘুরে এসে রবিবার জেলার প্রাণকেন্দ্র বর্ধমান শহর হয়ে গলসি-বুদবুদ থেকে চলে গিয়েছে পাশের জেলা পশ্চিম বর্ধমানে। এই চার দিনের মিছিলে যুব সমাজের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। এই মিছিলকে সংহতি জানিয়ে নিজেদের লেখাপড়ার দাবিকে মজবুত করতে জেলা জুড়ে ‘এই মিছিলে ছাত্ররাও’ স্লোগান দিয়ে প্রত্যেক দিনের মিছিলে অংশ নিয়েছেন এসএফআই এর নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা। 

এদিন বর্ধমান শহরে ইনসাফ যাত্রা শেষ হওয়ার পরে এসএফআই পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির উদ্যোগে ‘চশমার টুকরো’ শিরোনামে একটি ছোট পথনাটক করা হয় এবং এসএফআই পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির উদ্যোগে প্রকাশিত পুস্তিকা ‘লেনিন মাসে নভেম্বরে’ তুলে দেওয়া হয় সমস্ত স্থায়ী পদযাত্রীর হাতে। কমলেশ্বর মুখার্জিকেও এই পুস্তিকা দেওয়া হয়েছে।


এদিন ইনসাফ যাত্রা জামালপুর থেকে বেরিয়ে রায়নার শাঁকটিয়া মোড়ে এসে থামে। সেখানে শহীদ স্বপন মালিকের স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে ডিওয়াইএফআই’র নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি কথা বলেছেন। খুনিদের শাস্তির জন্য পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। সেখান থেকেই ইনসাফ যাত্রার প্রতিনিধিরা চলে আসে শ্যামসুন্দরে। শ্যামসুন্দর বাজারে সভা হয়। সেখানে এখানকার মানুষের সঙ্গে সরকার, শাসক দল যে অন্যায় ও অত্যাচার করেছে, তার প্রতিবাদে ইনসাফ চেয়ে রাস্তায় নামেন অনেক মানুষ। 

সেখান থেকেই এই ইনসাফ যাত্রা চলে আসে বাঁকুড়া মোড়ে। পথে দু’ধারে খেতমজুর, কৃষকরা ইনসাফ যাত্রাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইনসাফ যাত্রার সাফল্যের জন্য এবিপিটিএ’র নেত্রী চন্দনা পাল ৫ হাজার টাকা তুলে দেন মীনাক্ষীর হাতে। ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘর পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির পক্ষ থেকেও দশ হাজার টাকা মীনাক্ষী মুখার্জির হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাঁকুড়া মোড়ে তখন ইনসাফের দাবি নিয়ে কয়েক হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছেন। 


বর্ধমান শহরে বাস ঢোকানোর দাবি দামোদর নদের দুই পাড়ের মানুষের। শাসক দলের ভুল নীতির ফলে চরম সঙ্কটে রায়না, খণ্ডঘোষের মানুষ ও বর্ধমান শহরের ব্যবসা-বাণিজ্য। এদিন বাঁকুড়া মোড়ে ইনসাফ যাত্রার মূল দু’টি বড় দাবির মধ্যে ছিল দক্ষিণ দামোদরের বাস বর্ধমান শহরের ভিতর দিয়ে চলুক। তাতে রায়না, খণ্ডঘোষের মানুষের জীবন-যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব হবে। অন্যদিকে, শুকিয়ে যাওয়া বর্ধমান শহরের ব্যবসা, বাজার ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

Comments :0

Login to leave a comment