প্রয়াত সেনাকর্তার মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জড়ো হয়েছিল হাজারো জনতা। বুধবার সেখানেই ঘটল বিস্ফোরণ। আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা এপি জানাচ্ছে, বুধবারের বিস্ফোরণে ইরানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্ততপক্ষে ৭৩জন। গুরুতর আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৭০জন। এপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
২০২০ সালে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ড্রোন আক্রমণ করা হয় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের কাড্স বাহিনীর জেনারেল কাসেম সুলেমানির উপরে। সেই হামলায় প্রাণ হারান সুলেমানি। বুধবার ছিল সুলেমানির তৃতীয় প্রয়াণ দিবস। সেই উপলক্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ইরানের রাজধানী তেহরানের ৮২০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত কেরমান শহরে ভিড় করেন কয়েক হাজার মানুষ। এখানেই রয়েছে সুলেমানির কবর।
এপি জানাচ্ছে, বুধবার বিকেলের কেরমানে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণের ১৫ মিনিট পরে ফের কেঁপে ওঠে সুলেমানির কবর সংলগ্ন অঞ্চল। কেরমানের ডেপুটি গভর্নর রহমান জালালি এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এপি জানাচ্ছে, প্রথাগত উগ্রপন্থী বোমা বিস্ফোরণের কায়দায় প্রথম বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। উগ্রপন্থীরা এই পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকে। প্রথম বিস্ফোরণের পরে আহতদের উদ্ধার করে সক্রিয় হয় প্রশাসন। আসে পুলিশ কিংবা সেনাকর্মীরা। সেই সময় দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা হয়।
বুধবার কেরমানেও একই পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিন রাত অবধি কোনও সংগঠন এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি। বর্তমানে গাজায় ইজরায়েলের সঙ্গে জোর লড়াই চলছে হামাসের। হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে উত্তর ইজরায়েল সীমান্তে হামলা চালাচ্ছে লেবাননের হেজবোল্লা গোষ্ঠী। প্যালেস্তাইনের পাশে দাঁড়াতে লোহিত সাগরে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে ইয়েমেনের হাউথি বিদ্রোহীরা। প্যালেস্তাইনের মানুষের যন্ত্রণার শরিক না হওয়ার অভিযোগে ইরাক এবং সিরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন সেনাঘাঁটিতে ক্ষেপনাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছে একাধিক শিয়া সংগঠন। আমেরিকা এবং ইজরায়েলের দাবি, এই সমস্ত সংগঠনকে পিছন থেকে নিয়ন্ত্রণ করে ইরান। এবং গত দেড় দশক ধরে কাসেম সুলেমানি এই ছায়াযুদ্ধের নীল নকশা তৈরি করেছিলেন। যদিও ইরান সরকারি ভাবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরানের এই তৎপরতার পালটা হিসেবে নাশকতাকে বেছে নিতেই পারে ইরান বিরোধী রাষ্ট্রশক্তিগুলি। তারফলেও বুধবারের বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।
Comments :0