Bolpur Anubrata Mondal

জেলবন্দি অনুব্রতর মঙ্গল ও মুক্তি কামনায় মহাযজ্ঞ

রাজ্য জেলা

রাম মন্দিরকে হাতিয়ার করে ধর্মীয় উন্মাদনা তুঙ্গে তুলেছে বিজেপি। এ রাজ্যেও সেই ধর্মের জিগিরকেই হাতিয়ার নির্বাচনী বৈতরনী পেরোনোর মরিয়া চেষ্টায় পিছিয়ে নেই গেরুয়া বাহিণী। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা নির্ঝঞ্ঝাটে বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরণ তীব্র করার কাজ কতটা সাবলীল ভাবে করছে তা প্রমান মিলেছে রামমন্দির উদ্বোধন পর্বে।  তৃণমূলই বা চুপ থাকে কেন ? দরকার ছুঁতো। তেমনই এক ছুঁতো খুঁজে ফের তৃণমূল আয়োজন করেছে মহাযজ্ঞের।
ছুঁতো কি ? অনুব্রত মন্ডলের মঙ্গল কামনা ! তার দ্রুত মুক্তির প্রার্থনা !
বোলপুর রেল ময়দানে সাজো সাজো রব। বোলপুর শহরজুড়ে পেল্লায় পেল্লায় তোরণ রাস্তা দখল করেছে। অনুব্রতর ছবিতে ছবিতে ছয়লাপ হয়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকেই ঢেকচি পর ঢেকচি ভরা সবজি এসে পৌছেছে। শুরু হয়েছে তা কাটার কাজ। শনিবার সকাল থেকেই যে শুরু হবে অনুব্রতর নামে যজ্ঞ। এই যজ্ঞ নিয়ে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধরির বক্তব্য, ‘‘অনুব্রত মন্ডলের নামে যজ্ঞ হলে তা তো আনন্দের। আমরা ধর্মীয় মানুষ। অনুব্রত মন্ডলের নামে বীরভূম জেলায় আলোড়ন তৈরী হয়েছে। মানুষ অনুভব করছে এক বছরেরও বেশী সময় ধরে অনুব্রত মন্ডল না থাকার জন্যে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি আমরা।’’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘আগামীতে সশরীরে অনুব্রত না থাকলেও তার ছবি নিয়েই ভোট হবে।’’ তবে কোথাও তিনি দাবি করেন নি, অনুব্রত নির্দোষ। তাকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। এই যজ্ঞের আয়োজন যে আসলে বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরনের রাজনীতির সাথে প্রতিযোগীতা করার জন্যই তা নিয়ে সংশয় নেই কোনোই।
যদিও এখন অনুব্রত নেই। গোরু পাচার মামলায় তিহার জেলে বন্দী। তার মঙ্গল কামনায় তার অনুগামীরা ফের মেতেছেন সেই যজ্ঞেই। অবশ্য মুখে দাবি, অনুব্রত মন্ডলের শুভাকাঙ্খীদের প্রচেষ্টা, ইচ্ছায় হচ্ছে এই মহাযজ্ঞ। শুভাকাঙ্খী হিসাবে যজ্ঞের কাজের তদারকি করতে দেখা গেছে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির দুই নেতা সুনীল সিং, সুব্রত ভকতকে। যাদের সাথে তৃণমূলের অঙ্গাঙ্গী যোগের কথা অজানা নয় বোলপুরের। তারা জানিয়েছেন, ‘‘অনুব্রত মন্ডল না থাকার জন্য বীরভূম অস্থির হয়ে গেছে। জেলাবাসী অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। তাই তার মঙ্গল কামনায় এই যজ্ঞ। সকলের প্রার্থনা, জেল থেকে মুক্তি পাক অনুব্রত মন্ডল।’’ 
শনিবার সকালে ফের বোলপুর সাক্ষী হবে বাংলার সংস্কৃতির সাথে বেমানান এক ‘যজ্ঞে’র। যার সাথে আষ্ঠেপৃষ্ঠে থাকবে রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধিই। তৃণমূল সূত্রেই জানা গেছে,  এই মহাযজ্ঞে থাকছে ২৫ কিলো ঘি, পাঁচ কুইন্টাল বেলকাঠ, ১১ জন পুরোহিত, প্রায় ১২ হাজার লোকের ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা। রেল ময়দানের দূর্গামন্দির চত্বর সম্পূর্ণটাই প্যান্ডেল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এক হাজারেরও বেশি মানুষের বসার চেয়ারের ব্যবস্থা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকা দেদারে খরচের এক রাজকীয় যজ্ঞ দেখবেন বোলপুর বাসী, অনুব্রতর ‘মঙ্গলকামনায়’! তৃণমূলের অবশ্য দাবি, এই রাজকীয় কর্মকান্ডের খরচ নাকি উঠবে শুভাকাঙ্খীদের সহায়তায়। তবে বীরভূমবাসীর কাছে অজানা নয়, সেই শুভাকাঙ্খী কারা ? তাদের অর্থের জোগানই বা কি ?

Comments :0

Login to leave a comment